পাকিস্তান সফরে নিরাপত্তা ছাড়পত্রের অপেক্ষায় বিসিবি
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৭:৪৩
এক ক্রাইস্টচার্চ ঘটনাই গোটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বদলে দিয়েছে। স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে যাওয়া বাংলাদেশ সেদিন অল্পের জন্য সন্ত্রাসী হামলা থেকে প্রাণে বেঁচে দেশে ফিরেছিল। কিন্তু যদি না ফিরত? হ্যাঁ, বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সেদিন থেকেই নড়েচড়ে বসেছে আইসিসি। মার্চে ঘটে যাওয়া ওই ঘটনা যেন আর না ঘটে সেজন্য দ্বিপাক্ষিক সিরিজগুলোতে আয়োজক দেশগুলোকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয় বিশ্ব ক্রিকেটের এই অভিভাবক সংস্থা। যার বাস্তবায়ন গেল মে তে বাংলাদেশের আয়ারল্যান্ড সফর ও জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কা সফরেও দেখা গিয়েছিল।
নিউজিল্যান্ডের ওই ঘটনার পর থেকে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আয়োজনের ক্ষেত্রে আয়োজক দেশের ক্রিকেট বোর্ডকে নিজেদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে হয়। সফরকারী দেশ তাতে সন্তুষ্ট না হলে বা নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও খতিয়ে দেখতে চাইলে নিজ দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় আয়োজক দেশের দূতাবাসের মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল ও আগামী মাসে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের পাকিস্তান সফরকে সামনে রেখে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও ঠিক একই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সাকিব-মুশফিকরা সেই সফরে দুটি টেস্ট ও তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলবে। আর মেয়েরা খেলবে তিন ম্যাচ সিরিজের টি-টোয়েন্টি ও দুই ম্যাচ সিরিজের ওয়ানডে।
পাকিস্তানে সিরিজ খেলতে নারী ক্রিকেট দল ও ছেলে দলকে পাঠানোর আগে এই মুহূর্তে চলছে বাংলাদেশের নিরাপত্তা পর্যববেক্ষণ। পর্যবেক্ষণ শেষে পর্যবেক্ষকরা যে প্রতিবেদন দেবেন তার প্রেক্ষিতেই নির্ধারিত হবে সিরিজের ভাগ্য।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর)সংবাদ মাধ্যমকে একথ্য দিলেন বিসিবি সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন।
তিনি বলেন, ‘আইসিসির বর্তমান এফটিপিতে বাংলাদেশ দলের একটি প্রতিশ্রুতি আছে যেখানে পাকিস্তান বাংলাদেশকে আতিথ্য দেবে। দুটি টেস্ট ম্যাচ ও তিনটি টি-টোয়েন্টি সম্ভবত। আপনারা জানেন পাকিস্তান সাধারণত তাদের ঘরের মাঠ হিসেবে দুবাই বা অন্যান্য কয়েকটি স্থানকে বেছে নেয়। তবে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দল এই মুহূর্তে পাকিস্তান সফর করছে। যে কোনো দলকে পাকিস্তান সফর করতে একটি নিরাপত্তা ছাড়পত্র নিতে হয়। আমাদের দলগুলোর বিদেশ সফরের কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তার মধ্যে একটা হচ্ছে নিরাপত্তা ছাড়পত্র। আমরা সে বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় ও সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে তাদের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।‘
‘প্রক্রিয়া ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। আমরা বাংলাদেশ হাই কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। বাংলাদেশ হাই কমিশন ইতোমধ্যেই একটি প্রতিবেদন দিয়েছে। আমরা সেটা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় এটার ওপরে কাজ করছে। আমরা আশা করছি খুব শিগগিরই একটি নিরাপত্তা পরিদর্শন দল পাকিস্তান সফরে যাবে। যেহেতু এই মুহূর্তে শ্রীলঙ্কা পাকিস্তান সফর করছে আমরা চেষ্টা করছি যেন আমাদের নিরাপত্তা দল ওদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখতে পারে। তাহলে তাদের জন্য ক্লিয়ারেন্স দেওয়াটা সহজ হবে।’ যোগ করেন নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন।
আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে সন্ত্রাসী দেশের তকমা পেয়ে যাওয়া পাকিস্তানে ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কার টিম বাসে বোমা হামলা ঘটনার পর দেশটিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বন্ধ ছিল। তবে ২০১৫ সালে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের সফরের মধ্য দিয়ে লম্বা সময় পর আবার তারা ক্রিকেট ফেরে। এরপর পাকিস্তান সুপার লিগ আয়োজনের মধ্য দিয়ে সেই যাত্রা আরও অগ্রসর হয়। বর্তমানে সেখানে সফর করছে শ্রীলঙ্কা জাতীয় ক্রিকেট দল।