বিসিবিও এই ধর্মঘটের শেষ দেখে নিতে চায়
২২ অক্টোবর ২০১৯ ১৮:৩৭
ক্রিকেটারদের সঙ্গে যে কোনো বিষয়ে আলোচনার জন্য সবসময় দরজা খোলা রাখে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড-বিসিবি। বিশেষ করে সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। বাংলাদেশ ক্রিকেটের হেন সদস্য নেই যার সঙ্গে ব্যক্তিগত সুসম্পর্ক তার নেই। আর সেই সম্পর্কের ভিত্তিতেই ক্রিকেটারদের যে কোনো বিপদে আপদে এগিয়ে আসেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটাররাও তার কাছে সাহায্য চাইতে দ্বিধা বা সংকোচ বোধ করেন না।
উদাহরণ খুঁজেতে খুব বেশি দূর যেতে হবে না। এক মাসও হয়নি, ইমরুল কায়েসের সদ্য ভূমিষ্ট সন্তান হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে জরুরি ভিত্তিতে সিঙ্গাপুর নেওয়ার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। কিন্তু ভিসা ছিল না। একদিনের মধ্যে সেই ভিসার ব্যবস্থা করে দেন বিসিবি সভাপতি। এখানেই শেষ নয়। অসুস্থ শিশুকে নিয়ে দ্রুত বিমানে আরোহনের জন্য তার পরিবারের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি প্রবেশের প্রয়োজন ছিল। পাপনের নির্দেশে সেই ব্যবস্থাও হয়ে যায়।
ক্রিকেটারদের প্রতি তার অনুরাগের এমন ভুরি ভুরি দৃষ্টান্ত আছে। কিন্তু হঠাৎ করে কী এমন হয়ে গেল যে, অতীত ভুলে কোনো রকম আলোচনা ছাড়াই দাবি আদায়ে ক্রিকেটাররা ধর্মঘটের পথ বেছে নিলেন? বিষয়টি ঠিক বোধগম্য নয় পাপনের। বিসিবি সভাপতি তাই আক্ষেপ করে বললেন, ‘অতীতে এমন কোনো বিষয় আছে যা তারা আমাকে বলেছে কিন্তু আমি শুনিনি? তারা এই ধর্মঘটে যাওয়ার আগে আমাকে একবার বলে দেখত। তাদের দাবি আর কত টাকা যে মেনে নেওয়া যাবে না? কিন্তু না, তারা সে পথে হাঁটেনি। আগেই হার্ডলাইনে চলে গেছে।’
এরপর পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বললেন, ‘দেখি কে কে ২৫ তারিখ থেকে অনুশীলন ক্যাম্প বর্জন করে? আর কে কে ভারত সফরে না গিয়ে পারে? আমি শুধু দেখতে চাই তারা কারা? এই ধর্মঘট করে লাভটা কার হচ্ছে? বাংলাদেশ ক্রিকেটের নাকি তাদের? তাও ভারতের বিপক্ষে এমন তাৎপর্যপূর্ণ সফরের আগে?’
ভারতের বিপক্ষে সিরিজের আগে ক্রিকেটারদের এই ধর্মঘটের পেছনে দ্বিতীয় কোনো শক্তি কাজ করছে বলে সন্দেহ করছেন পাপন। বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভাবমূর্তি নষ্ট করে দেওয়াই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য বলে বিশ্বাস তার। তাই বেশ দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠেই বলেছেন, ‘কারা এর সঙ্গে জড়িত, খুব শিগগিরই তাদের নাম বেরিয়ে আসবে। আপনারা শুধু একটু অপেক্ষা করেন।’
পাপন এও বিশ্বাস করেন, এই ধর্মঘটে সামনে থেকে নেতৃত্বে দিচ্ছেন এক থেকে দুইজন ক্রিকেটার। বাকিরা কেউই এই ধর্মঘট চায় না এবং সেই দুই ক্রিকেটারকেও অনতিবিলম্বে শনাক্ত করা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করলেন লাল সবুজের ক্রিকেটের এই সভাপতি।
শনাক্তের পর বিসিবি কী পদক্ষেপ নেবে? একটু হেসে পাপন বললেন, ‘সেটা সময় এলেই দেখবেন।’
৩ নভেম্বর থেকে শুরু হবে ভারত সিরিজ। ২৫ অক্টোবর থেকে শুরু সেই সিরিজের অনুশীলন ক্যাম্প। এদিকে ক্রিকেটাররা ধর্মঘট ডেকে বসে আছেন, বিসিবিও অনড় অবস্থানে। এমতাবস্থায়এই সিরিজের ভবিষ্যত কি? সংবাদ মাধ্যমের করা এমন প্রশ্নে পাপনের আত্মবিশ্বাসী উত্তর, ‘আমি সিরিজের ব্যাপারে আশাবাদী। আশা করছি এই সিরিজ হবে।’
** এগুলো আসলে কোনো দাবিই না: পাপন