‘সাকিবকে নিয়ে ধোঁয়াশা শিগগিরই কাটবে’
২৯ অক্টোবর ২০১৯ ১৩:০১
বাংলাদেশের ক্রিকেটে যেন দুর্যোগের ঘনঘটা। একের পর এক দু:সংবাদ শোনা যাচ্ছে ক্রিকেটকে ঘিরে। বড় একটি দুঃসংবাদ শুনতে যাচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। প্রায় ২ বছরের জন্য সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হতে পারেন বাংলাদেশের টেস্ট ও টি টোয়েন্টি দলপতি সাকিব আল হাসান। খবরটি দেশের একাধিক জাতীয় দৈনিক এরই মধ্যে প্রকাশ করেছে। আর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড- বিসিবি’র দায়িত্বশীলরা বলছেন, ‘অস্বীকার করা যাচ্ছে না।‘ তবে তারা এখনো অপেক্ষায় রয়েছেন ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল-আইসিসি’র মেইল পাওয়ার। তবে এরই মধ্যে সাকিবের ভারত সফর বাতিল করা হয়েছে। আর এই বিষয়ে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। তিনি জানিয়েছেন, ‘আইসিসি যেই সিদ্ধান্তই নিক না কেন সাকিবের পাশেই থাকবেন তিনি।’
নিষিদ্ধ হচ্ছেন সাকিব!
বছর দুয়েক আগে আন্তর্জাতিক ম্যাচ চলাকালীন জুয়াড়ির (বুকি) কাছ থেকে একটি অনৈতিক প্রস্তাব পেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। সেই প্রস্তাব তিনি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন সত্যি, কিন্তু নিয়ামানুযায়ী আইসিসিরি দুর্নীতি দমন বিভাগকে তা জানাননি, গোপন রেখেছিলেন। বিষয়টি পরে আইসিসি জানতে পারে এবং আন্তর্জাতিক জুয়াড়িদের কল ট্র্যাক করে এ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তথ্য উদ্ধার করে। ওই জুয়াড়ি আইসিসির কালো তালিকায় থাকাদের একজন।
সাকিবের এই বিষয়টি সরাসরি নিজেদের তত্ত্বাবধায়নে রেখেছে ইন্টারন্যাশন্যাল ক্রিকেট কাউন্সিল আইসিসি। যেহেতু এটি আইসিসি এই বিষয়টি নিজেদের তত্ত্বাবধায়নে রেখেছে আর সেই ভিত্তিতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘খেলোয়াড়রা দেশের সম্পদ তাদের রক্ষা করার দায়িত্ব সরকারের। সাকিব অন্যায় করেছে কিনা, করলে আইসিসি সিদ্ধান্ত নিলে, তার বিরুদ্ধে কথা বলা যায়না। তবে সাকিবের পাশে সব সময় বিসিবি থাকবে আছে। এরইমধ্যে বিসিবি সভাপতিকে বলা হয়েছে, অন্যায়ভাবে যেন শাস্তি পেতে না হয়।’
সাম্প্রতিক আন্দোলনের ফলে সাকিবের এই প্রসঙ্গটি সামনে আসলো এই ব্যাপারে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে মন্ত্রী আরও জানান, ‘খেলোয়াড়রা আন্দোলনে গিয়েছিল, সেটি সমাধান হয়েছে। তার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। সাকিবের বিষয়টি অনেকদিন ধরে আইসিসি তদন্ত করছিল আমারও বিষয়টি জানা ছিল না। বোর্ড বলেছে, তারাও জানতেন না। সাকিব বিষয়টি হালকাভাবে নিয়েছিল, কিন্তু এতো দূর আগাবে বুঝতে পারেননি।’
বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়ার পরে আইসিসি অ্যন্টি করাপশন অ্যান্ড সিকিউরিটি ইউনিট (আকসু) সাকিবের সঙ্গে কথা বলে। জানা গেছে ওই তদন্ত কর্মকর্থার কাছে সাকিব ভুল স্বীকার করেন। আত্মপক্ষ সমর্থন করে তিনি বলেন, ‘জুয়াড়ির প্রস্তাব গুরুত্ব দেইনি বলেই কাউকে জানাইনি।’
বিষয়টি হালকাভাবে নিয়েছিলেন লাল-সবুজের এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। যা তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়াল। ১৮ মাসের জন্য সবধরণের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছেন সাকিব আল হাসান। যা নিঃসন্দেহে এদেশের ক্রিকেটের জন্য অপূরণীয় ক্ষতির কারণ।
ভারত সিরিজে খেলছেন না সাকিব!
আইসিসিরি দুর্নিতীদমন নীতিমালায় লেখা আছে, কোনো ক্রিকেটার, কোচিং স্টাফ, আম্পায়ার, স্কোরার, গ্রাউন্ডসের সদস্য, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউ জুয়াড়িদের কাছ থেকে কোনো ধরনের প্রস্তাব পেলে তাৎক্ষণিক তা বোর্ডের দুর্নীতি দমন ইউনিটকে জানাতে হবে। যতটা দ্রুত সম্ভব।
আইসিসি ইতোমধ্যেই সাকিবের ব্যাপারে বিসিবিকে বিস্তারিত জানিয়ে দিয়েছে। তাতে নির্দেশনা আছে জাতীয় দলের সঙ্গে অনুশীলন না করার। এ কারণেই জাতীয় দলের সঙ্গে গত দু’দিন অনুশীলন করেননি সাকিব।
ঠিক কতো বছরের জন্য লাল সবুজের এই দুর্দান্ত পারফর্মার নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছেন তা আজ অথবা কালের মধ্যেই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়ে দেবে বিসিবি।
জাহিদ আহসান রাসেল নিষিদ্ধ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রি সাকিব আল হাসান