সাকিবের জন্য খুব বেশি কিছু করার নেই বিসিবির
৩১ অক্টোবর ২০১৯ ১৬:১২
ছোট ভুলের বড় মাশুল গুণছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি দলপতি সাকিব আল হাসান। ম্যাচ ফিক্সিং না করেও নিষেধাজ্ঞার কালিমা বয়ে বেড়াচ্ছেন লাল সবুজের বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। তার ভুল, কুখ্যাত ভারতীয় বুকি দীপক আগারওয়ালের কাছ থেকে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পেয়েও তা সংশ্লিষ্ট কাউকেই অবহিত করেননি। একবার নয়, তিন-তিনবার একই প্রস্তাব পেয়েও মুখে কুলুপ এঁটে বসেছিলেন।
এতে করে এক বছরের জন্য সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হয়েছেন লাল সবুজের বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। এখানেই শেষ নয়। এই এক বছরে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটালে আরও এক বছর নিষেধাজ্ঞা কাটাতে হবে।
আইসিসি সাকিবের নিষেধাজ্ঞা শোনানোর পরপরই বাংলাদেশ ক্রিকেটে বোর্ড প্রাঙ্গনে জড়ো হয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে ঝাঁঝাঁলো শ্লোগানে আইসিসির সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করেছেন সাকিব ভক্তরা। যা অব্যাহত ছিল পরদিন পর্যন্তও। শুধু ঢাকাতেই কেন? সাকিবের নিজ শহর মাগুরাতেও ভক্তদের একই শ্লোগান শোনা গেছে। একই সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে চলছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের মুন্ডুপাত। সাকিবের নিষেধাজ্ঞা ইস্যুতে অনেকে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের সাংগঠনিক দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন। তাদের অধিকাংশের মন্তব্য, আইসিসির সঙ্গে বিসিবির ক্রিকেট কূটনৈতিক সম্পর্ক ভালো হলে এত বড় শাস্তি সাকিব পেতেন না।
সাকিবকে নিয়ে চলমান এই ঝঞ্ঝা বিক্ষুদ্ধ অবস্থায় বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) মুখ খুললেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সুজন। তিনি জানালেন, সাকিবের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আইসিসি যে সিদ্ধান্ত শুনিয়েছে সেখানে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের করণীয় খুবই সামান্য। চাইলেই আইসিসিকে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরিয়ে আনা যাবে না।
তবে আশার কথাও শুনিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সিইও, ‘দেখুন ইতোমধ্যে অপনারা জেনেছেন যে এই বিষয়টাতে বিসিবির করণীয়টা খুবই সীমিত। যেহেতু সংশ্লিষ্ট প্লেয়ার ইতোমধ্যেই স্বীকার করায় এটা সমঝোতার মধ্যে চলে গেছে। তারপরও অবশ্যই আমরা দেখবো যে আইনগত বিষয় গুলো নিয়ে কতটুকু কাজ করার সম্ভবনা আছে। আমরা ইতোমধ্যে আমাদের লিগাল ডিপান্টমেন্টের সাথে কথা বলেছি এবং আমরা চেষ্টা করবো এই বিষয়টা নিয়ে কিভাবে এগোনো যায় বা কোনো সুযোগ আছে কিনা এটা নিয়ে কাজ করার।’
সিইও সুজনের আশার কথা পাশাপাশি একটি উদাহরণ থেকে সাবিকসহ তার ভক্তরা ‘নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ কমতে পারে’ এমন প্রত্যাশা করতে পারেন। ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডস টেস্টে পাকিস্তানের তখনকার অধিনায়ক সালমান বাট, পেসার মোহাম্মদ আসিফ ও আমিরের বিরুদ্ধে স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগ ওঠে। দোষী প্রমাণিত হওয়ায় সব ধরনের ক্রিকেটে পাঁচ বছর নিষিদ্ধ হওয়া ছাড়াও ছয় মাস সংশোধনাগারে কাটাতে হয়েছিল মোহাম্মদ আমিরকে।
সে সময় ১৮ বছরের তরুণ আমির ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইলেও তখন শাস্তিটা কমানো হয়নি। তবে স্পট ফিক্সিং তদন্তে আকসু কর্মকর্তাদের সব ধরনের সহযোগিতা ও আইসিরি দুর্ণীতিবিরোধী কর্মকাণ্ডে নিয়মিত অংশ নেওয়ায় নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই তাকে মাঠে ফেরার অনুমতি দেয় ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসি।