Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রাজকোটে টাইগারদের ভুল ছিল যেখানে…


৮ নভেম্বর ২০১৯ ১১:৩৮

ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। আর দিল্লিতে যে সম্ভবনার দুয়ার খুলেছিল টাইগার ক্রিকেটাররা রাজকোটের পারফরম্যান্সে তা কেবল হতাশার দিকেই নিয়ে গেছে। দিল্লি থেকে রাজকোট দূরত্বটা গুগোল ম্যাপস জানাচ্ছে মাত্র ১১১৭ কিলোমিটার। তবে টাইগারদের পারফরম্যান্স বলছে এ দূরত্ব আকাশ-পাতাল ব্যবধানের।

তবে দিল্লিতে যে টাইগাররা ভারতকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়েছিল সেই টাইগাররা তিন দিনের ব্যবধানে এতটা পাল্টে গেল কি করে! নাকি ভুল ছিল কৌশলেই? ভুল তো নিশ্চই ছিল না হলে এভাবে ম্যাচটি হেরে যাওয়ার কথা তো নয়।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ আর ভারতের মধ্যকার টি-টোয়েন্টির আগে রাজকোটের এই মাঠে মাত্র দু’টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ মাঠে গড়িয়েছে। আর সেই দু’টি ম্যাচের একটিতে জয় এবং অপরটিতে পরাজয় ছিল ভারতের।

টাইগারদের ম্যাচ থেকে প্রথমে পেছনে ঠেলে দিয়েছিল টসের হারটা। এত অনুমেয়ই ছিল রাজকোটে যে দলই টস জিতবে তারা আগে ফিল্ডিংটাই বেছে নিবে। আর হলোও তাই। টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন রোহিত শর্মা। তবে সেখানেই আশা শেষ হয়ে যায়নি। এর আগে এই স্টেডিয়ামের দুই টি-টোয়েন্টির একটিতে টস জিতে আগে ব্যাট করেও ভারতকে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড। আর অপর ম্যাচে টস জিতে অস্ট্রেলিয়াকে আগে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল ভারত। আর সে ম্যাচটিও জিতেছিল ভারত।

এর আগের দুই টি-টোয়েন্টিতে রাজকোটে আগে ব্যাট করা দলের রান যথাক্রমে অস্ট্রেলিয়া ৭ উইকেট হারিয়ে ২০১ রান। আর নিউজিল্যান্ড করেছিল ২ উইকেট হারিয়ে ১৯৬ রান। পরিসংখ্যান বলছে প্রথম ইনিংসে এই উইকেটে রানের গড় ১৯৮.৫। সেখানে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের সংগ্রহ মাত্র ১৫৩ রান। উইকেটের রানের গড়ের থেকে বাংলাদেশের পুঁজি কম প্রায় ৪৬ রান। অর্থাৎ ম্যাচের প্রথম ইনিংসেই বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়েছে অনেকাংশে।

বিজ্ঞাপন

যেখানে বড় ব্যর্থতা বলা যায় টাইগার ব্যাটসম্যানদেরই। কারণ? অদূর অতীতে ভারতীয় ক্রিকেট দল এমন বাজে ফিল্ডিং কবে করেছিল ঠিক মনে করে উঠতে পারবে না কেউই। প্রত্যেক ওভারেই টাইগার ব্যাটসম্যানদের যেন নতুন করে জীবন দানের মহড়ায় মেতেছিল রোহিতের দল। কেবল রোহিতের দলই নয়; সেই সঙ্গে অধিনায়ক নিজেও মেতেছিলেন সেই ময়ড়ায়। এক লিটন দাসই পেয়েছিলেন এক ওভারের ব্যবধানে দু’টি জীবন। একবার তো উইকেটরক্ষক রিশব পন্তের ভুলে আর অন্যবার রোহিত শর্মা ফেলে ক্যাচ ফেলে দিয়ে বাঁচিয়ে দেন লিটনকে।

তবে এমন সুযোগ যেন পায়ে ঠেলেই সরিয়ে দিলেন লিটন। দুইবার জীবন পেয়েও নামের পাশে ২১ বলে মাত্র ২৯ রান। অর্থাৎ যেখানে ইনিংসটাকে টেনে লম্বা করার প্রয়োজন ছিল ঠিক সেখানেই হেরেছে ব্যাটসম্যানরা। এ না হয় গেলেন কেবল লিটন; আর বাকিরা? বাকিরাও হেটেছেন তার দেখা পথেই। উদ্বোধনী জুটিতে এমন দারুণ শুরুর পরেও কোনো টাইগার ব্যাটসম্যানই ৩০ এর কোটা পার করতে পারেননি। সর্বোচ্চ ৩৬ রান এসেছে ওপেনার মোহাম্মদ নাইম শেখের ব্যাট থেকে।

এরপর ৩০ করে নামের পাশে যোগ করেছেন সৌম্য সরকার এবং অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। যদি পার্থক্য বিবেচনা করা হয় তাহলে দেখা যায় অস্ট্রেলিয়ার অ্যারন ফিঞ্চ একাই হাঁকিয়েছিলেন ৮৯, আর এক ওপেনার নিক ম্যাডিসন করেছিলেন ৩৪। এরপর গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের মাত্র ১৩ বলে ঝড়ো ২৭ রানে অজিদের ইনিংসের পুঁজি ২০১।

এ ম্যাচটিও হেসে খেলেই জিতেছিল ভারত। যুবরাজ সিংয়ের ৩৫ বলে ৭৭ রানের ইনিংসে দুই বল হাতে রেখেই ৬ উইকেটের জয় তুলে নেয় ভারত।

আর ভারত-নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচে কিউই ওপেনার মার্টিন গাপটিল করেন ৪১ বলে ৪৫; আর এক ওপেনার কলিন মুনরো করেন ৫৮ বলে ১০৯ রান। এতেই তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৯৬ রান। তবে এই ম্যাচে আর ভারত জিততে পারেনি। বিরাট কোহলির ৬৫ আর মহেন্দ্র সিং ধোনির ৪৯ রানের পরেও ৪০ রানে ব্যবধানে হেরেছিল স্বাগতিকরা। সেখানে অবশ্য কৃতিত্ব কিউই পেসার ট্রেন্ট বোল্ট এবং তিন স্পিনার ঈশ সোধি; মিচেল স্যান্টনার এবং কলিন মুনরোর। ট্রেন্ট বোল্ট ৪ ওভারে ৩৪ রান খরচে নিয়েছিলেন ৪ উইকেট; সোধি আর স্যান্টনারের কিপটে বোলিং আর মুনরোর কার্যকরী বোলিংয়ে ম্যাচটা ৪০ রানের ব্যবধানে হেরেছিল স্বাগতিকরা।

এখানেই পিছিয়েছে টাইগাররা। প্রথম ৪০ রান কম স্কোরবোর্ডে আর সেই সঙ্গে বোলারদের দৈন্য অবস্থা। এক আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ছাড়া নামে মাত্রই যেন বোলিং করেছেন বাকিরা। মোস্তাফিজুর রহমান ৩.৪ ওভারে দিয়েছেন ৩৫ রান; সফিউল ইসলাম ২ ওভারে ২৩; আর আল-আমিন দিয়েছেন ৪ ওভারে ৩২ রান। টাইগারদের তিন পেসারের তিনজনই থেকেছেন উইকেট শূন্য।

অর্থাৎ প্রথমে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় স্কোরবোর্ডে রানের সংখ্যা কম। আর দ্বিতীয় ইনিংসে বোলারদের ব্যর্থতায় রানের বদান্যতা। শুরুতেই উইকেট নিতে না পারাটাই টাইগারদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল রাজকোটে। আর তার শেষ পরিণতি ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হার।

টাইগার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি বাংলাদেশ বনাম ভারত মোস্তাফিজুর রহমান লিটন দাস

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর