আইপিএল, বিপিএল খেলাটাই এমন যে এখানে রান উৎসব হবে। বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে মাঠে চার-ছক্কার বৃষ্টি হবে। আর তা দেখে গ্যালারি হর্ষে ভাসবে। শতভাগ বিনোদিত হয়ে ফিরবে দর্শক। বিনোদন, বিনোদন এবং বিনোদনই যার একমাত্র দর্শন। অর্থাৎ যে ম্যাচে যত বেশি রান উৎসব হবে সেই ম্যাচ তত বেশি সফল।
আবার এরই মধ্যে বোলারদের দাপটও থাকবে। মার খেয়েও কেউ হবেন টুর্নামেন্টের সেরা শিকারি। কিন্তু এই মার খাওয়ার একটা সীমা থাকা অপরিসীম। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, তাসকিন আহমেদের কোন সীমাই নেই। বঙ্গবন্ধু বিপিএলে না পেয়েছেন উইকেট, না টেনে ধরতে পেরেছেন ওভার প্রতি রানের লাগাম। আবার অজুহাত দিচ্ছেন এবার বিপিএল ব্যাটিং বান্ধব!
তাসকিন আহমেদ বঙ্গবন্ধু বিপিএলে ম্যাচ খেলেছেন তিনটি, কোন উইকেট নেই, ওভার প্রতি রান দিয়েছেন প্রায় ১৩ করে। বল এতটাই নির্বিষ ছিল যে, শেষ তিন ম্যাচে রংপুরের একাদশেই জায়গা হয়নি। এমন দীনতায় ভরা পারফরম্যান্সে হতাশায় মুহ্যমান জাতীয় দলে নিয়মিত হওয়ার অবিরত চেষ্টায় থাকা এই পেসার। কিন্তু নিজের ব্যর্থতা ঘোচাতে যে অযুহাতের আশ্রয় তিনি নিয়েছেন তা নিতান্তই খোঁড়া ও ভিত্তিহীন।
‘সত্যি কথা বলতে দুই একটা লুজ বল হয়েছে ওগুলোতে বাউন্ডারি হয়েছে। চট্টগ্রামে উইকেট এমন যে, ভালো বলেও বাউন্ডারি এসেছে। সবমিলিয়ে ব্যাটিং বান্ধব উইকেট এবারের বিপিএল, সব বোলারই মোটামুটি খরুচে। আমি আসলে নিজে ভালো করতে পারিনি এটা আমারই ব্যর্থতা।’
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) মিরপুর জাতীয় ক্রিকেট একাডেমিতে রংপুর রেঞ্জার্সের অনুশীলনে এসে তিনি একথা বলেন।
তাসকিনের অনুশোচনা হওয়া উচিত এই ভেবে যে তার চাইতেও বয়সে ঢেঢ় তরুণ এক পেসার এবারের বিপিএলের সেরা উইকেট শিকারি। এবং তিনি ভিনদেশি কেউ নন, এদেশেরেই, মেহেদি হাসান রানা। ৬ ম্যাচ খেলে এই পেসার তুলে নিয়েছেন ১৩টি উইকেট। ওভার প্রতি রানও আহামরি দেননি (৬.৪৭)। তাহলে তিনি কেন পারছেন না?
নিজেকে নিয়ে ভাবার সময় যদি তার এখনো না হয় তাহলে আর কবে? জাতীয় দলে নিয়মিত হতে মুখিয়ে আছেন কিন্তু মাঠের পারফরম্যান্সের অবস্থা যাচ্ছেতাই। গেল বিপিএলে ১২ ম্যাচে ২২ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেরা শিকারি হয়েছিলেন সেই তৃপ্তির ঢেকুর এখনো তুললে তো বিষয়টি নিদারুণ ভাবনারই। এসব মঞ্চে পারফর্ম না করে জাতীয় দলে নিয়মিত হওয়া অলীক স্বপ্ন নয় কি?