আকবরের দৃঢ়তায় দলীয় শতক টাইগারদের
৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২০:১৮
পচেফস্ট্রুমের ফাইনালে ভারতকে ১৭৭ রানে রুখে দিয়েছে বাংলাদেশ দল। ১৭৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই মারমুখী টাইগার দুই ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন এবং তানজিদ হোসেন তামিম। এরপর রভি বৈশ্ন্যর দারুণ বোলিংয়ে দ্রুতই উইকেট হারিয়ে ফেলে টাইগাররা। তবে এক প্রান্তে উইকেট আগলে রাখেন অধিনায়ক আকবর আলী। আর তার দৃঢ়তাতেই দলীয় সংগ্রহ ১শ ছাড়িয়ে যায়।
বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংসের ৯ম ওভারেই দলীয় অর্ধশতক তুলে নেয় দুই ওপেনার। তবে ওই ৯ম ওভারের ২য় বলে রভি বৈশ্ন্যকে ছয় মেরে দলীয় অর্ধশতক পূর্ণ করেন তানজিদ হোসেন তামিম। এরপর ১৩তম ওভারে বল করতে এসে সেমি ফাইনালে টাইগারদের হয়ে শতক হাঁকানো মাহমুদুল হাসান জয়ের উইকেটও তুলে নেন বৈশ্ন্যই। তবে সেই সঙ্গে ওই ওভারেই চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন।
১৫তম ওভারে আবারও বল হাতে আসেন বৈশ্ন্য। আর ওভারের প্রথম বলেই তুলে নেন তাওহিদ হৃদয়ের উইকেট। বৈশ্ন্যর বলে এলবি’র শিকার হয়ে শূন্য রানেই ফেরেন এই ব্যাটসম্যান। আর আউট হওয়ার আগে তানজিদ হোসেন তামিম করেন ১৭ রান আর মাহমুদুল হাসান জয় করেন ৮ রান। আর পায়ে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়া আগে ইমন নামের পাশে যোগ করতে পারেন ২৫ রান। ভারতের হয়ে চারটি উইকেট নিয়েছেন রাভি বৈশ্ন্য। আর বাকী দু’টি উইকেট নিয়েছেন সুশান্ত মিশরা।
এর আগে পচেফস্ট্রুমে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে বাংলাদেশি পেসারদের তোপের মুখে ১৭৭ রানেই অল আউট হয়েছে ভারত। টসে জিতে আগে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ অধিনায়ক আকবর আলী। অধিনায়কয়ের সিদ্ধান্তের প্রতি পূর্ণ সমর্থন দেন টাইগার পেসাররা। তাই তো শুরু থেকেই পেসারদের চাপের মুখে পড়ে ভারত।
ভারতের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান যশভি জয়সওয়াল ছাড়া ব্যাট হাতে বড় স্কোর গড়তে পারেনি ভারতের কোনো ব্যাটসম্যানই। ৪০তম ওভারে শরিফুলের জোড়া আঘাতে ৮৮ রানে যশভি আর শূন্য রানে ফেরেন সিদ্ধেশ ভীর। ভারতের ব্যাটিং ইনিংসের ৪৩তম ওভারে রান আউটের শিকার হয়ে ফেরেন ধ্রুভ জুরেল (২২)।
এরপর শরিফুল ইসলাম আসেন ৪৪তম ওভারে। ২ রান করা রভি বিশ্নুকে রান আউট করেন নিজ হাতেই। আর তাতেই ভারতের ৭ম উইকেটের পতন ঘটে। দলীয় ১৭০ রানে ৭ম উইকেট হারায় ভারত।ভারতের প্রথম উইকেট তুলে নেন অভিষেক দাস। এরপর বড় জুটি গড়েন জয়সওয়াল আর তিলক। তবে ২৯তম ওভারে সাকিবের আঘাতে তিলক (৩৮) ফিরলে আবারও চাপে পড়ে ভারত। এরপর ভারতীয় অধিনায়ক প্রিয়াম গ্র্যাগকে (৭) ফেরান রাকিবুল।
৪০তম ওভারে বল করতে এসে ভয়ংকর হয়ে ওঠা যশভি জয়সওয়ালের উইকেট তুলে নেন শরিফুল ইসলাম। আউট হওয়ার আগে জয়সওয়াল করেন ৮৮ রান। আর এরপরের বলেই সিদ্ধেশ ভীরকে কোনো রান যোগ করার আগেই প্যাভিলিয়নের পথ দেখিয়ে দেন শরিফুল। আর তাতেই তার হ্যাটট্রিকের সম্ভবনা তৈরি হয়।
অন্যান্যরা যখন টাইগার পেসারদের বল সামলেতেই পারছে না, তখনই উইকেটের এক প্রান্তে বাংলাদেশের বোলারদের ওপর ছড়ি ঘোরাতে থাকেন চলতি বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক যশভি জয়সওয়াল। ভারতের ইনিংসের ৪০ দশমিক ৪ ওভারে চতুর্থ উইকেটের পতুন ঘটান শরিফুল ইসলাম। তখন ভারতের দলীয় সংগ্রহ ১৫৬। আর পঞ্চম বলে কোনো রান যোগ করার আগেই শরিফুলের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হয় সিদ্ধেশ ভীর।
বাংলাদেশের হয়ে দু’টি করে উইকেট নেন পেসার শরিফুল ইসলাম এবং তানজিম হাসান সাকিব। এছাড়া একটি উইকেট নেন রাকিবুল হাসান। আর টাইগারদের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট আসে অভিষেকের কাছ থেকে।
বাংলাদেশ একাদশ: পারভেজ হোসেন ইমন, তানজিদ হাসান, মাহমুদুল হাসান জয়, তাওহিদ হৃদয়, শাহাদত হোসেন, শামিম হোসেন, আকবর আলী (অধিনায়ক), রাকিবুল হাসান, শরিফুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব এবং অভিষেক দাস।
ভারতীয় একাদশ: যশভি জয়সওয়াল, ডিভ্যানাশ সাকসেনা, তিলক ভার্মা, ধ্রুব জুরেল, প্রিয়াম গ্র্যাগ (অধিনায়ক), সিদ্ধেশ ভীর, আথারভা অ্যানকোলেকার, রবি বৈশ্ন্য, শুশান্ত মিশরা, কার্তিক ত্যাগি এবং আকাশ সিং।