হারের দুষ্টচক্র ভাঙলো টাইগাররা
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৪:২৬
অর্থনীতিতে দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র নামে একটি চক্র আছে। যে চক্রে কোনো দেশ একবার আবর্তিত হলে দরিদ্র থেকে ক্রমাগত দরিদ্র হয়ে উঠে। ভঙ্গুর অর্থনীতির একটি দেশের জন্য যে সংকট উত্তোরণ আদতেই কঠিন। তবে ভঙ্গুর অবকাঠোমোর না হয়েও সাদা পোষাকে গেল এক বছরেরও বেশি সময় বাংলাদেশের ক্রিকেটও একই অবস্থার মধ্য দিয়ে গিয়েছে। টেস্টে টানা হারে দল এতটাই ছন্নছাড়া হয়ে পড়েছিল যে জয়ের উপায় আর খুঁজে বের করা যাচ্ছিল না। কিন্তু মাঠের খেলা যে অর্থনীতির সজ্ঞা অনুসরণ করে না, তা আরেকবার প্রমানিত হলো। টেস্ট ক্রিকেটে হারের দুষ্টচক্রে আটকা পড়া দলটি অবশেষে বহুকাঙ্খিত জয়ের দেখা পেল।
১৫ মাসে টানা ৬টি ম্যাচ হারের পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে জয়ের বন্দরে তরী ভেড়ালো লাল সবুজের দল। তা যে সে জয় নয়, ইনিংস ব্যবধানে (ইনিংস ও ১০৬ রানে)। আইসিসি’র টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের বাইরে থাকা দলটির বিপক্ষে বাংলাদেশ খেলল বাংলাদেশের মতোই।
ইনিংস পরাজয় এড়াতে সফরকারীদের প্রয়োজন ছিল ২৮৬ রান। কিন্তু মুমিনুল হকদের স্পিন ঘূর্ণিতে চূর্ণ হয়ে ক্রেইগ আরভিনরা সাকুল্যে করতে পারল ১৮৯ রান। চতুর্থ দিনের চা বিরতির আগেই জয় নিশ্চিত করল ডমিঙ্গো শিষ্যরা।
প্রথম ইনিংসে দলটির সংগ্রহ ছিল ২৬৫ রান। পক্ষান্তরে মুশফিকুর রহিমের ডাবল সেঞ্চুরি (২০৩) ও মুমিনুল হকের ১৩২ রানে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ইনিংস ঘোষণা করেছিল ৬/৫৬০ রান নিয়ে।
তৃতীয় দিনের একেবারে শেষ সেশনে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমেই ধাক্কা খেয়েছিল ক্রেইগ আরভিনরা। দলীয় ২ রান তুলতেই হারাতে হয়েছিল দুই টপ অর্ডার প্রিন্স মাসভাউরে (০) ও ডোনাল্ড ত্রিপানোকে (০)। বাদ বাকি ৮ উইকেট পড়তে সময় লাগলো চতুর্থ দিনের স্রেফ একটি সেশনের কিছু বেশি সময়। নাঈম ও তাইজুল ঘূর্ণিতে ১৮৯ রানেই গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় ইনিংস।
বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে দ্বিতীয় ইনিংসে নাঈম হাসান ৫টি ও তাইজুল ইসলাম নিয়েছেন ৪টি উইকেট।
প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে হলেও সাদা পোষাকে মুমিনুলদের হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে ম্যাচটি কিন্তু দারুণ কার্য়করী। এই ম্যাচটি দিয়েই প্রায় দেড় বছর পর রানে ফিরেছেন বাংলাদেশের টেস্ট স্পেশালিস্ট মুমিনুল হক (১৩২), মুশফিকুর রহিম তো ডাবলই মেরে দিলেন (২০৩)। নাঈম হাসান দ্বিতীয়বারের মতো এক ইনিংসে ৫ উইকেট পেলেন। দুই ইনিংসে তার উইকেট ৯টি। তাইজুল তো বরাবরই দলটির বিপক্ষে ভাল করে থাকেন। দুই ইনিংসে তার উইকেট ৬টি।
ক্রিকেটের দর্শন অনুযায়ী, প্লেয়ারদের ছন্দে ফিরতে একটি ম্যাচই যথেষ্ট। মুমিনুল- মুশফিকরা ফিরলেনও। দেখা যাক এই ছন্দ তারা কত দিন ধরে রাখতে পারেন।