ব্যাটিংসঙ্গী হিসেবে সাকিবকেই পছন্দ মুশফিকের
৭ মে ২০২০ ২১:২৭
সফট হ্যান্ডে ব্যাট চালিয়ে বল সামনে ঠেলেই ব্যাটসম্যান ভো দৌড়, ওদিকে নন-স্ট্রাইক প্রান্তে থাকা অপর ব্যাটসম্যান ততক্ষণে ক্রিজের মাঝবরাবর চলে এসেছেন। ফিল্ডার বল পাঠানোর আগেই রান পূর্ণ হয়ে গেল। ক্রিকেটে কেউ কেউ ‘রান চুরি করে নেওয়া’ বলে এটাকে। ক্রিকেট রসিকরা বাড়তি রোমাঞ্চ খুঁজে পান এসবে। দুই ব্যাটসম্যানের চমৎকার বোঝাপড়ায় কখনো কখনো এক রানকে দুই রান হতেও দেখা যায়। চমৎকার বোঝাপড়া ছাড়া এসব সম্ভব হয় না। ম্যাচ, উইকেট বা প্রতিপক্ষের বোলিং কন্ডিশন বিচারেও অনেক সময় ক্রিজে এক ব্যাটসম্যান অপরজনের সহাযোগী হয়ে ওঠেন। মুশফিকুর রহিম বলছেন, ব্যাটিংয়ের সময় সাকিব আল হাসানের সঙ্গেই তার এসব বোঝাপড়া ভালো হয়।
দুজন একসঙ্গে খেলছেন অনেক বছর ধরে। বিকেএসপিতে এক সঙ্গে খেলেছেন। এক সঙ্গে বয়সভিত্তিক ক্রিকেট খেলেছেন দীর্ঘদিন। তারপর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও খেলছেন এক যুগেরও বেশি সময় ধরে। মজার ব্যাপার দুজনের ব্যাটিং পজিশনও পাশাপাশি।
মুশফিকুর রহিম আগাগোড়াই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। গত ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে সাকিব হঠাৎ তিন নম্বর ব্যাটিং পজিশনে উঠে যাওয়ার আগে তিনিও ব্যাটিং করতেন মিডিল অর্ডারেই। ফলে স্বাভাবিকভাবেই দুজনের একসঙ্গে অনেকটা সময় কাটিয়েছেন ক্রিজে। মুশফিকুর রহিমের মতে, এতে দারুণ একটা বোঝাপড়া সৃষ্টি হয়েছে তাদের দুইজনের মাঝে।
আজ বৃহস্পতিবার (০৭ মে) ফেসবুকে লাইভ আড্ডা দিয়েছেন মুশফিক। প্রশ্ন করা হয়েছিল ব্যাটিং পার্টনার হিসেবে কাকে বেশি পছন্দ।
জবাবে দেশের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান বলেন, ‘পছন্দের ব্যাটিং পার্টনার বলতে অনেকেই আছে। তবে সাকিব (আল হাসান) স্পেশাল। রিয়াদ ভাইও (মাহমুদুল্লাহ) আছে। কারণ আমি যে পজিশনে ব্যাটিং করি সেখানে আসলে সাকিব বা রিয়াদ ভাইয়ের সঙ্গেই বেশি জুটি হয়। তামিমের (ইকবাল) সঙ্গে খুব বেশি পার্টনারশিপ হয়নি। কারণ দেখা যায় ও যখন ৫০-৬০ করে আউট হয় তখন আমি ক্রিজে যাই। আবার ও যখন বড় ইনিংস খেলে তখন আমি টিকতে পারি না। কিন্তু সাকিবের সঙ্গে ব্যাপারটা অন্য রকম।’
মিস্টার ডিপেন্ডেবল আরো বলেন, ‘সাকিবের সঙ্গে আমার অনেক পার্টনারশিপ আছে। ওর সঙ্গে বোঝাপড়াটা ভালো। যদিও ভুলে আমি ওকে অনেকবার রান আউট করে দিয়েছি আর আমাকে সাকিবও করেছে। তবে এটা ক্রিকেটেরই অংশ। সব মিলিয়ে আমাদের বোঝাপড়াটা ভালো। ও যখন আক্রামণাত্মক খেলে তখন আমার জন্য অবস্থাটা সহজ হয়ে যায়।’
ব্যাটিংয়ের সময় ম্যাচের অবস্থা, প্রতিপক্ষের বোলিং আক্রমণ বা উইকেট কন্ডিশন নিয়ে আলোচনা করেন ব্যাটসম্যানরা। প্রশ্ন করা হয়েছিল সাকিব-মুশফিক এক সঙ্গে ব্যাটিং করলে বেশি কথা কে বলেন?
মুশফিক বললেন, ‘সাকিব তো সেভাবে কথাই বলে না। ও শুধু ইশারা করে। ড্রেসিংরুম থেকে প্যাড পরে বেরুনোর পর থেকে ওর কথা বলা বন্ধ, যতক্ষণ না আউট হয়ে যায়। কথা আমিই বলি। যদি বলি এটা করা উচিৎ, ও মাথা ঝুঁকিয়ে বলে হ্যাঁ। আবার বলি এটা করা উচিৎ নয়, ও মাথায় ঝুঁকিয়ে বলে না। এতটুকুই তার কথা। অনেক সময় রান নেওয়ার সময়ও কথা হয় না, ইশারায় বা আমরা চোখের দিকে তাকিয়েই দৌড় দিই… (হাসি)।’
তবুও ক্রিজে যে দুজন উপভোগ করেন পরিসংখ্যানও সেকথাই বলছে। বাংলাদেশের হয়ে অনেক স্মরণীয় জুটি আছে দুজনের। দেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের জুটিটা এই দুজনেরই। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কার্ডিফ টেস্টে পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৩৫৯ রান করেন দুজন। সাকিব আল হাসান ২১৭ রান করেছিলেন। মুশফিকের ব্যাট থেকে আসে ১৫৯ রান।