এক অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থীর পাশে মুশি
১৪ জুন ২০২০ ১৫:২৯
নাম তার তাইরিনা সাবরিন তোরা। বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালায় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় জেলার মধ্যে রেকর্ড নম্বর নিয়ে পাশ করেছেন (১৩০০ তে ১২৬৬)। প্রাপ্ত নম্বরই বলছে পড়াশোনায় কতটা তুখোড় সে। খেলাপড়া ঠিকমত চালিয়ে গেলে অদূর ভবিষ্যতে তিনিও হয়ে উঠতে পারেন এদেশের অমূল্য এক সম্পদ। কিশোরী তোরাও সেই স্বপ্নই বুনেন। তোরার বাবাও একই স্বপ্নে বিভোর।
মুশকিল হলো দারিদ্রতা নামক অভিশপ্ত এক শব্দ দু’দুটি স্বপ্নের পথে বাধার দেওয়াল তৈরি করেছে। কেননা অদম্য মেধাবী এই মেয়েটির পরিবারের আর্থিক অবস্থা ততটা সচ্ছল নয়। বাবা সীমিত আয়ের মানুষ। বগুড়া শহরে ছোট খাট ব্যবসা করে সংসার চালান। ছোট খাট ব্যবসা করে তো আর মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করা সম্ভব নয়।
কিন্তু যে জেলায় একজন মুশফিকুর রহিম আছেন সে জেলার এমন তুখোড় এক মেধাবী শিক্ষার্থী কিংবা বাবার স্বপ্ন তো আর ধুলিষ্যাৎ হয়ে যেতে পারে না। শুনলে অবাকই হবেন তোরার বাকি জীবনের লেখা পড়ার পুরো দায়িত্ব নিয়েছেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল- মুশফিকুর রহিম। আপাতত তার কলেজে ভর্তি, পোষাক ও বইয়ের জন্য এককালীন কিছু টাকা দেওয়া হয়েছে। কলেজ শুরু হলেই তোরার নামে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রতিমাসে বৃত্তিবাবদ একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা হবে।
মুশফিকের এক ঘনিষ্ঠ সুত্র রোববার (১৪ জুন) বিষযটি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছে।
সুত্রটির দেওয়া তথ্যমতে, ‘তাইরিনা সাবরিন তোরার বাদ বাকি জীবনের লেখা পড়ার দায়িত্ব নিয়েছেন মুশফিক। আপাতত তার কলেজে ভর্তি, পোষাক ও বইয়ের জন্য এককালীন কিছু টাকা দেওয়া হয়েছে। কলেজ শুরু হলেই তোরার নামে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রতিমাসে বৃত্তিবাবদ একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা হবে।’
করোনা রোগী বা অসহায়দের জন্য না হলেও করোনাকালে এই দিয়ে আরো একটি মহানুভতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। আর অসচ্ছল ও কর্মহীনদের জন্য কী কী করেছেন সেটা তো সবারই জানা।
তবুও চলুন আরেকবার দেখে নেই। করোনাভাইরাস এদেশে প্রাদুর্ভাব ছড়ানোর শুরু থেকেই একের পর এক প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়ে হাজির হয়েছেন মুশফিকুর রহিম। সহানুভূতিশীল মনোভাব নিয়ে দাঁড়িয়েছেন অসহায় ও অসচ্ছলদের পাশে।
করোনাকালে অসহায়দের জন্য মুশির সহায়তার মিশন শুরু হয়েছিল গেল মার্চে। সেসময় দিয়েছিলেন নিজের বেতনের অর্ধেক। এরপর নিজ জেলা বগুড়া মেডিকেল কলেজের স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য পাঠিয়েছেন প্রায় ২শ পিপিই ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার। তার আগে স্থানীয় কাউন্সিললের মারফত অসহায়দর মধ্যে দিয়েছেন আর্থিক সহায়তা। এখানেই শেষ নয়, ক্রিকেট বোর্ডের ৩০ নেট বোলারও তার সহযোগিতা পেয়েছেন। এখানেই শেষ নয়, লাল বাংলাদেশ হুইলচেয়ার ক্রিকেটের সদস্যরাও মুশফিকের সহযোগিতার আওতায় এসেছেন।
আর সর্বশেষ বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকানো ব্যাটটি নিলাম তোলেন মুশি। সেই ব্যাটটি ১৭ লাখ টাকায় কিনে নেন পাকিস্তানের ক্রিকেটার শহীদ আফ্রিদি। সেখান থেকে প্রাপ্ত অর্থের পুরোটাই বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করছেন মুশফিকুর রহিম।
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল মুশফিকুর রহিম মেধাবী শিক্ষার্থীর পাশে