আইপিএলে চীনা প্রতিষ্ঠান থাকলে ভারতেরই লাভ: বিসিসিআই কোষাধ্যক্ষ
১৯ জুন ২০২০ ১৪:৪০
ভারতের কেন্দ্র শাসিত লাদাখের পূর্বাঞ্চলীয় গালওয়ান উপত্যকার লাইন অব একচুয়াল কন্ট্রোলকে (এলএসি) ঘিরে ভারত ও চীনের সামরিক বাহিনীর মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনা, সংঘর্ষ ও প্রাণহানিকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শুক্রবার (১৯ জুন) স্থানীয় সময় বিকাল ৫টায় সর্বদলীয় সভা’র ডাক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর এমন পরিস্থিতিতে ভারতের বিজেপি সমর্থকরা ঘোষণা দিয়েছে চীনা পণ্য বর্জনের। অন্যদিকে এর প্রভাব যে ক্রিকেটেও পড়তে পারে তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তা অনেকেরই।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড-বিসিসিআই এর অধীনে বিশ্বের সবথেকে জাকজমকপূর্ণ ফ্রাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট আইপিএল’র স্পন্সর চীনা মোবাইল প্রস্ততকারক কোম্পানি ভিভো। কথা উঠছে তা নিয়েও, তবে এই অবস্থাতেও ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের টাইটেল স্পন্সর থাকছে ভিভোই। বিসিসিআই’র ভাবনা চীনের সংস্থা থেকে আসা অর্থ চাঙ্গা করবে ভারতীয় অর্থনীতিকেই।
বিসিসিআই’র কোষাধ্যক্ষ অরুণ ধুমল বলেছেন, ‘আবেগ দিয়ে ভাবলে অনেক সময়ই যুক্তিকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। আমাদের বুঝতে হবে যে, চীনের স্বার্থে চীনের সংস্থাকে সাহায্য করা আর ভারতের স্বার্থে চীনের অর্থনীতির সাহায্য নেওয়ার মধ্যের পার্থক্য রয়েছে। ২০২২ সাল পর্যন্ত ভিভোর সঙ্গে চুক্তি রয়েছে বোর্ডের। প্রত্যেক বছর ভিভোর থেকে বোর্ডের আয় ৪শ ৪০ কোটি টাকা। চীনের কোম্পানি আইপিএল’র জন্য অর্থ ব্যয় করলে তাতে দেশেরই লাভ।’
নিজের এমন মতামতের পক্ষে ধুমল আরও বলেন, ‘আমরা যখন চীনের কোনো সংস্থাকে ভারতে পণ্য বিক্রির অনুমতি দিচ্ছি, তখন ওরা ভারতীয় ক্রেতার থেকে অর্থ নিয়ে চলে যাচ্ছে। তারই কিছুটা ওরা এখানে বোর্ডকে দিচ্ছে। আর বোর্ড আবার সেই অর্থের ৪২ শতাংশ কর হিসেবে সরকারকে দিচ্ছে। তাই এ ক্ষেত্রে ভারতের স্বার্থই রক্ষা হচ্ছে, চীনের নয়। আইপিএল’র জন্য টাকা না দিলে সেই অর্থ ওরা সম্ভবত চীনে নিয়ে চলে যেত। সেই অর্থ যখন দেশেই থাকছে, তখন তো আমাদের খুশি হওয়ারই কথা। আমরা সেই অর্থে কর দেওয়ার মাধ্যমে সরকারকে সাহায্য করছি। দেখুন, যদি চীনের কোনো সংস্থাকে ক্রিকেট স্টেডিয়াম করতে বলা হয়, তবে তা চীনের অর্থনীতিকে সাহায্য করবে। গুজরাট ক্রিকেট সংস্থা মোতেরায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়াম গড়ে তুলেছে এক ভারতীয় কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেই। দেশ জুড়ে কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে ক্রিকেটীয় অবকাঠামো গড়ে তুলতে। আর তার কোনো চুক্তিই কিন্তু চীনের সংস্থা পায়নি।’
ভারতীয় বোর্ডের কোষাধ্যক্ষ অরুণ ধুমালের এমন বক্তব্যে অন্য বেগ পেতে পারে চীনা পণ্য বর্জনের আন্দোলনে। আর চাপ আসতে পারে চীনা প্রতিষ্ঠান বর্জনেরও। তবে এ ব্যাপারে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের অবস্থান স্পষ্ট, তা জানিয়ে দিলেন ধুমল। তিনি বলেন, ‘চীনের অর্থ যখন ভারতীয় ক্রিকেটের সাহায্যে আসছে, তখন তা মেনে নেওয়া উচিৎ। আমিও কিন্তু ব্যক্তিগত ভাবে চীনের পণ্যে বিধিনিষেধ জারির পক্ষে। চীনের কোম্পানির থেকে স্পন্সরশিপ এনে আমরা এখানে সরকারকে সাহায্য করছি, ভারতের স্বার্থ রক্ষা করছি। চীনের নয়, এমন সংস্থার থেকেও আমরা স্পন্সরশিপের অর্থ পেতে পারি। তার মধ্যে ভারতের সংস্থাও থাকতে পারে। কিন্তু চীনের কোম্পানি যখন এখানে পণ্য বিক্রি করছে, তখন সেই অর্থের কিছুটা ভারতীয় অর্থনীতিতে ফিরে আসাই ভালো। বিসিসিআই চীনে অর্থ দিচ্ছে না। বরং তার উল্টোটা ঘটছে। তাই আবেগ নয়, যুক্তির মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিৎ।’
আইপিএল আইপিএলের স্পন্সর ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ চীন-ভারত সম্পর্ক ভারতের চীনা পণ্য বর্জন