টানা দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন শেষে আইসিসি’র চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন শশাঙ্ক মনোহর। আইসিসি’র চেয়ারম্যান হিসেবে ৩০ জুন ছিল শশাঙ্ক মনোহরের শেষ দিন। শেষ কর্মদিবসের পরদিনই অর্থাৎ ১ জুলাই নিয়মতান্ত্রিকভাবে নিজের পদ থেকে সরে দাঁড়ান ভারতের এই খ্যাতিমান আইনজীবি।
মেয়াদ শেষে চেয়ারম্যানের পদ থেকে শশাঙ্কের সরে যাওয়ায় যেন হাফ ছেড়ে বেছে গেছেন এন শ্রীনিবাসন। ভারতের ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক এই সভাপতি টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বুধবার (১ জুলাই) জানিয়েছেন শশাঙ্ক মনোহর ভারতের ক্রিকেটের শত্রু। সেই ভারতের ক্রিকেটের অনেক ক্ষতি করেছে।
শশাঙ্ক মনোহর প্রথম মেয়াদে আইসিসি’র চেয়ারম্যানের পদ অলংকৃত করেছিলেন ২০১৬ সালের মে মাসে। আইসিসি’র ইতিহাসে তিনিই প্রথম স্বাধীন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। আর ২০১৫ সালে বিতর্কিত ‘তিন মোড়ল’ নীতি প্রণয়ন করে বিশ্ব ক্রিকেট পরিচালনার সর্বময় ক্ষমতা দখল করে ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড। আইসিসি’র আয়ের সিংহভাগ এই তিন দেশে ভাগাভাগি করে নেওয়ার বন্দোবস্ত করে। শ্রীনিবাসনের হাত ধরেই ক্রিকেটে ‘বিগ থ্রি’ মডেল দাঁড়িয়েছিল। তবে মনোহর দায়িত্ব নিয়েই ভেঙে দেন ‘বিগ থ্রি’। তাই তো মনোহরকেই ভারতের ক্রিকেটের শত্রু হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন শ্রীনিবাসন।
টাইম অব ইন্ডিয়াকে শ্রীনিবাসন বলেছেন, ‘মনোহর একজন আত্মকেন্দ্রিক মানুষ, ২০১৫ সালে সে কেবল নিজের কথা চিন্তা করেই ভারতীয় ক্রিকেটের দুর্দিনে বিসিসিআই ছেড়ে আইসিসি’র দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল। শশাঙ্ক জানতো যে সে ভারতের ক্রিকেটের সর্বচ্চ প্রশাসনের দায়িত্ব পাবে না, তাই সে এটাকে সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে পালিয়ে গিয়েছিল নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য।’
চেন্নাইয়ের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এন শ্রীনিবাসন এক সময় কাজ করেছেন শশাঙ্ক মনোহরের সঙ্গেই। ব্যক্তিগতভাবে শ্রীনিবাসন মনে করেন ভারতীয় ক্রিকেটের লাভের চেয়ে ক্ষতিই নাকি চেয়েছেন এই ভারতীয় আইনজীবী। শ্রীনিবাসন বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, সে ভারতীয় ক্রিকেটের অনেক ক্ষতি করেছে। আর্থিকভাবে ভারতকে আঘাত করেছে। আইসিসিতে ভারতের সুযোগ কমিয়ে দিয়েছে। সে একজন ভারত-বিরোধী ও বিশ্ব ক্রিকেটে ভারতের গুরুত্ব কমেছে তার জন্যই। সে এখন পালিয়ে যাচ্ছে কারণ সে জানে যে ভারতীয় ক্রিকেটের নেতারা তাকে সম্মান করে না।’
২০১৫ সালে প্রথম মেয়াদ দুই বছরের জন্য দায়িত্ব নিলেও ১০ মাস পূর্ণ হওয়ার আগেই ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছিলেন। পরে বোর্ডের অনুরোধে সাময়িকভাবে দায়িত্ব চালিয়ে যেতে রাজি হন। দ্বিতীয় মেয়াদে ২০১৮ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দুই বছরের জন্য আইসিসি’র স্বাধীন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মনোহর।
বুধবার (১ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইসিসি জানিয়েছেন, ‘আইসিসি চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহর দুইবার দুই বছরের মেয়াদ শেষে সরে দাঁড়িয়েছেন। আইসিসি’র বোর্ড আজ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যতদিন তার স্থলাভিষিক্ত নির্বাচিত না হবেন, ততদিন ডেপুটি চেয়ারম্যান ইমরান খাজা চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব পালন করবেন।’