লেস্টারের বিপক্ষে আর্সেনালের ড্র, লাভ হলো চেলসির
৮ জুলাই ২০২০ ০৩:৪৪
ঘরের মাঠ এমিরেটস স্টেডিয়ামে লেস্টার সিটিকে আতিথ্য দেয় আর্সেনাল। ঘরের মাঠে ১০ জনের দল নিয়েও লেস্টারকে ১-১ গোলে আটকে দিয়েছে গানাররা। লেস্টারের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে দুর্দান্ত ছন্দে ছিল আর্সেনাল, তাই তো জয়ের বিকল্প ভাবছিলেন না গানারদের কোচ মিকেল আর্তেতা। অন্যদিকে করোনাভাইরাস পরবর্তীতে পুনরায় খেলা শুরু হওয়ার পর বেশ বাজে সময় কাটছে লেস্টারের, সেখান থেকে বের হওয়া হলো না এমিরেটস স্টেডিয়ামেও।
এই ম্যাচে মাঠে নামার আগে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের পয়েন্ট তালিকার তিন নম্বর থেকে নেমে চারে চলে আসে লেস্টার। চেলসি ক্রিস্টাল প্যালেসকে ৩-২ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে লেস্টারকে পেছনে ফেলে লিগ টেবিলের তৃতীয় স্থানে উঠে আসে ল্যাম্পার্ডের দল। আবারও সেরা তিনে উঠে আসতে লেস্টারকে গড়তে হতো ইতিহাস। কেননা ঘরের মাঠে লেস্টারের বিপক্ষে শেষ ২২ ম্যাচে অপরাজিত আর্সেনাল। শেষ পর্যন্ত ১০ জনের দলের বিপক্ষেও জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারল না ব্রেন্ডন রজার্সের লেস্টার সিটি।
এমিরেটসে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা অধিনায়ক অবমেয়ং এবং আলেক্সান্ডার লাকাজেথকে আক্রমণভাগে দিয়ে শুরু করেন মিকেল আর্তেতা। আর তার ফলাফলও আসে ম্যাচের ২০ মিনিট পার হতে না হতেই। ম্যাচের মাত্র ২১ মিনিটের মাথায় বাকাইও সাকার দেওয়া অ্যাসিস্ট থেকে দুর্দান্ত এক গোল করে আর্সেনালকে লিড এনে দেন পেইরে এমরিক অবমেয়ং।
প্রথমার্ধ শেষের মিনিট দশেক আগে আর্সেনালের গোল পরিশোধ করেন কেলেচি ইহানাচো। জেমি ভার্দির ক্রস থেকে ডি বক্সের কোনা থেকে দুর্দান্ত এক গোল করেন ইহানাচো। তবে বল জালে জড়ানোর আগেই রেফারি বাঁশি বাজিয়ে জানিয়ে দেন কোশিয়ানেকে ফাউল করেই ডি বক্সে ঢুকে পড়েন ইহানাচো। গোল করলেও ফাউলের কারণে বাতিল হয়ে যায় তাই আর আর্সেনাল যেন হৃদস্পন্দন ফিরে পায়। প্রথমার্ধে আর কোনো গোল না হওয়ায় ১-০ তে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় আর্সেনাল।
দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলই দুর্দান্তভাবে শুরু করে, আক্রমণের পর আক্রমণ করে যায় দু’দলই। তবে মিলছিল না গোলের দেখা। লেস্টারের জন্য সময়টা অনেক কম আর আর্সেনালের জন্য লিড ধরে রাখাটা অনেক মুশকিল হয়ে পড়ছিল সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে। ম্যাচের ৬৮ মিনিটে অবশ্য ম্যাচ অনেকটা নিজেদের দখলেই নিয়ে নিয়েছিল গানাররা। লাকাজেথ দুর্দান্ত এক গোল করে আর্সেনালের লিড দ্বিগুণ করেন কিন্তু ভিএআরের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয় তার আগেই অফ সাইডে পজিশনে ছিলেন লাকাজেথ, বাতিল হয় গোল। অর্থাৎ তখনও ১-০’তেই এগিয়ে আর্সেনাল।
এরপর ম্যাচের ৭১ মিনিটে এডওয়ার্ড নিকেইটাহ মাঠে নামেন লাকাজেথের পরিবর্তে তবে মাঠে নামার মিনিট পাঁচেক পরেই মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। মধ্যমাঠে জেমস জাস্টিনকে ফাউল করায় ভিএআরের সহায়তায় নিকেইটাহকে সোজা লাল কার্ড দেখিয়ে দেন রফারি। অগত্যায় মাঠ ছাড়তে হয় তাকে, আর ম্যাচের বাকি সময় ১০ জনের দলে পরিণত হয় স্বাগতিকরা।
আর ১০ জনের দলের সুবিধা নিয়ে ম্যাচের ৮৪ মিনিটে চলতি মৌসুমে নিজের ২২তম গোলে সমতায় ফেরান লেস্টারকে। ফক্সরা ১-১ গোলের সময়তায়। এরপর অবশ্য আর্সেনালকে চেপে ধরে ফক্সরা, তবে গোলের দেখা মিলছিল না কোনোভাবেই। বেশ কয়েকবার গানারদের ডি বক্সে গিয়েও হতাশ হতে হয়েছে লেস্টারকে। শেষ পর্যন্ত আর কোনো গোল না হওয়ায় ১-১ সমতায় শেষ হয় খেলা আর দুই দলকে এক পয়েন্ট নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়।
এই ড্র’তে লাভটা হলো চেলসিরই আর সেই সঙ্গে চ্যাম্পিয়নস লিগের স্বপ্ন বাড়ছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের। ক্রিস্টাল প্যালেসকে ৩-২ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে লেস্টারকে পেছনে ফেলে পয়েন্ট টেবিলের তিনে উঠে আসে চেলসি। ভয় ছিল রাতে লেস্টার আর্সেনালকে হারিয়ে দিলে আবারও চারে নেমে যেতে হবে চেলসিকে। তবে তা আর হয়নি, লেস্টার আর্সেনাল পয়েন্ট ভাগাভাগি করেই মাঠ ছাড়ে। এই ম্যাচ শেষে ৩৪ ম্যাচ শেষে চেলসি ৬০ পয়েন্ট নিয়ে ৩য় স্থানে, লেস্টার সমান ম্যাচে ৫৯ পয়েন্ট নিয়ে ৪র্থ। অন্যদিকে লেস্টারের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এক ম্যাচ কম ৩৩ ম্যাচ খেলে ৫৫ পয়েন্ট নিয়ে ৫ম স্থানে তারা। আর ৩৪ ম্যাচে ৫০ পয়েন্ট নিয়ে ৭ম স্থানে আর্সেনাল।
আর্সেনাল বনাম লেস্টার সিটি ইপিএল ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ চেলসি লিগ টেবিল