ব্রাজিলকে হারানোর চেয়েও বেশি সুখ পেয়েছি : মুলার
১৬ আগস্ট ২০২০ ২৩:২৩
এভাবে যার-তার বিপক্ষে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো বোধহয় কেবল মুলারদের দ্বারাই সম্ভব। বিশ্ব ফুটবলের মোড়ল দেশ বা মোড়ল ক্লাবগুলোকে মাঝে মাঝে তারা এমন পরিস্থিতিতে ফেলেন যা ভুক্তভোগীদের সারা জীবন তাড়া করে বেড়ায়। খেলাধুলায় জয়-পরাজয় থাকবেই। তাই বলে এভাবে? ২০১৪ সালে ব্রাজিল বিশ্বকাপে স্বাগতিকদের বিপক্ষে সেমিফাইনালে ৭-১ গোলের জয়। এবার চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে বার্সেলোনাকে ৮-২ গোলে হারানো। বড় আসরে বড় দলের বিপক্ষে এমন বড় জয় একজনের ক্যারিয়ারে বারবার ঘটে না। কিন্তু টমাস মুলারদের ক্ষেত্রে অবশ্য ভিন্ন কথা।
জাতীয় দল আর ক্লাব ফুটবলের আলাদা অঙ্গন সত্য, তবে এও তো সত্য জার্মান জাতীয় দল ও বুন্দেসলিগার সবচেয়ে সফল ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখের ফুটবল দর্শন প্রায় একই। একথা কার না জানা যে, জার্মানির জাতীয় দলের বেশিরভাগ ফুটবলার জার্মান লিগেই খেলেন। তাই বার্সেলোনার বিরুদ্ধে বায়ার্ন মিউনিখের জয় আর ২০১৪ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ব্রাজিলের বিরুদ্ধে জার্মানির জয়ের তুলনা মোটেও বাড়াবাড়ি নয়। সবচেয়ে বড় কথা হলো এই দুই ম্যাচেই প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য দায়ী টমাস মুলার খেলেছেন। মুলার নিজেই দুই ম্যাচের তুলনা করে মন্তব্য করেছেন।
কোন ম্যাচটি খেলে বেশি আনন্দ পেয়েছেন মুলার? মোটেও কূটনৈতিক জবাবের দিকে যাননি এই জার্মান। ম্যাচটি এভাবে জিতে মোলারের তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া— ‘আমরা আজ অনেক মজা করেছি’। মুলার স্পষ্ট করে জানান, ২০১৪ সালে ব্রাজিলকে হারিয়ে যে সুখ পেয়েছেন তার চেয়েও বেশি সুখ পেয়েছেন এবার বার্সেলোনাকে হারিয়ে।
এই ম্যাচে বড় জয় পেয়ে মুলারের মনে কেন এত সুখ? ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি— ‘যখন আমরা (জার্মানি) ব্রাজিলের বিপক্ষে ওই ম্যাচে খেলছিলাম তখন ম্যাচে এত নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। আপনি কখনই বার্সেলোনাকে পুরোপুরি অকেজো করতে পারবেন না। কিন্তু আমরা এবারের ম্যাচে বার্সার মধ্যভাগকে খেলার জন্য কোনো জায়গাই দেইনি। আসলে বার্সার বিপক্ষে ম্যাচে আমরা যা যা করতে চেয়েছিলাম ঠিক তা করতে পেরেছি’।
মুলার বলেন, ‘সবচেয়ে দারুন ব্যাপার ছিল যে, বেঞ্চ থেকে বদলি হিসেবে যারা নেমেছিলো তারাও ম্যাচটি একই মেজাজ ও আনন্দ নিয়ে খেলেছে’।
২০১৪ সালে ব্রাজিলের বিপক্ষে সেমিফাইনাল ম্যাচটিতে জার্মানির গোল বন্যার শুরুটা করেন এই মুলার। এর পরেই মূলত ব্রাজিলের রক্ষণভাগ তাসের ঘরের মত জার্মান আক্রমণের সামনে ভেঙে পড়ে।
আরও পড়ুন-
বাভারিয়ান টর্নেডোতে বিধ্বস্ত কাতালান
‘এটা লজ্জার, অপমানের, হতাশার’
বার্সেলোনার কলঙ্কের রাত
সেতিয়েনের বার্সা অধ্যায়ের সমাপ্তি?
বার্সার হারে খুশি কুতিনহো
চ্যাম্পিয়নস লিগে বার্সার প্রয়োজনের সময়েই মিলিয়ে যান মেসি!
এবার বার্সেলোনার বিপক্ষে ম্যাচটি শুরুর আগে সকল লাইমলাইট ছিলো মেসি ও লেভানডভস্কির উপর। তবে মুলার দেখিয়ে দিয়েছেন তার জাতই আলাদা। বড় ম্যাচে মুলারদের দিকে নজর না দেওয়া অন্যায়। তাই মাত্র ৪ মিনিটের মাথায় বার্সার জালে বল পাঠিয়ে জানান দিলেন আজকে শুভদিন। পরে আরেক গোল করে হয়েছেন ম্যাচ সেরা।
এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বায়ার্ন মিউনিখ এখন পর্যন্ত অপরাজিত। হ্যান্সি ফ্লিকের দল এতটাই আক্রমণাত্মক যে শেষ ষোলতে চেলসিকে দুই লেগে দিয়েছে ৭ গোল। আর কোয়ার্টার ফাইনালে এক লেগের ম্যাচে বার্সেলোনার মত জায়ান্ট ক্লাবকে খেতে হয়েছে ৮ গোল।
তবে মুলার এটাও জানিয়ে দিয়েছেন বড় জয় পেলে কী হবে, মূল লক্ষ্য এখনও অর্জন হয়নি। সতর্ক মুলার বলেন, ‘প্রতিটি ম্যাচই নতুন। এখনও আমরা কিছু জিতিনি। মনে রাখতে হবে আগামী ম্যাচটি স্কোরলাইন ০-০ নিয়েই শুরু হবে। আমি জানি অন্য দলগুলো আমাদের খেলা দেখছে। পরের ম্যাচগুলো জিততে হবে। আমাদেরকে অবশ্যই শান্ত, স্বচ্ছন্দ এবং খুব খুশি থাকতে হবে’।