Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইন্টারকে হারিয়ে সেভিয়ার ৬ষ্ঠ ইউরোপা লিগ জয়


২২ আগস্ট ২০২০ ০২:৫৬

উয়েফা ইউরোপা লিগের ফাইনালে ইন্টার মিলানকে হারিয়ে সেভিয়ার ষষ্ঠ শিরোপা জয়। জার্মানির রেইন এনার্জি এস্তাদিওনে অবিশ্বাস্য এক ফাইনাল উপভোগ করল ফুটবল বিশ্ব। দুর্দান্ত ফুটবল খেলে শেষ পর্যন্ত ইন্টারকে নির্ধারিত ৯০ মিনিটে ৩-২ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে ২০১৯/২০ মৌসুমের ইউরোপা লিগের শিরোপা জিতে নেয় সেভিয়া।

এর আগে সেভিয়া ইউরোপা লিগের শিরোপা জিতেছিল ২০১৫/১৬ মৌসুমে। আর মাত্র তিন বছর পর আবারও ইউরোপা লিগ জয়ের স্বাদ পেল সেভিয়া। হুলেন লোপেতিগের অধীনে দুর্দান্ত ফুটবল খেলতে থাকা সেভিয়া আবারও ইউরোপা লিগ চ্যাম্পিয়ন। হ্যাঁ! আবারও কেননা ম্যাচ চলাকালীন ধারাভাষ্যকাররাও জানিয়ে দিলেন সেভিয়া ইউরোপার লিগের রাজা। আর পরিসংখ্যানও কথা বলছে তাদের পক্ষেই।

বিজ্ঞাপন

নিজেদের ইতিহাসে প্রথম ২০০৫/০৬ মৌসুমে ইউরোপা লিগ জয় করে সেভিয়া। আর তার পরের মৌসুমেই অর্থাৎ ২০০৬/০৭ মৌসুমে পুনরায় জেতে ইউরোপা। আর এরপর ২০১৩/১৪ মৌসুম থেকে টানা তিন মৌসুম ধরে রাখে ইউরোপা লিগের শিরোপা। আর সাবেক কোচ উনাই এমরের অধীনে এমন ঈর্ষনীয় সফলতা অর্জন করে স্প্যানিশ ক্লাবটি। আর নিজেদের ৫ম ইউরোপা লিগের শিরোপা জয়ের তিন বছর পর আবারও পুনরুদ্ধার করল শিরোপা।

শুক্রবার (২১ আগস্ট) বাংলাদেশ সময় রাত একটায় জার্মানিতে অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯/২০ মৌসুমের ইউরোপার লিগের ফাইনাল। ফাইনালে ১৯৯৭/৯৮ মৌসুমের ইউরোপা লিগ চ্যাম্পিয়ন ইন্টার মিলানের মুখোমুখি হয় সেভিয়া। ইন্টার মিলান ৯০ দশকে তিনবার ইউরোপা লিগের শিরোপা জয় করে। তবে সম্প্রতি সময়ে ইউরোপা লিগে দুর্দান্ত পারফর্ম করা সেভিয়ার কাছে শেষ পর্যন্ত শিরোপা হারাতে হয় তাদের।

বিজ্ঞাপন

এদিন ইন্টারের নায়ক আবার খলনায়ক দুইই বনেছেন রোমেলো লুকাকু। তবে শেষ পর্যন্ত তার ভুলেই শিরোপা হাতছাড়া হয়েছে ইন্টারের। ম্যাচের মাত্র পাঁচ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি থেকে গোল করে ইন্টারকে এগিয়ে নেন লুকাকু। সেভিয়া ডিফেন্ডার ডিয়েগো কার্লোস ডি বক্সের ভেতরে রোমেলো লুকাকুকে ফাউল করলে রেফারি সরাসরি পেনাল্টির বাঁশি বাজান আর কার্লোসকে হলুদ কার্ড দেখিয়ে দেন। তবে সে যাত্রায় কার্লোস কিছুটা ভাগ্যবানই বলা চলে কেননা লুকাকুকে মারাত্মকভাবে ফাউল করায় লাল কার্ডও দেখতে পারতেন তিনি।

তবে ইউরোপা লিগকে নিজেদের সম্পত্তি বানিয়ে ফেলা সেভিয়া সহজে হালছাড়ার নয়। তাই তো পাঁচ মিনিটের মাথায় গোল হজম করলেও তা শোধ করতে সময় নেয় মাত্র ছয় মিনিট। ম্যাচের ১১ মিনিটের মাথায় জেসুস নাভাসের দুর্দান্ত এক ক্রস থেকে মাথা ছুঁইয়ে ইন্টারের জালে বল জড়ান লুক ডি ইয়ং। তবে ফাইনালের উত্তাপ ছড়ানো কেবল শুরু হলো তখন। এখনও নাটকীয়তার বাকি অনেক।

ম্যাচের আধা ঘণ্টা অতিবাহিত হয়েছে তখন, আর ৩০ মিনিট পেরিয়ে তখন ম্যাচের সময় ৩৩ সে সময়ই এভার বনেগার নেওয়া ফ্রিকিক থেকে গোল করে সেভিয়াকে প্রথমবারের মতো এগিয়ে নেন ডি ইয়ং। সেভিয়াকে সমতায় ফেরানো ডি ইয়ং এবারেও হেড দিয়ে গোল করেন। তবে খুব বেশি সময় লিড ধরে রাখতে পারেনি সেভিয়া। লিড নেওয়ার দুই মিনিট পরেই মার্সেলো ব্রোজোভিচের অ্যাসিস্ট থেকে দুর্দান্ত এক গোল করেন ডিয়েগো গোডিন। আর তাতেই সমতায় ফেরে ইন্টার। আর প্রথমার্ধ শেষ হয়ে ২-২ গোলে সমতায় থেকেই।

প্রথমার্ধেই অবশ্য জোড়া গোল করা ডি ইয়ংয়ের হ্যাটট্রিক হতে পারত যদি জেসুস নাভাসের ডী বক্সে দেওয়া পাসটি ধরতে পারতেন। তবে প্রথমার্ধে আর কোনো দলই গোলের দেখা পায়নি। তাই তো ম্যাচ মীমাংসার জন্য অপেক্ষা করতে হয় দ্বিতীয়ার্ধের। আর ম্যাচের শুরুতেই পেনাল্টি দিয়ে লাল কার্ডের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া ডিয়েগো কার্লোস এবার বাঁচালেন সেভিয়াকে, ডি বক্সের ভেতর দুর্দান্ত ব্লক করে দলকে ম্যাচে ধরে রাখেন।

অন্যদিকে লুকাস ওকম্পাসের দুর্দান্ত ক্ষীপ্রতায় ইন্টারের রক্ষণকে ব্যস্ত রাখে সেভিয়া। তবে ম্যাচের ৬৫ মিনিটে লুকাকু গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু সেভিয়া গোলরক্ষক বুনোর দুর্দান্ত সেভে ব্যর্থ হন লুকাকু। আর ম্যাচের ৭৪ মিনিটে ইন্টারের ডি বক্সের ভেতরে বাইসাইকেল শটে গোলের চেষ্টা করেন সেভিয়ার ডিফেন্ডার ডিয়েগো কার্লোস। প্রথমার্ধে যিনি পেনাল্টি প্রদান করে ইন্টারকে এগিয়ে এতে সাহায্য করেছিলেন। প্রথমে খলনায়ক হলেও ম্যাচের শেষভাগে এসে বনে যান নায়ক। তার নেওয়া বাইসাইকেল শট ইন্টার স্ট্রাইকার রোমেলো লুকাকুর পায়ে লেগে জালে জড়িয়ে যায়। আর ম্যাচের ১৫ মিনিট বাকি থাকতে ৩-২ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে যায় সেভিয়া।

১৫ মিনিট বাকি থাকতে লিড নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দলে তিন পরিবর্তন আনেন সেভিয়া ম্যানেজার হুলেন লোপেতেগি। দলের রক্ষণভাগকে আরও শক্ত করেন এই স্প্যানিশ ম্যানেজার। অন্যদিকে গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠা ইন্টারকে থামান গোল লাইন থেকে বল ফেরত পাঠিয়ে গোল বঞ্চিত করেন সেভিয়া ডিফেন্ডার কন্দে। আর তাতেই ইন্টারের শেষ চেষ্টাও বৃথা হয়ে যায়। আর রেফারি বাঁশি বাজিয়ে দেন খেলা শেষের।

জার্মানিতে ইউরোপার লিগের নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষে ইন্টার মিলানকে ৩-২ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে শিরোপা উল্লাসে মাতে সেভিয়া। শেষ ১৫ বছরে এটি ইউরোপা লিগে সেভিয়ার ষষ্ঠ শিরোপা। এদিন অবশ্য ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি স্ট্রাইকার রোনালদো নাজারিওর রেকর্ড স্পর্শ করেছেন রোমেলো লুকাকু। অভিষেক মৌসুমে রোনালদো ইন্টারের হয়ে করেছিলেন ৩৪টি গোল আর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে ইন্টারে নাম লেখানো লুকাকুও ফাইনালে এক গোল করে স্পর্শ করলেন রোনালদোর ৩৪ গোলের রেকর্ড। আর সেই সঙ্গে লুকাকু এই ম্যাচ নিয়ে টানা ১১টি ইউরোপা লিগের ম্যাচেও গোল করলেন। তবে শেষ পর্যন্ত তার ভুলেই হাতছাড়া হলো ইউরোপার শিরোপা।

উয়েফা ইউরোপা লিগ টপ নিউজ সেভিয়া বনাম ইন্টার মিলান

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

উর্মিলার সংসার ভেঙে যাওয়ার কারণ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০২

নতুন পরিচয়ে কুসুম সিকদার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭

সম্পর্কিত খবর