Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মেসির সঙ্গে সাক্ষাতের পর তার জীবন হয়ে উঠেছিল বিভীষণ!

স্পোর্টস ডেস্ক
৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২১:২৩

সাধারণ একজন ভক্তের জন্য লিওনেল মেসির সঙ্গে সাক্ষাৎ চাট্টিখানি কথা নয়। অনেকের কাছে চাঁদ হাতে পাবার মতো বিষয়! ক’জনই বা পায় সেই সুযোগ। আফগানিস্তানের মুর্তজা আহমাদির সেই সুযোগ হয়েছিল। কিন্তু প্রিয় তারকার সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টিই নাকি জীবন বিভীষণ করে তুলেছিল মেসির এই সাধারণ একজন ভক্তের!

মুর্তজা আহমাদিকে চিনেছেন তো? ২০১৬ সালে একটি প্লাস্টিকের কাগজের ওপরে ‘মেসি’ লিখে ফুটবল খেলে রীতিমতো ভাইরাল হয়ে পড়েছিলেন ৬ বছরের ছোট্ট আহমাদি। আর্জেন্টিনার জার্সির মতো দেখতে ডিজাইনের প্লাস্টিকের কাগজ দিয়ে জার্সি বানিয়েছিলেন আফগানিস্তানের এই শিশু। জার্সিও ওপরে লেখা ছিল ‘মেসি’, নিচে ১০ নম্বর। সেই জার্সি গায়ে আহমাদির ফুটবল খেলার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন তার ভাই।

বিজ্ঞাপন

জার্সি কেনার সামর্থ না থাকায় প্লাস্টিকের কাগজে প্রিয় তারকা মেসির নাম লিখে শিশুটি খেলছে, এমন ভাবনায় মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় সেই ছবি। স্বয়ং মেসির কাছেও পৌঁছে যায় খবর। মেসি নিজে তার ক্ষুদে ভক্তের সঙ্গে দেখা করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। কাতারে মেসি-আহমাদির সাক্ষাৎ এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল।

২০১৬ সালের ডিসেম্বরে আল-আহলের বিপক্ষে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলতে কাতার এসেছিল বার্সেলোনা। সেখানেই মুর্তজাকে ডেকে নেন মেসি। ম্যাচের আগে মাঠে বল নিয়ে মেসির সঙ্গে কারিকুরি করতেও দেখা যায় মুর্তজাকে। ছোট্ট শিশুটির জন্য নিশ্চয় স্বপ্নময় মুহূর্ত ছিল সেটি। কিন্তু সেটাই কিনা কাল হয়ে উঠে তার জন্য!

মেসির পক্ষ থেকে দুটি বক্সে করে উপহার পাঠানো হয় মুর্তজাকে। মুর্তজার বাবা বলছিলেন, ‘দ্রুত মেসির পক্ষ থেকে দুটি বাক্স এলো আমাদের বাড়িতে। বক্সগুলোর এলে আমরা ভাবছিলাম, হয়তো মুর্তজার জন্য এক বক্সে খেলনা আছে আরেকটিতে কিছু ডলার। কিন্তু না, এক বক্সে ছিল একটা বল আর একটায় জার্সি।’

বিজ্ঞাপন

মুর্তজার বাবার মতো ভেবেছিলেন পাড়া-পড়শিরাও। সবাই ভাবতে শুরু করেন মেসির পক্ষ থেকে অনেক অর্থ পেয়েছেন তারা। স্থানীয় তালেবানের কাছেও পৌঁছে যায় খবর। তার পরই বিপত্তির শুরু। মুর্তজার পরিবারের কাছে অর্থ দাবি করে তালিবান। পরে অপহরণ, হত্যার হুমকিও আসে। নিরাপদ আশ্রয়ে আবেদন করেছিল তার পরিবার, কিন্তু প্রত্যাখ্যান করা হয়। স্কুলে যাওয়া, ফুটবল খেলা বন্ধ হয়ে যায় মুর্তজার। বাড়ি থেকে বেরুতেও পারছিলেন না।

তার বাবা আরিফ বলছিলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম দোহায় গিয়ে মেসির সঙ্গে দেখার করার পর তিনি আহমাদির জন্য কিছু একটা করবেন। আমরা দোহায় গিয়েছিলাম সেই আশাতেই। কিন্তু মেসি কিছুই করলেন না।’ পারিবারির সীদ্ধান্তে মুর্তজাকে তখন বাড়িছাড়া করা হয়।

জন্মস্থান গজনি ছেড়ে চাচার সঙ্গে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের পাঠানো হয় মুর্তজাকে। কিন্তু কাবুল বসবাসের জন্য মোটেও সন্তোষজনক জায়গা নয়। বুলেটের শব্দ আর বারুদের গন্ধ কাবুলবাসির নিত্তদিনের সঙ্গী। একের পর এক সন্ত্রাসী হামলা শহরটিতে নিত্যদিনের ঘটনা। মুর্তজা সেখানে স্বাভাবিকভাবেই ভালো পরিবেশ পাননি।

তবে জীবন এতোটা বিভীষণ হয়ে পড়লেও মেসির প্রতি তার ভালোবাসা কমেনি। মেসির জার্সি পড়া ছাড়বেন না তিনি ‘ওখানে (কাবুল) প্রত্যেক জায়গায় অনেক বিস্ফোরণ হতো, বোম। খেলার জায়গা ছিল না, বন্ধু ছিল না। কিন্তু আমি আবারও জার্সি পরবো, কারণ আমি মেসিকে ভালোবাসি।’

কয়েক মাস ধরে মুর্তজা অবশ্য গজনিতে পরিবারের সঙ্গেই থাকছেন। পরিস্থিতি মোটামুটি স্বাভাবিক হলে পরিবারের কাছে ফিরে গেছেন মেসির ছোট্ট ভক্ত।

সারাবাংলা/এসএইচএস

মুর্তজা আহমাদি মেসিভক্ত মুর্তজা আহমাদি লিওনেল মেসি

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

শরৎ বাংলাদেশের কোমল স্নিগ্ধ এক ঋতু
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৫৪

সম্পর্কিত খবর