তামিমের অস্বস্তির রেকর্ড, শেষ বিকেলে বিষাদের ছায়া
৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৯:৪১
চট্টগ্রাম থেকে: প্রথম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৫৯ রানে গুটিয়ে দিতে তৃতীয় দিনের শেষ সেশনটা উৎসবমুখরই করে তুলেছিল বাংলাদেশের বোলাররা। কেননা ইনিংসে তখন তাদের সুস্পষ্ট ১৭১ রানের লিড। সেই উৎসবকে আরও বর্ণিল করে তুলতেই দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল ডোমিঙ্গো শিষ্যরা। কিন্তু তা আর হল কই? স্কোর বোর্ডে ৪৭ রান তুলতেই টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানের বিদায়ে উৎসব ছাপিয়ে শেষ বিকেলে সাগরিকায় নেমে এল বিষাদের ছায়া। বোলিংয়ে পাওয়া স্বস্তি যেন উবে গেল কর্পুরের মত!
দেশ সেরা ওপেনার তামিম ইকবালের টিপসে সেঞ্চুরি করেন জুনিয়র মেহেদি হাসান মিরাজ। অথচ সেই তিনিই কিনা ফিরলেন শূন্য হাতে! প্রথম ইনিংসে ৯ রানে থামা এই ওপেনার দ্বিতীয় ইনিংসেও নামের সুবিচার করতে পারেনি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে রাকিম কর্নওয়ালের লেংথ ডেলিভারির লাইন মিস করায় এলবি’র ফাঁদে পড়ে চাপে ফেলে দিলেন বাংলাদেশের ইনিংস।
এই ফেরার মধ্য দিয়ে একটি রেকর্ডও করে ফেললেন দেশের শীর্ষ এই রান সংগ্রাহক। যদিও তা দারুণ নেতিবাচক অর্থে এবং তার জন্য ভীষণ অস্বস্তির সেটা হল, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ৩৯৯ ইনিংসে এই দিয়ে ৩৩ বার শূন্য রানে আউট হয়ে শূন্যের রেকর্ডে মাশরাফি বিন মুর্তজার সঙ্গে দেশের পক্ষে যৌথভাবে শীর্ষে জায়গা করে নিলেন চট্টলার এই সন্তান। যদিও ক্রিকেটের তিন ফর্মেটে ১৩৪৭৫ রান নিয়ে দেশের সর্বকালের সেরা রান সংগ্রাহকও তিনি। ২৬২ ইনিংসে সমান সংখ্যকবার শূন্য রানে ফিরেছেন সবচয়ে সফল দলপতি মাশরাফিও।
যা হোক, তামিম ফেরার পরে যে চাপ বাংলাদেশের দলের ওপর তৈরী হল তা বেড়ে দ্বিগুন হল পরের ওভারেই নাজমুল হোসেন শান্তর বিদায়ে। এবার রাকিমের অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বল খোঁচা দিয়ে মেরে স্লিপে জার্মেইন ব্ল্যাকউডের হাতে ০ রানে ক্যাচ তুলে দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এরপর ৫ রানে সাদমান ইসলাম ফিরে গেলেন তখন রাজ্যের নীরবতা নেমে এল জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। উইন্ডিজদের ২৫৯ রানের গুটিয়ে দেওয়ার আনন্দ যেন সাগরিকার অস্তগামী সূর্যের সঙ্গে মিলিয়ে গেল।
ক্যারিবিয়ানদের আঁটসাঁট বোলিংয়ে ইনিংসের শুরুতে অস্বস্তিতে পড়েন সাদমান ও মুমিনুল হকও। সাদমান অবশ্য প্রথম রানের দেখা পান ২৯ বল খেলে। যদিও শেষ অবধি তার শেষ রক্ষা হয়নি। শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের বাউন্সারে পরাস্ত হয়ে মাত্র ৫ রানে ইনিংসের সলিল সমাধি রচনা করে দেন এই টাইগার ওপেনার।
প্রথম ইনিংসের ১৭১ ও দ্বিতীয় ইনিংসের ৪৭ রান মিলিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে ২১৮ রানে। তৃতীয় দিন শেষে লিড যা হয়ে গেছে, চতুর্থ ইনিংসে তা টপকে যেতে হিমশিমই খেতে হবে উইন্ডিজদের। কিন্তু স্বাগতিক হয়েও দিনের ব্যাটিংটা তাদের জন্য বিষাদের নামন্তরই হয়ে থাকল।
চট্টগ্রাম টেস্ট টেস্ট সিরিজ তামিম ইকবাল বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ