পাল্লেকেলেতে হঠাৎই বাংলাদেশের ব্যাটিং সৌন্দর্য থামিয়ে দিল বৃষ্টি। কিছুক্ষণ পর আবারও খেলা শুরু হলো ঠিকই কিন্তু সেটা স্থায়ী হয়েছে মাত্র ৭ ওভার। বৃষ্টিভেজা মাঠ আর আলোকস্বল্পতার কারণে আম্পায়াররা যখন আজ দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ ঘোষণা করলেন তখনও খেলা বাকি ২৫ ওভার। দ্বিতীয় দিনে মুমিনুল হকের দলের আফসোস এই একটাই। এই ২৫ ওভার খেলা হলে বাংলাদেশের স্কোরটা হয়তো আরও সুন্দর দেখাতো! এখনকার স্কোরও কম সুন্দর নয়, ৪ উইকেট হারিয়ে ৪৭৪ রান নিয়ে আজ টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে করেছে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশ।
পাল্লেকেলেতে ২ উইকেটে ৩০২ রান নিয়ে আজ দ্বিতীয় দিন শুরু করেছিল বাংলাদেশ। আগের দিনে অবিচ্ছিন্ন ১৫০ রানের জুটি গড়া নাজমুল হোসেন শান্ত ১২৬ রানে ও মুমিনুর হক সৌরভ ৬৪ রানে অপরাজিত ছিলেন। প্রথম দিন শেষে প্রেস কনফারেন্সে শান্ত বলেছিলেন, আজকের সকালটা ভালোই ভালোই কাটিয়ে দিতে পারলে বড় ইনিংস অনেকটা নিশ্চিত। সকালে শুধু শান্ত নয়, মুমিনুলও দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন।
তামিম ইকবালের শুরুর আক্রমণ আর শান্তর শান্ত ব্যাটিংয়ে শ্রীলঙ্কান বোলিং আগের দিনই খেই হারিয়ে ফেলেছিল। খেই হারানো লঙ্কানদের আজ দ্বিতীয় দিনে পাত্তাই দেননি শান্ত-মুমিনুল জুটি। ৬৪ রানে অপরাজিত থেকে দিন শুরু করা মুমিনুল প্রথম সেশনেই সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন। টেস্ট ক্যারিয়ারে বাংলাদেশ অধিনায়কের এটা ১০তম সেঞ্চুরি, কিন্তু বিদেশে প্রথম। মুমিনুল বিদেশে রান করতে পারেন না, এই অপবাদের ভালো একটা জবাব আজ দিয়েছেন কক্সবাজারের ক্রিকেটার। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এ নিয়ে চতুর্থ সেঞ্চুরি পেলেন মুমিনুল।
শান্তও দেড়শ পেরিয়ে যান দিনের প্রথম সেশনেই। অভিষেক সেঞ্চুরিতে দেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ইনিংস খেলার সম্ভবনা জাগিয়ে শান্ত যখন ফিরলেন ততোক্ষণে বাংলাদেশ রান পাহাড়ের চূড়ায়। দলীয় ৩৯৪ রানের মাথায় ১৬৩ রান করে ফিরেছেন তরুণ তারকা ক্রিকেটার। তার ইনিংসে চার ১৭টি, ছক্কা ১টি। শান্ত আর কিছুক্ষণ টিকে থাকলে কয়েকটা রেকর্ড হতো পারত। এর আগে বাংলাদেশ কখনোই ২ উইকেটে ৪০০ রান তুলতে পারেনি, শান্ত ফেরার আগে আর ৬ রান হলে আজ সেটা হতে পারত। টেস্ট ক্রিকেটে বলের হিসেবে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটিটি মোহাম্মদ আশরাফুল ও মুশফিকুর রহিমের দখলে। ২০১৩ সালে এই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫১৮ বলের জুটি গড়েছিলেন দুই তারকা, আজ শান্ত-মুমিনুলের জুটি ভেঙেছে ৫১৪ বলে।
দীর্ঘ সময়ের সঙ্গী শান্ত ফেরার পর বেশিক্ষণ মাঠে থাকতে পারেননি মুমিনুল হকও। দলীয় ৪২৪ রানের মাথায় ধনঞ্জয়া ডি সিলভার বলে থিরিমান্নের ক্যাচ হয়েছেন মুমিনুল। তার আগে ৩০৪ বল খেলে ১১টি চারের সাহায্যে খেলেছেন ১৩৬ রানের ঝলমলে একটা ইনিংস। জুটির রেকর্ড গড়ে এই দুজন ফেরার পর উইকেটে জমে যাচ্ছিল মুশফিকুর রহিম ও লিটন কুমার দাস জুটি। বৃষ্টি বিড়ম্বনা আর আলোক স্বল্পতার প্রতিবন্ধকতা সেখানেই শুরু।
দিন শেষে ১০৭ বল খেলে ৪টি চারে ৪৩ রানে অপরাজিত মুশফিক। লিটন ৩৯ বলে ২ চার ১ ছয়ে ২৬ রানে অপরাজিত। শ্রীলঙ্কার সব বোলারই ভুগেছে বাংলাদেশের বিপক্ষে। তাদের মধ্যে সবচেয়ে সফল তরুণ বিশ্ব ফার্নান্দো। ৭৫ রান খরচায় ২ উইকেট নিয়েছেন তরুণ পেসার। একটি করে উইকেট পেয়েছেন অপর পেসার লাহিরু কুমারা ও স্পিনার ধনঞ্জয়া।