হেডের আগ্রাসন, ওয়ার্নারের আক্ষেপ ২য় দিনে স্টোকসের নো বল বিতর্ক
৯ ডিসেম্বর ২০২১ ১৪:৩৭
অ্যাশেজের প্রথম দিনের মতো দ্বিতীয় দিনটাও নিজেদের করে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। প্যাট কামিন্সের ইতিহাস গড়ার দিনে ইংলিশদের মাত্র ১৪৭ রানে অলআউট করে দিয়েছিল অজিরা। আর দ্বিতীয় দিনে এসে ট্রাভিস হেডের আগ্রাসী সেঞ্চুরিতে ব্রিজবেন টেস্টের চালকের আসনে অস্ট্রেলিয়া। তবে এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ডেভিড ওয়ার্নারের ৬ রানের আক্ষেপ আর বেন স্টোকসের নো বল বিতর্ক।
১ উইকেটে ২৬ রান নিয়ে ব্যাট করছিল অস্ট্রেলিয়া। উইকেটে ছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। নিজের প্রথম ওভার করতে এলেন বেন স্টোকস। চতুর্থ বলেই ফিরিয়ে দিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। কিন্তু পরে দেখা গেল এটি নো বল ছিল। বেঁচে গেলেন ওয়ার্নার। এতটুকু পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু দৃশ্যপট বদলাল একটু পরে। টিভি রিপ্লেতে দেখা গেল, স্টোকসের করা আগের তিন বলও ছিল নো। কিন্তু আম্পায়ার নো বল ডাকেননি। হয়তো ওয়ার্নার আউট না হলে নো বলের বিষয়টি আর ধরাই পড়ত না! এরপরই শুরু হয় বিতর্ক।
ব্রডকাস্টার চ্যানেল সেভেনে পরবর্তী সময়ে দেখায় স্টোকসের প্রথম পাঁচ ওভারে নো বল হয়েছে ১৪টি, কিন্তু আম্পায়ার ডেকেছেন মাত্র ১টি। অথচ আইসিসির নিয়ম অনুসারে, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচে প্রতিটি ডেলিভারিতে নো বল পরীক্ষা করে দেখার কথা রয়েছে আম্পায়ারের। ব্রিজবেনে তেমনটা না হওয়ায় শুরু হয় তুমুল সমালোচনা।
পরে জানা গেছে, নো বল পীরক্ষা করার যে যন্ত্র থার্ড আম্পায়ার ব্যবহার করেন, সেটি নষ্ট হয়ে গেছে, যে কারণে আগের নিয়মে নো বল পরীক্ষা করছেন আম্পায়াররা। যেখানে মাঠের আম্পায়াররা দেখলেই কেবল নো বল ডাকবেন। আর থার্ড আম্পায়ার সেটি পরীক্ষা করবেন কেবল উইকেট পতনের পর। এখন পর্যন্ত আইসিসি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
এদিকে পঞ্চাশের আগেই ররি বার্নসের কল্যাণে জীবন পেয়েছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। সেঞ্চুরির কাছে গিয়ে বাঁচেন রান আউট থেকেও। কিন্তু তারপরেও সেঞ্চুরি পাওয়া হয়নি ওয়ার্নারের। অস্ট্রেলিয়ার দারুণ শুরুর পর ওলি রবিনসন, মার্ক উড, ক্রিস ওউকসদের তোপে খেলায় ফিরেছিল ইংল্যান্ড। তবে জো রুটের দলকে হতাশায় পুড়ান ট্রাভিস হেড। ওয়ানডে মেজাজে ৮৫ বলে ছুঁয়ে ফেলেন সেঞ্চুরি। তার ব্যাটে শক্ত অবস্থানে অস্ট্রেলিয়া।
বৃহস্পতিবার ব্রিজবেনের গ্যাবায় অ্যাশেজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ৭ উইকেটে ৩৪৩ রান তুলেছে অস্ট্রেলিয়া। লিড নিয়ে নিয়েছে ১৯৬ রানের।
অজিদের আনন্দে ভাসিয়ে ৯৬ বলে ১২ চার, ২ ছক্কায় ১১২ রানে অপরাজিত আছেন পাঁচে নামা হেড। দ্বিতীয় দিনে নেমে শুরুতেই ধাক্কায় খায় অজিরা। ৬ষ্ঠ ওভারেই মার্কাস হ্যারিসকে তুলে নেন রবিনসন। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ওয়ার্নারের সঙ্গে মিলে দারুণ জুটি গড়েন মার্নাস লাবুশান। এই জুটি ভাঙ্গার অবশ্য সহজ সুযোগ এসেছিল ইংল্যান্ডের। রবিনসনের বলে স্লিপে সহজ ক্যাচ দিয়েছিলেন ৪৮ রানে থাকা ওয়ার্নার। বার্নস তা ফেলে দিলে ওয়ার্নার এগুতে থাকেন শতকের দিকে।
তবে ব্যক্তিগত ৭৪ রানে লাবুশান ফিরলে ভাঙে ১৫৬ রানের জুটি। টিকতে পারেননি স্টিভ স্মিথও। ফিরেছেন মাত্র ১২ রান করে। এরপর রবিনসনের বল বুঝতে না পেরে মিড অফে সহজ ক্যাচ তুলে দিয়ে ১৭৬ বলে ওয়ার্নার থামেন ৯৪ রানে। ঠিক পরের বলেই বল ছেড়ে বোল্ড হয়ে যান ক্যামেরুন গ্রিন। রবিনসনে হ্যাটট্রিক ঠেকালেও বেশি দূর যেতে পারেননি অভিষিক্ত অ্যালেক্স ক্যারি। ওকসের বলে পুল শটে সহজ ক্যাচে তিনি ফেরেন ১২ রান করে। এতেই ২৩৬ রানে ৬ষ্ঠ উইকেটের পতন ঘটে অজিদের।
এরপর অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের সঙ্গে দারুণ জুটি গড়েন ট্রাভিস হেড। ওয়ানডে মেজাজে খেলতে থাকেন হেড। কামিন্সের সঙ্গে৬৯ বলে ৭০ রানের জুটি গড়েন যার ভেতর মাত্র ১২ রান করেন কামিন্স। দলীয় ৩০৬ রানে ফেরেন কামিন্স এরপর স্টার্ককে সঙ্গে নিয়ে চালাতে থাকেন ঝড়। হেড ৮৫ বলে বাউন্ডারি মেরে স্পর্শ করেন তিন অঙ্ক। টেস্টে এটি তার তৃতীয় শতক, অ্যাশেজে প্রথম। তার শতকের পর আর বেশিক্ষণ খেলা গড়ায়নি মাঠে। ৭ উইকেটে ৩৪৩ রানে দিনের খেলা শেষ হয়।
সংক্ষিপ্ত স্কোরবোর্ড
প্রথম ইনিংস
ইংল্যান্ড: ১৪৭/১০; (বার্ন্স ০, হামিদ ২৫, মালান ৬, রুট ০, স্টোকস ৫, পোপ ৩৫, বাটলার ৩৯, ওকস ২১, রবিনসন ০, উড ৮, লিচ ২*); (স্টার্ক ১২-২-৩৫-২, হ্যাজেলউড ১৩-৪-৪২-২, ১৩.১-৩-৩৮-৫, লায়ন ৯-২-২১-০, গ্রিন ৩-১-৬-১)
অস্ট্রেলিয়া: ৮৪ ওভারে ৩৪৩/৭ (ওয়ার্নার ৯৪, হ্যারিস ৩, লাবুশান ৭৪, স্মিথ ১২, হেড ১১২*, গ্রিন ০, ক্যারি ১২, কামিন্স ১২, স্টার্ক ১০*); (ওকস ১/৫৬, রবিনসন ৩/৪৮, উড ১/৫৭, স্টোকস ০/৫০, লিচ ১/৯৬, রুট ১/২৯).
অস্ট্রেলিয়া ১৯৫ রানে এগিয়ে আছে।
সারাবাংলা/এসএস
২য় দিন অস্ট্রেলিয়া বনাম ইংল্যান্ড ট্রাভিস হেড ডেভিড ওয়ার্নার দ্য অ্যাশেজ প্রথম টেস্ট বেন স্টোকস