হেনরির তোপে ৯০ বছর পর এমন লজ্জা দক্ষিণ আফ্রিকার
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৪:৫৩
টেস্টে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বনিম্ন স্কোর ৩৬, সেটিও ১৯৩২ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। এরপর ৯০ বছর পর আবারও সেই লজ্জার মুখে প্রোটিয়ারা। ক্রাইস্টচার্চে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচে মাত্র ৯৫ রানে অলআউট হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সবশেষ পাঁচ টেস্টে না খেলা পেসার ম্যাট হেনরির তোপের মুখে চা-বিরতির আগেই প্রথম ইনিংসে মাত্র ৯৫ রানে অলআউট হয় তারা। টেস্টে কিউইদের বিপক্ষে এটাই তাদের সর্বনিম্ন সংগ্রহ।
বৃহস্পতিবার ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের প্রথম দিন শেষে চালকের আসনে রয়েছে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। জবাব দিতে নেমে ৩ উইকেট হারিয়ে ১১৬ রান তুলে তারা সফরকারী প্রোটিয়াদের চেয়ে এগিয়ে আছে ২১ রানে।
ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে হেনরি নেন ৭ উইকেট। ১৫ ওভার করে ৭ মেডেনসহ তিনি খরচ করেন মোটে ২৩ রান। হ্যাটট্রিক না পেলেও এক ওভারেই ৩ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব গড়েন এই পেসার। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের ৪৭তম ওভারের প্রথম বলে কাইল ভেরেইনকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলার পর শেষ দুই বলে তিনি বিদায় করেন কাগিসো রাবাদা এবং অভিষিক্ত গ্লেনটন স্টারম্যানকে। তারা দুজনই ক্যাচ দেন উইকেটরক্ষক টম ব্লান্ডেলের হাতে।
টেস্টে তার ক্যারিয়ার সেরা তো বটেই, ১৫ টেস্টের ক্যারিয়ারে ইনিংসে ৫ উইকেটই পেলেন প্রথমবার। ৭৯ ম্যাচের প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারেও তার সেরা বোলিং এটি।
এই পারফরম্যান্সে তার নাম লেখা হয়ে যায় রেকর্ড বইয়েও। দেশের মাঠে নিউ জিল্যান্ডের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ডে স্পর্শ করেন কিংবদন্তি স্যার রিচার্ড হ্যাডলিকে। ১৯৭৬ সালে ওয়েলিংটনে ভারতের বিপক্ষে ২৩ রানে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন হ্যাডলি।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই হেনরির আঘাতের মুখে পড়ে প্রোটিয়ারা। দ্বিতীয় ওভারে অধিনায়ক ডিন এলগারের উইকেট হারায় তারা। আলগা শট খেলে তিনি ধরা পড়েন তৃতীয় স্লিপে। আরেক ওপেনার সারেল এরউইকে টিকতে দেননি কাইল জেমিসন। অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা এই বাঁহাতি স্মরণীয় করে রাখতে পারেননি নিজের প্রথম ইনিংসটিকে।
সফরকারীদের ব্যাটিংয়ের অন্যতম দুই ভরসা এইডেন মার্করাম ও রাসি ভ্যান ডার ডুসেনকেও থিতু হতে দেননি হেনরি। একই ওভারে তাদেরকে সাজঘরে পাঠান তিনি। ফলে দলীয় ৩৭ রানে পতন ঘটে ৪ উইকেটের।
মধ্যাহ্ন বিরতির পরও বদল ঘটেনি পরিস্থিতির। দ্বিতীয় সেশনের প্রথম ওভারের শেষ বলে টেম্বা বাভুমার উইকেট শিকার করেন টিম সাউদি। এরপর জুবায়ের হামজা ও ভেরেইন মিলে ষষ্ঠ উইকেটে গড়েন ৮৩ বলে ৩৩ রানের জুটি। হামজা দলের পক্ষে ৭৪ বলে সর্বোচ্চ ২৫ রান করেন। তাকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙার পর দক্ষিণ আফ্রিকার লোয়ার অর্ডারও কাঁপিয়ে দেন হেনরি।
ভেরেইনের ব্যাট থেকে আসে ৫২ বলে ১৮ রান। রাবাদা ও স্টারম্যান রানের খাতা খুলতে পারেননি। ডুয়ানে অলিভিয়েরকে আউট করে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের ইতি টেনে দেন নেইল ওয়াগনার।
বোলিং সাফল্যের পর ব্যাটিংয়ের শুরুটা খুব সাবলিল করতে পারেনি নিউ জিল্যান্ড। তবে টম ল্যাথাম ও উইল ইয়াং প্রথম ১১ ওভার কাটিয়ে দেন নিরাপদে।
ল্যাথামকে ফিরিয়ে অবশ্য শুরুতেই সাফল্য পেতে পারতেন অভিষিক্ত পেসার স্টুয়ারম্যান। তবে গালিতে ক্যাচ নিতে পারেননি মার্কো ইয়ানসেন। বাঁহাতি এই পেসার পরে ইয়াংকে ফিরিয়ে ভাঙেন উদ্বোধনী জুটি। পরে ভেতরে ঢোকা দারুণ এক ডেলিভারিতে ডুয়ানে অলিভিয়ের বোল্ড করে দেন ল্যাথামকে।
তবে প্রোটিয়া বোলারদের খুব একটা সহায়তা করতে পারেননি ফিল্ডাররা। হেনরি নিকোলস জীবন পান দুই দফায়। এই সুযোগে জুটি গড়ে তোলেন তিনি ডেভন কনওয়ের সঙ্গে। এই জুটিতেই লিড পেয়ে একশ পেরিয়ে যায় নিউ জিল্যান্ড। ৭৫ রানের এই জুটি থামান অলিভিয়ের। ৩৬ রান করে কনওয়ে বল টেনে আনেন স্টাম্পে। নিকোলস টিকে গিয়ে দিন শেষ করেন নাইটওয়াচম্যান ওয়াগনারকে নিয়ে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
১ম ইনিংস
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৪৯.২ ওভারে ৯৫ (এলগার ১, এরউইয়া ১০, মারক্রাম ১৫, ফন ডার ডাসেন ৮, বাভুমা ৭, হামজা ২৫, ভেরেইনা ১৮, ইয়ানসেন ২*, রাবাদা ০, স্টুয়ারম্যান ০, অলিভিয়ের ১; সাউদি ১২-২-৩৩-১, হেনরি ১৫-৭-২৩-৭, জেমিসন ১১-৪-১৯-১, ওয়্যাগনার ৯.২-২-১১-১, ডি গ্র্যান্ডহোম ২-১-১-০)।
নিউজিল্যান্ড: ৩৯ ওভারে ১১৬/৩ (ল্যাথাম ১৫, ইয়াং ৮, কনওয়ে ৩৬, নিকোলস ৩৭*, ওয়্যাগনার ২*; রাবাদা ১২-৪-৩৪-০, স্টুয়ারম্যান ১১-৫-১৯-০, ইয়ানসেন ৮-৩-১১-১, অলিভিয়ের ৮-১-৩৬-২)।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২০২২ বিপিএল। এবারের বিপিএলের সবকটি ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করবে দেশের জনপ্রিয় স্যাটেলাইট চ্যানেল জিটিভি। এছাড়াও বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম র্যাবিটহোলের ওয়েবসাইটে দেখা যাবে বিপিএলের খেলা। অনলাইনে র্যাবিটহোলে খেলা দেখতে ব্রাউজ করুন https://www.rabbitholebd.com/
সারাবাংলা/এসএস
ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট টেস্ট সিরিজ দক্ষিণ আফ্রিকা অলআউট নিউজিল্যান্ড বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা