আবারও ‘বিপদের বন্ধু’ হলেন আফিফ
২০ মার্চ ২০২২ ১৮:৪০
দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের আগে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছিল কন্ডিশন আর প্রতিপক্ষের পেস বোলিং আক্রমন নিয়ে। এই দুটিতেই আজ কুপকাত বাংলাদেশ! প্রথম ওয়ানডে জিতে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০তে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ আজ ব্যাটিং করতে নেমে রীতিমতো নাস্তানাবুদ হয়েছে।
প্রথম ওয়ানডেতে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে ৩১৪ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। ম্যাচও জিতেছিল তামিম ইকবালের দল। আজ টস জিতে সেই কারণেই বুঝি আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। কিন্তু প্রথম ম্যাচের পূনরাবৃত্তি ঘটার বিপরীতে আজ হলো উল্টোটা। মাত্র ৩৪ রানেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ।
প্রথম ম্যাচ হেরে তেঁতেই ছিলেন প্রোটিয়ারা। বাংলাদেশি ব্যাটারদের কাবু করার কৌশলও হয়তো আয়ত্ব করেছিলেন কাগিসো রাবাদা, লুঙ্গি এনগিডিরা! আজ নতুন বলে টানা গতির ওপর বাংলাদেশি ব্যাটারদের শরীরে বোলিং করে গেছেন দক্ষিণ আফ্রিকান পেসাররা। এতেই ছন্নছাড়া বাংলাদেশের টপ ও মিডল অর্ডার। ৩৪ রাানে প্রথম পাঁচ ব্যাটার ফিরলে মনে হচ্ছিল সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড হচ্ছে না তো আবার!
কিন্তু বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত গিয়ে থামল ১৯৪ রানে। আর এতে অনেক বড় অবদান আফিফ হোসেন ধ্রুবর। ধ্বংসস্তূপ থেকে কিভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয়ে আফিফ সেটা দেখালেন ব্যাটিংয়ের কর্তৃত্ব, শৈল্পিকতা এবং চোখের আনন্দ দিয়ে।
আফিফ যখন ক্রিজে গেলেন রাবাদা-এনগিডির পেস ছোবল তখন শেষ হয়নি। ওদিকে তাবরাজ শামছি ও কেশভ মহারাজ স্পিন বিষ বিছিয়ে দিচ্ছিলেন। রান রেটও ছিল তিনের নিচে। এতো চাপ কাটিয়ে উঠতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ধৈর্য। ক্যারিয়ারের ১১তম ওয়ানডে খেলতে নামা আফিফ সেটাই দেখালেন আজ দুর্দান্তভাবে।
কঠিন পরস্থিতিতে উইকেট আগলে রেখেও যে রানের চাকা সচল রাখা যায় আফিফ সেটাও দেখালেন। উইকেটের চারপাশে শট খেলেছেন। আবার ভালো বলকে সমিহও করেছেন। যতোক্ষণ ক্রিজে ছিলেন মনেই হয়নি আউট হতে পারেন!
ষষ্ঠ উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে তুলেছেন ৬০ রান। সপ্তম উইকেটে মেহেদি হাসান মিরাজের সঙ্গে তুলেছেন আরও ৮৭ রান। এর মধ্যে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ওয়ানডে অর্ধশতক পেরিয়েছেন ২২ বছর বয়সী তরুণ। সর্বশেষ পাঁচ ওয়ানডেতে আফিফের এটা দ্বিতীয় অর্ধশতক। শেষ পর্যন্ত কাগিসো রাবাদাকে হাঁকাতে গিয়ে আউট হয়েছেন ৯ চারে ৭২ রান করে।
গত ফেব্রুয়ারিতে এই মিরাজকে নিয়ে আরেকটি প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখেছিলেন আফিফ। ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ২১৫ রানের জবাব দিতে নেমে ৪৫ রানে ছয় উইকেট হারিয়েছিল বাংলাদেশ। তারপর আফিফ এবং মিরাজ সপ্তম উইকেট জুটিতে অপরাজিত ১৭৪ রান তুলে বাংলাদেশকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন। আফিফ অপরাজিত ছিলেন ৯৩ রানে, মিরাজ ৮১ রানে।