Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের জন্য এবার বড় সুযোগ


৩১ মার্চ ২০২২ ১২:২২

এতোদিন দক্ষিণ আফ্রিকা সফর বাংলাদেশের জন্য ছিল শুধুই হতাশার। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে সব ফরম্যাট মিলিয়ে ১৯ ম্যাচ খেলে একটিতেও জিতেনি বাংলাদেশ। এবার সেই বন্ধত্ব ঘুচেছে ভালোভাবেই। কদিন আগে তামিম ইকবালের নেতৃত্বে দক্ষিণ আফ্রিকায় তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজই (২-১) জিতল টাইগাররা। অবিস্মরণীয় এই জয়ে চাঙ্গা বাংলাদেশের সামনে এখন টেস্টের চ্যালেঞ্জ। আজ থেকে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পর টেস্ট সিরিজ নিয়েও স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ।

বিজ্ঞাপন

স্বপ্ন দেখার কিছু কারণও আছে। দক্ষিণ আফ্রিকার কন্ডিশনে টেস্ট জিততে হলে পেস বোলিং ডিপার্টমেন্টকে বড় ভূমিকা রাখতেই হয়। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের পেস ডিপার্টমেন্ট আছে দুর্দান্ত ফর্মে। বছরের শুরুতে নিউজিল্যান্ডে গিয়ে টেস্ট জয়ের ইতিহাস গড়াতে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন ইবাদত হোসেন, তাসকিন আহমেদরা। তাসকিন-শরিফুলরা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজেও দেখিয়ে দিয়েছেন সেখানেও প্রস্তুত আছেন তারা। বেশ কয়েকজন ব্যাটারও দারুণ ফর্মে আছেন।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, কদিন আগেই প্রথমবার দক্ষিণ আফ্রিকায় একটা সিরিজ জয়ে আত্মবিশ্বাসে টইটুম্বর বাংলাদেশ। তাছাড়া আইপিএল খেলতে যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার বেশ কয়েকজন তারকা ক্রিকেটার খেলছেন না বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ। টেস্ট সিরিজ শুরু হওয়ার আগেই আইপিএল খেলতে দক্ষিণ আফ্রিকা ছেড়েছেন কাগিসো রাবাদা, লুঙ্গি এনগিডি, মার্কো ইয়ানসেন ফন ডার ডুসেন, এনরিক নরিকয়ে, এইডেন মার্করামের মতো তারকারা। কুইন্টন ডি কক কদিন আগে টেস্টই ছেড়ে দিয়েছেন।

দক্ষিণ আফ্রিকা দলে এখন অভিজ্ঞ বলতে কেবল অধিনায়ক ডিন এলগার, টেম্বা বাভুমা ও কেশভ মহারাজ। তারুণ্য নির্ভর দলে এখনো অভিষেক হয়নি এমন খেলোয়াড় আছেন চার জন। দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোয়াডে থাকা ক্রিকেটারদের মোট টেস্ট খেলার সংখ্যা ২০৬। এর মধ্যে বাভুমা, এলগার ও মহারাজ মিলেই খেলেছেন ১৬৩ টেস্ট! অপর দিকে বাংলাদেশের স্কোয়াডে থাকা ক্রিকেটারদের টেস্ট খেলার সংখ্যা ৩৬২। অভিজ্ঞতায় তাই অনেকটা এগিয়ে বাংলাদেশ।

এতো কিছু অনুকূলতার মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের জন্য এবার বড় সুযোগ দেখা হচ্ছে। সারাবাংলার সঙ্গে আলাপকালে সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট যেমনটি বলছিলেন, ‘অবশ্যই বড় একটা সুযোগ আমাদের জন্য। টেস্ট ক্রিকেট অভিজ্ঞতা কিন্তু বড় একটা ভুমিকা রাখে। আইপিএল খেলতে তাদের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার টেস্ট সিরিজটা খেলছে না। তাদের জায়গায় তরুণরা আসবে। তরুণরাও নিশ্চয় ভালোই হবে। তবে অভিজ্ঞতায় তারা থাকবে পিছিয়ে। এই সুবিধাটা বাংলাদেশকে কাজে লাগাতে হবে।’

ওয়ানডে সিরিজের মতো খেলতে পারলে বাংলাদেশের জন্য সিরিজ জয়ও সম্ভব বলছেন পাইলট। সাবেক অধিনায়ক বলেন, ‘বাংলাদেশ ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে এটাও বড় ভূমিকা রাখতে পারে। কারণ দক্ষিণ আফ্রিকায় যে ম্যাচ জেতা যায় সেটা আমরা হয়তো বিশ্বাস করতাম না। এখন আমাদের সেই ভয়টা কেটে গেছে। ওয়ানডেতে আমরা যেমন সব ডিপার্টমেন্টে ভালো খেললাম এখানেও যদি সেই ধারাটা অব্যাহত রাখতে পারি তাহলে আমার মনে হয় ম্যাচ বা সিরিজ জেতা বাংলাদেশের জন্য অসম্ভব নয়।’

দেশের ক্রিকেটের পরিচিত কোচ নাজমুল আবেদিন ফাহিমেরও বিশ্বাস এই যাত্রায় টেস্ট জেতার মতো সামর্থ আছে বাংলাদেশের। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘না অবশ্যই অন্যান্য সময়ের তুলনায় এবার আমরা খুব ভালো অবস্থানে আছি। তাতে কোনও সন্দেহ নেই। আমরা ওয়ানডে সিরিজটা জিতলাম, নিউজিল্যান্ডে টেস্ট জিতে এলাম। পাশাপাশি আমাদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ভালো ফর্মে আছে। আমি যদি ব্যাটারদের কথা বলি- তামিম ইকবাল, লিটন দাস। দু-তিনজন ভালো ফর্মে আছে। বোলাররা ভালো ফর্মে আছে। এই ধরনের কন্ডিশনে জিততে পেস বোলারদের ভালো পারফর্ম করতে হয়। আমাদের এই মুহূর্তে পেস ডিপার্টমেন্ট ভালো ফর্মে আছে। আমরা ইবাদতকে দেখলাম নিউজিল্যান্ডে অসাধারণ বোলিং করতে। এখানে (দক্ষিণ আফ্রিকায়) দেখলাম তাসকিন, শরিফুলকে। সব মিলিয়ে আমাদের ভালো একটা সেটআপ আছে। সব কিছু মিলিয়েই আমার মনে হয় এই প্রথম আমরা দক্ষিণ আফ্রিকার মতো একটা জায়গায় ভালো অবস্থানে আছি। আশা করতে পারছি যে আমরা টেস্ট জিততেও পারি। তবে হ্যাঁ, ওয়ানডে ও টেস্ট কিন্তু অনেকটাই ভিন্ন।’

নাজমুল আবেদিন ফাহিম

দক্ষিণ আফ্রিকার বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারের আইপিএল খেলতে যাওয়ার প্রসঙ্গ উঠলে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আইপিএলের কারণে ওদের কিছু খেলোয়াড়কে ওরা পাবে না। তবে যারা আসবে তারাও নিশ্চয় ভালোই হবে। তবে হ্যাঁ অভিজ্ঞতা বড় একটা বিষয়। নতুনদের কেউ কেউ হয়তো আন্তর্জাতিক মানের স্পিনে অভ্যস্ত নয়। সেটা আমাদের জন্য ভালো হবে। আমি মনে করি, আমাদের চেষ্টা করতে হবে নিজেদের সেরা ক্রিকেটাটা খেলা।’

দক্ষিণ আফ্রিকায় এখন পর্যন্ত ৬টি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। তার মধ্যে ইনিংস ব্যবধানে হারতে হয়েছে ৫টিতে। অন্যটিতে ইনিংস হার এড়ানো গেলেও হারতে হয়েছে ৩৩৩ রানের বড় ব্যবধানে। এবার সেসব আক্ষেপ ঘুচানোর পালা।

টেস্ট সিরিজ বাংলাদেশ- দক্ষিণ আফ্রিকা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর