অ্যাটলেটিকোর মাঠে ড্র করে সেমিতে ম্যানসিটি
১৪ এপ্রিল ২০২২ ০৩:০৭
ঘরের মাঠ ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটিয়ানোতে ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে গেল অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। প্রথম লেগে কেভিন ডি ব্রুইনের করা একমাত্র গোলে ১-০ গোলের জয়টাই ম্যানচেস্টার সিটিকে এনে দিল সেমিফাইনালের টিকিট। অ্যাটলেটিকোর মাঠে ম্যাচের শেষ দিকে এসে নাটকীয়তার দেখা মেলে। দুই দলের খেলোয়াড়দের ধস্তাধস্তিতে কিছু সময় খেলা বন্ধ থাকে। এরপর খেলা মাঠে গড়ালেও অ্যাটলেটিকো গোলের দেখা না পাওয়ায় ম্যাচ শেষ হয় গোলশূন্য ড্র’তে।
ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগের খেলার ধরন নিয়ে বেশ সমালোচিত হয়েছিল অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। দলের ১১ জন খেলোয়াড়ই গোটা ৯০ মিনিট ধরে দূর্গ বানিয়ে রেখেছিল ডি-বক্সকে। শেষ পর্যন্ত যদিও কেভিন ডি ব্রুইন ভেঙেছিলেন সেই দূর্গ। তবে ফিরতি লেগ অ্যাটলেটিকোর ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত হওয়ায় স্বপ্ন দেখছিল ডিয়েগো সিমিওনের দল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঘরের মাঠে সিটির সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে কোয়ার্টারেই থামতে হয়েছে অ্যাটলেটিকোকে।
গোটা ম্যাচ জুড়ে ৬০ শতাংশ বল দখলে রেখে খেলে সিটি। তবে ৪০ শতাংশ বল দখলে রাখলেও আক্রমণ করেছে অ্যাটেলেটিকো। জাও ফেলিক্সরা সহজ কিছু সুযোগ হাতছাড়া না করলে খেলার ফলাফল ভিন্ন কিছু হলেও হতে পারত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ম্যানসিটি ঘটতে দেয়নি কোনো অঘটন। ভাগ্য সহায় ছিল না ম্যানসিটিরও।
প্রথমার্ধের শুরুতেই আক্রমণাত্মক খেলতে শুরু করে সিটিজেনরা। ১০ মিনিটের মাথায় গুন্দোয়ানের হেড গোলপোস্টের সামান্য ওপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। এরপর ২৭ মিনিটের মাথায় কেভিন ডি ব্রুইনের জোরালো শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। খেলার সময় আধা ঘণ্টা স্পর্শ করতে সবচেয়ে বড় সুযোগ হাতছাড়া হয় সিটিজেনদের। ফিল ফোডে এর দুর্দান্ত এক পাস ধরে ডি-বক্সে ঢুকে হেড করেন গুন্দোয়ান কিন্তু তার হেড করা বল গোলপোস্টে লেগে বাইরে বেরিয়ে যায়।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে থাকে অ্যাটলেটিকো। অ্যান্তোনিও গ্রিজম্যান, জাও ফেলিক্সরা আক্রমণের ধার বাড়াতে থাকে। ৫৭ মিনিটে ফেলিক্সের কাছ থেকে পাওয়া দারুণ এক পাস পেয়েও লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন গ্রিজম্যান। ৭০ মিনিটের মাথায় ডি পল, ফেলিক্স আর কোরেয়া মিলে দুর্দান্ত এক আক্রমণ সাঁজালেও শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যভ্রষ্ট শটে হতাশ করেন ডি পল।
এরপর ম্যাচের শেষ দিকে এসে দুই পক্ষ জড়িয়ে পড়ে হাতাহাতিতে। ম্যাচের ৯০ মিনিটের মাথায় বল নিয়ে আক্রমণে উঠছিলেন ফোডেন বাঁ দিক দিয়ে। সেখান চার্জ করে বল জিতে নেন ফিলিপে কিন্তু তার ওপর দিয়ে লাফ দিয়ে যাওয়ার সময় ফিলিপের পা লাগে ফোডের পায়ের পেছনের অংশে। তখনই পা ধরে গড়াগড়ি করতে থাকেন ফোডেন। তা দেখে অ্যাটলেটিকো ডিফেন্ডার স্যাভিচ এগিয়ে এসে ফোডেনের জার্সি টেনে ধরে তাকে মাঠের বাইরে নিয়ে যান। আর এতেই উত্তেজিত হয়ে ওঠে সিটির খেলোয়াড়রা, তেড়ে যায় অ্যাটলেটিকোর খেলোয়াড়দের দিকে। শুরু হয় দুই দলের ধস্তাধস্তি।
রেফারি এবং ম্যাচ অফিসিয়ালরা মিনিট তিনেক পরে দুই দলের খেলোয়াড়দের ঠান্ডা করতে সমর্থ হয়। এরপর হলুদ কার্ড দেখানো হয় স্যাভিচকে আর ফোডেনকে ফাউল করায় দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় ফিলিপেকে। দুই দলের এমন ধস্তাধস্তির পরে রেফারি ৯ মিনিট অতিরিক্ত সময় যোগ করেন। যদিও শেষ পর্যন্ত সেই ৯ মিনিটেও গোলের দেখা পায়নি দুই দলের কেউই। এতেই ম্যাচ শেষ হয় গোলশূন্যতে আর ম্যানচেস্টার সিটি দুই লেগ মিলিয়ে ১-০ গোলের ব্যবধানে জিতে টিকিট কাটে সেমিফাইনালের।
সারাবাংলা/এসএস