‘শুধু খেলোয়াড়দের দোষ দেওয়া ঠিক হবে না’
২৮ জুন ২০২২ ১৬:০২
টেস্টে বাংলাদেশের কিছুতেই যেন কিছু হচ্ছে না! ব্যাটাররা বারাবর আউট হচ্ছেন ভুল শট খেলে। বোলাররা ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারছেন না। মাঝে মধ্যে ভালো পারফর্ম দেখা যাচ্ছে বটে, কিন্তু সেটা পাঁচ দিনের ম্যাচ জিততে যথেষ্ট হচ্ছে না মোটেও। সদ্য সমাপ্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজেও একতরফা হেরেছে বাংলাদেশ। সিরিজ শেষে টেস্ট অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বললেন, এক্ষেত্রে শুধু খেলোয়াড়দের দোষ দিলে চলবে না।
কিছুদিন যাবত বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেট সংস্কৃতিতে ঘাটতির কথা বলে আসছেন হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। সাকিবও যেন সেটিই বলতে চাইলেন।
সেন্ট লুসিয়ায় বাংলাদেশকে ১০ উইকেটে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অ্যান্টিগায় ক্যারিবিয়ানরা জিতেছিল ৭ উইকেটে। সেন্ট লুসিয়ায় ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সাকিব আল হাসান বলছিলেন, ‘খেলোয়াড়দের এখানে খুব বেশি দোষ দেওয়াটা ঠিক হবে না। শুধু খেলোয়াড়দেরই দোষ দিলে হবে না। আমাদের দেশের সিস্টেমটাই কিন্তু এমন। আপনি কবে দেখছেন বাংলাদেশে ৩০ হাজার দর্শক টেস্ট ম্যাচ দেখছে বা ২৫ হাজার দর্শক মাঠে এসেছে টেস্ট দেখতে?’
ইংল্যান্ডের উদাহরণ টেনেছেন সাকিব। বলেছেন এগুতে হবে পরিকল্পনা করে, ‘ইংল্যান্ডে তো প্রতি ম্যাচে (টেস্ট) এরকম দর্শক থাকে। টেস্টের সংস্কৃতিটাই আমাদের দেশে ছিল না কখনো, এখনো নেই। টেস্ট সংস্কৃতি নেই বলে যে হবেও না, সেটাও কিন্তু নয়। এই জিনিসটা পরিবর্তন করাই আমাদের বড় দায়িত্ব। সবাই মিলে যদি একসঙ্গে পরিকল্পনা করে আগানো যায় তাহলেই হয়তো কিছু সম্ভব হবে। নইলে আসলে খুব বেশি দূর আগানো সম্ভব হবে না। কারণ আমাদের টেস্টের সংস্কৃতিই নেই।’
সাকিবের মতে, টেস্ট ক্রিকেটকে সেভাবে মূল্যায়নই করা হয় না। বলেছেন, ‘আমরা যে টেস্ট ক্রিকেটকে খুব বেশি মূল্যায়ন করি, তা নয়। হ্যাঁ, হতে পারে আমরা ফলাফল ভালো করিনি, এ কারণে মূল্যায়নও হয়নি। তবে একটার সঙ্গে আরেকটার সম্পর্ক আছে। একটার সঙ্গে আরেকটাকে সম্পৃক্ত করতে হবে। তাহলেই ভালো কিছু সম্ভব। এই বিরতির মধ্যে যারা টেস্ট খেলতে আগ্রহী তারা হয়তো যার যার জায়গা থেকে উন্নতি করার চেষ্টা করবে। উন্নতি ছাড়া আর কোনো পথ নেই। আমাদের এমন কোনো সেটআপও নেই যাদের আনলে আমরা টেস্টে ভালো করে ফেলব। যারা আছি বা বাইরে আর যে দুই–চারজন আছে, সবাই মিলে যদি একসঙ্গে পরিকল্পনা করে আগাতে পারি তাহলেই ভালো কিছু সম্ভব হবে। তা না হলে এতদিন ধরে যা হয়ে আসছে তা থেকে খুব বেশি একটা পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আমাদের নিজেদের চিন্তার পরিবর্তনাটা জরুরি। সবাই মিলে পরিকল্পনা করতে হবে। সবাই মিলে বসে যদি আমরা একটা পরিকল্পনা ধরে আগাই তাহলে অন্তত এক–দেড় বছর পর ধারাবাহিক পারফর্ম করা সম্ভব হবে।’
তবে পরিকল্পনা করা মাত্রই যে টেস্ট জেতা শুরু করবে দল সেটা বলছেন না সাকিব। তার মতে, আগে দেশের মাটিতে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে হবে, ‘আমি বলব না টেস্ট জিততেই হবে। বিদেশে সব দলই আন্ডারডগ থাকে। নিউজিল্যান্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়ন দল। ওরাও যখন বাইরে খেলতে যায়, হেরে যায়। অন্য দেশে গেলে নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ভারত সব দলই হারে। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে আমরা যেন ঘরের মাঠে না হারি। হয় ড্র করব, অথবা জিতব। তখনও হয়তো আমরা নিয়মিত নাও জিততে পারি। তবে অন্তত প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ ক্রিকেটটা খেলব। দেশের সিরিজগুলোতে খুব ভালো পরিকল্পনা করে খেলাটা তাই খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যেন জিতি, না জিতলেও যেন ড্র ছাড়া অন্য কোনো ফল না হয়। হোম সিরিজে যেন আমরা না হারি, এটা নিশ্চিত করা জরুরি।’
সারাবাংলা/এসএইচএস