সুপার ফোরে পাকিস্তানের বিপক্ষে চমকে ওঠা শ্রীলংক ফাইনালে শুরুতেই পড়ে বিপর্যয়ে। তবে মিডল অর্ডার সেই বিপর্যয় সামাল দিয়ে লড়াই চালিয়ে যায়। ভানুকা রাজপাকশের দুর্দান্ত এক অর্ধশতকে শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৭০ রান তোলে শ্রীলংকা।
এশিয়া কাপের ফাইনালে পাকিস্তানি গতিতে রীতিমতো ধসে পড়ে শ্রীলংকার ব্যাটিং অর্ডার। টস জিতে আগে বোলিং করতে নেমে শুরু থেকেই গতির ঝড় তুলেছেন পাকিস্তানি পেসাররা। পাওয়ার প্লের পর স্পিন আক্রমণও কার্যকর। তাতেই মাত্র ৫৮ রান তুলতেই সাজঘরে পাঁচ ব্যাটার। যার মধ্যে তিনটি পেসারদের আর দুটি যায় স্পিনারদের ঝুলিতে।
ইনিংসের প্রথম ওভারেই কুশল মেন্ডিসের স্ট্যাম্প উড়িয়েছেন পাকিস্তানের তরুণ পেসার নাসিম শাহ। তার ঘণ্টায় ১৪২ কিলোমিটার গতিতে ভেতরে ঢোকা বলটির কোনো জবাব ছিল না মেন্ডিসের কাছে। আর তাতেই মাত্র ২ রানে লংকানরা হারায় প্রথম উইকেট। মেন্ডি প্রথম বলেই ফেরেন শূন্য রানে।
দ্বিতীয় উইকেটে ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে সঙ্গে নিয়ে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন পাথুম নিসাঙ্কা। তবে জুটি বড় হতে দেননি হারিস রউফ। একাদশে দেড়শ কিলোমিটার গতিতে বল করতে থাকা রউফ চতুর্থ ওভারের দ্বিতীয় বলে নিসাঙ্কাকে বাবর আজমের তালুবন্দি করান। লংকানরা ২৩ রানে হারায় দ্বিতীয় উইকেট।
এরপর চারে ব্যাট করতে নামা দানুস্কা গুনাথিলাকাও টিকতে পারেননি। পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে রউফের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনিও। এতেই ৩৬ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় লংকানরা। এরপরই লংকানদের হাল ধরা ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকেও ফেরান ইফতিখার আহমেদ। ২১ বলে ২৮ রান করা ধনঞ্জয়া ফেরেন দলীয় ৫৩ রানে আর অধিনায়ক দাসুন শানাকা ৩ বলে ২ রান করে যখন ফিরছেন লংকানরা তখন ঘোর বিপদে। ৮.৫ ওভারে স্কোরবোর্ডে ৫৮ রান আর সেই সঙ্গে হারাতে হয়েছে পাঁচটি উইকেট।
তবে ষষ্ঠ উইকেটেই ম্যাচে ফেরে লংকানরা। ভানুকা রাজাপাকশে আর উইনিন্দু হাসারাঙ্গার দুর্দান্ত এক জুটিতে লড়াইয়ে ফেরে শ্রীলংকা। মাত্র ৩৬ বলে ৫৮ রানের জুটি গড়েন তারা দুইজন। দলকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেওয়ার বড় কৃতিত্বও বর্তাবে এই দুইয়ের ঘাড়েই।
কিন্তু শেষ দিকে দ্রুত রান তোলার নেশায় রউফের বল না বুঝেই স্কয়ার ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে মোহাম্মদ রিজওয়ানের গ্লভসবন্দি হন হাসারাঙ্গা। ১৪.৫ ওভারে দলীয় ১১৬ রানে লংকানরা হারায় ষষ্ঠ উইকেট। আউট হওয়ার আগে হাসারাঙ্গা ২১ বলে ৩৬ রান করেন।
উইকেটের এক প্রান্ত আকড়ে রেখে নিজের অর্ধশতক তুলে নেন ভানুকা রাজাপাকশে। ইনিংসের ১৮তম ওভারের শেষ বলে এক রান নিয়ে ৩৫ বলে পূর্ণ করেন ফিফটি। শেষে এসে তাকে দারুণ সঙ্গ দেন চামিকা করুনারত্নে। ৭ম উইকেটে রাজাপাকশে আর করুনারত্নে মিলে ৩১ বলে ৫১ রানের জুটি গড়েন । রাজাপাকশে ৪৫ বলে ৭১ রানে অপরাজিত থাকেন। ৬টি চার আর তিনটি ছয়ে ইনিংস সাজান তিনি। আর ১৪ বলে ১৪ রান করেন চামিকা করুনারত্নে।
তাতেই লংকানদের সংগ্রহ নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৭০ রান। পাকিস্তানের হয়ে তিনটি উইকেট নেন হারিস রউফ। আর একটি করে উইকেট নেন নাসিম শাহ, শাদাব খান এবং ইফতিখার আহমেদ।