শঙ্কা উড়িয়ে চ্যাম্পিয়নের মতোই শুরু ফ্রান্সের
২৩ নভেম্বর ২০২২ ০৩:০৪
বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকেই একের পর এক ইনজুরিতে দলের প্রধান একাদশের খেলোয়াড় ছিটকে গেছেন। প্রেসনেল কিমপেম্বে, ক্রিস্তোফার এনকুনকু এবং করিম বেনজেমা ছিটকে গেছেন ইনজুরিতে পড়ে। আবার মাথার ওপর চাপ গত তিন বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়নদের গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেওয়ার। আর এসব চাপের কারণেই কি না অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের শুরুতেই গোল হজম করে বসে ফ্রান্স। তবে এরপরেই নিজেদের ফিরে পায় চ্যাম্পিয়নরা। কিলিয়ান এমবাপে, অলিভার জিরুডদের সামনে পাত্তায় পায়নি অস্ট্রেলিয়া। শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়নদের চ্যাম্পিয়ন পারফরম্যান্সে ৪-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ফ্রান্স।
শুরুতে পিছিয়ে পড়া ফ্রান্সকে ম্যাচে সমতায় ফেরান র্যাবিওট। এরপর অলিভার জিরুড লিড এনে দেন ফ্রান্সকে। আর দ্বিতীয়ার্ধে কিলিয়ান এমবাপে ও জিরুড ম্যাচে নিজেদের দ্বিতীয় গোল করে ব্যবধান ৪-১ করেন। এদিন ফ্রেঞ্চ কিংবদন্তি স্ট্রাইকার থিয়েরি হেনরির ৫১ গোলের রেকর্ড ছুঁয়েছেন জিরুড।
ম্যাচের তখন কেবল ৯ মিনিট। এক সঙ্গে দুটি দুঃসংবাদ ফ্রান্সের। ম্যাচ শুরু হতে না হতেই ক্রেইগ গুডউইনের গোলে এগিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচে পিছিয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বড় দুঃসংবাদ লেফট ফুলব্যাক লুকাস হার্নান্দেজ হাটুতে চোট পান। অস্ট্রেলিয়ার গোলের যোগানদাতা ম্যাথিউ লেকিকে ঠেকাতে গিয়ে হাটুতে চোট পান লুকাস হার্নান্দেজ। চোট পেয়ে আর খেলা চালিয়ে যেতে পারেননি তিনি, ম্যাচের ১২তম মিনিটেই বদলি করতে হয় তাকে। লুকাসের পরিবর্তে মাঠে নামেন তারই ভাই থিও হার্নান্দেজ।
ম্যাচে কেবল ওই শুরুর ১০ মিনিটই এগিয়ে থাকে অস্ট্রেলিয়া। এরপর গোটা ম্যাচ জুড়ে ফ্রান্সের রাজত্ব। গোল হজম করার পর মরিয়া হয়ে সমতাসূচক গোল খুঁজতে থাকে কিলিয়ান এমবাপেরা। অপেক্ষার অবসান ঘটে ম্যাচের ২৭তম মিনিটে এসে। বদলি হিসেবে নামা থিও হার্নান্দেজের ক্রস থেকে বক্সে বল পেয়ে ফ্রান্সকে সমতায় ফেরান অ্যাড্রিয়েন র্যাবিওট।
সমতায় ফেরার মিনিট পাঁচেক পরে ফ্রান্সকে লিড এনে দেন অলিভার জিরুড। যার খেলার কথাই ছিল না ফ্রান্সের মূল একাদশে। ব্যালন ডি’অর জয়ী করিম বেনজেমাই ছিলেন ফ্রান্সের প্রধান স্ট্রাইকার। তবে ইনজুরির কারণে বেনজেমা বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ায় মূল একাদশে জায়গা হয় জিরুডের। আর জায়গা পেয়েই গোল করে ফ্রান্সকে এগিয়ে নেন। সেই সঙ্গে পূর্ণ করেন জাতীয় দলের হয়ে গোলের অর্ধশতক।
এগিয়ে যাওয়ার মিনিট চারেক পরে ব্যবধান বাড়ানোর সুবর্ণ সুযোগ আসে জিরুডের সামনে। ৩৬তম মিনিটে ডান দিক থেকে উসমান দেম্বেলের দুর্দান্ত এক ক্রস আসে ডি বক্সে, সেখান থেকে বল পেয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন জিরুড। ৪৩তম মিনিটে এসে ডি বক্সের ভেতর বল পেয়েও জায়গা করতে না পারায় ব্যাকহিলে গ্রিজম্যানকে পাস দেন কিলিয়ান এমবাপে। বল পেয়ে গ্রিজম্যান শট নিলেও অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে ব্যবধান বাড়েনি ফ্রান্সের। প্রথমার্ধের শেষ সময়ে এসে গ্রিজম্যান ডি বক্সে এমবাপে উদ্দেশ্যে দারুণ এক বল বাড়ান। তবে গোলমুখে বল পেয়েও তা গোলপোস্টের ওপর দিয়ে বাইরে পাঠিয়ে হতাশ করে এমবাপে।
দ্বিতীয়ার্ধেও একের পর এক আক্রমণ করে ব্যবধান বাড়ানোর উপায় খুঁজছিলেন এমবাপে-গ্রিজম্যানরা। অবশেষে ম্যাচের ৬৮তম মিনিটে এসে স্কোরশিটে নাম লেখান কিলিয়ান এমবাপে। ডান দিক থেকে দুই ডিফেন্ডারের মধ্য থেকে ক্রস করে ডি বক্সের ভেতর এমবাপে খুঁজে নেন উসমান দেম্বেলে। আর বল পেয়ে লাফিয়ে উঠে হেড করে বল জালে জড়িয়ে ব্যবধান ৩-১ করেন এমবাপে।
এমবাপের গোলের মিনিট তিনেক পরে নিজের ৫১তম গোল করে ফ্রান্সের জয় এক প্রকার নিশ্চিত করেন জিরুড। অস্ট্রেলিয়ার ডিফেন্ডারদের নাচিয়ে দারুণ এক বল ক্রস করেন এমবাপে। ডি বক্সে থাকা জিরুড হেড করে বল জালে জড়ান। আর তাতেই থিয়েরি হেনরির করা ৫১ গোলের রেকর্ডে ভাগ বসান জিরুড। এতেই ফ্রান্স এগিয়ে যায় ৪-১ গোলের ব্যবধানে।
শেষ দিকে আরও বেশ কিছু আক্রমণ করে ফ্রান্স। তবে অস্ট্রেলিয়া কোনো ভাবে রুখে রাখে এমবাপে, গ্রিজম্যানদের। ফ্রান্সকে পেতে দেয়নি তাদের পঞ্চম গোলটি।তবে জিরুডের জোড়া আর এমবাপে ও র্যাবিওটের একটি করে গোলে ৪-১ ব্যবধানের জয় দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স।
সারাবাংলা/এসএস
অলিভার জিরুড কাতার বিশ্বকাপ কিলিয়ান এমবাপে ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২২ ফ্রান্স বনাম অস্ট্রেলিয়া