রয়ের শতক, টাইগারদের হতশ্রী বোলিংয়ে ইংল্যান্ডের বড় পুঁজি
৩ মার্চ ২০২৩ ১৫:৪৯
মিরপুরে স্পিন দিয়ে ইংল্যান্ডকে কাবু করতে চেয়েছিল বাংলাদেশ। তাই তো প্রথম ম্যাচের ন্যয় দ্বিতীয় ম্যাচেও দুই পেসারের সঙ্গে ছিলেন তিন স্পিনার। শুরুর দিকে স্পিনাররা দুর্দান্ত বোলিং করলেও পরবর্তীতে যেন খেই হারিয়ে ফেলে। টাইগারদের হতশ্রী বোলিংয়ের সঙ্গে জেসন রয়ের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩২৬ রানের।
সিরিজ বাঁচানোর লড়াইয়ে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল। অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে খেলতে নামা বাংলাদেশের বিপক্ষে দুটি পরিবর্তন আনে ইংল্যান্ড। টাইগারদের বিপক্ষে শুরুটা বেশ দেখে শুনে করে ইংলিশরা। তবে ইংলিশ দুই ওপেনারকে থিতু হতে দেননি টাইগার পেসার তাসকিন আহমেদ।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ইংলিশ দুই ওপেনার জেসন রয় এবং ফিল্ট সল্ট। টাইগার অধিনায়ক তামিম ইকবাল শুরু থেকে দুই স্পিনার সাকিব আল হাসান এবং তাইজুল ইসলামকে ব্যবহার করেন। এরপর ইনিংসের ৫ম ওভারে বোলিংয়ে আনেন তাসকিন আহমেদকে।
বল হাতে এসে টাইগারদের ব্রেকথ্রু এনে দিতে বেশি সময় নেননি তাসকিন আহমেদ। নিজের দ্বিতীয় ওভারে আর ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারেই তুলে নেন ওপেনার ফিল্ট সল্টকে। ওভারের তৃতীয় বলটি অফস্ট্যাম্পের বাইরের বলটি কভার পয়েন্ট দিয়ে পাঞ্চ করে শট খেলতে চেয়েছিলেন সল্ট। তবে ব্যাটের কোনায় লেগে তা স্লিপে থাকা নাজমুল হোসেন শান্তর তালুতে বন্দি হয়। আর বাংলাদেশ পেয়ে যায় প্রথম উইকেটের দেখা।
ফিল্ট সল্ট ১৫ বলে একটি বাউন্ডারিতে ৭ রান করে যখন ফিরছেন ইংলিশদের স্কোরবোর্ডে রান তখন মাত্র ২৫। এরপর দাভিদ মালানের সঙ্গে জুটি গড়েন জেসন রয়। তবে পরপর দুটি উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া ইংলিশদের হাল ধরে রাখেন জেসন রয়। তবে দাভিদ মালানকে বেশি সময় টিকতে দেননি মেহেদি হাসান মিরাজ। ১৬তম ওভারে মিরাজের করা বল স্টাম্পে পড়ে স্পিন করে বেরিয়ে বল ব্যাটে খেলতে পারেননি মালান। ব্যাটের কানা এড়িয়ে আঘাত হানে প্যাডে। আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দিলে ফিরে যান রিভিউ না নিয়েই।
ফেরার আগে ১৯ বলে ১১ রান করেন মালান। বাঁহাতি এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের বিদায়ে ভাঙে ৫৪ বল স্থায়ী ৫৮ রানের জুটি। ১৬ ওভারে ইংল্যান্ডের রান ২ উইকেটে ৮৫। ক্রিজে জেসন রয়ের সঙ্গী জেমস ভিন্স। তবে বেশি সময় টেকেননি ভিন্সও। তাইজুল ইসলামের করা বল খেলতেই পারেননি ভিন্স। স্পিন করে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ছুঁয়ে যায় তাইর ব্যাটের কানা। উইকেটের পেছনে বাকিটা সারেন মুশফিকুর রহিম। ভাঙে ২৮ বল স্থায়ী ১৩ রানের জুটি। ১৬ বলে ভিন্স করেন ৫ রান।
দ্রুত দুই উইকেট হারানো ইংলিশদের হাল ধরে রাখেন জেসন রয়। তুলে নেন অর্ধশতকও। ক্যারিয়ারের ২২তম ফিফটি ছুঁতে ৫৪ বল খেলেছেন রয়। মেরেছেন ৭টি চার। অর্ধশতক তুলে নিয়েই ক্ষান্ত হননি রয়। ব্যাট ছুটিয়েছেন শতকের দিকে। অধিনায়ক জস বাটলারকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই করেছেন বড় সংগ্রহের দিকে। এরপর তুলে নিয়েছেন নিজের শতকও।
৩১তম ওভারের ৫ম বলে মোস্তাফিজুর রহমানের বলে সিঙ্গেল নিয়ে তুলে নেন নিজের শতক। ১০৪ বলে ১২টি চার আর একটি ছক্কায় শতক পূর্ণ করেন জেসন রয়। বাটলার-রয়ের জুটির সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ৬৩ বলে ৬৩।
সেঞ্চুরি পূর্ণ করেই ঝড়ো ব্যাটিং শুরু করেন রয়। একের পর এক বল বাউন্ডারিতে আছড়ে ফেলতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত সাকিব আল হাসানের বলে এলবিডাব্লিউ হয়ে ফেরেন রয়। তবে ফেরার আগে ১২৪ বলে ১৮টি চার আর একটি ছক্কায় ১৩২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন তিনি। পরের ওভারেই উইল জ্যাকসকে তুলে নেন তাসকিন আহমেদ। ২০৮ রানে পাঁচ উইকেট হারায় ইংলিশরা। এরপর মইন আলীকে নিয়ে জুটি গড়েন বাটলার। ৫০ বলে পূর্ণ করেন অর্ধশতক। এরপর ৬৪ বলে ৭৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে ফেরেন তিনি।
শেষ দিকে এসে মইন আলী এবং স্যাম কারান ঝড়ো ইনিংস খেললে ইংলিশদের সংগ্রহ ছাড়ায় ৩০০। এরপর নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট ৩২৬ রানে থামে ইংলিশদের ইনিংস। মইন ৩৫ বলে ৪২ করে ফেরেন আর কারান ১৯ বলে ৩৩ রানে অপরাজিত থাকেন। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ। আর দুটি উইকেট নেন মেহেদি হাসান মিরাজ। একটি করে উইকেট নেন সাকিব আল হাসান এবং তাইজুল ইসলাম।
সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড:
ইংল্যান্ড: ৩২৬/৭; ৫০ ওভার; (রয় ১৩২, সল্ট ৭, মালান ১১, ভিন্স ৫, বাটলার ৭৬, জ্যাকস ১, মইন ৪২, কারান ৩৩*, রশিদ ৬*); (সাকিব ১০-০-৬৪-১, তাইজুল ১০-৫৮-১, তাসকিন ১০-০-৬৬-৩, মোস্তাফিজুর ১০-০-৬৩-০, মিরাজ ১০-৭৩-২)।
সারাবাংলা/এসএস
জস বাটলার জেসন রয় টপ নিউজ দ্বিতীয় ওয়ানডে বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ড