Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আফগানদের গুড়িয়ে বাংলাদেশের রেকর্ড জয়

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট
১৭ জুন ২০২৩ ১২:২৬

আফগানিস্তানের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে বাংলাদেশের দাপট চলছিল শুরু থেকেই। গত তিন দিনের মতো আজ চতুর্থ দিনেও প্রতিপক্ষকে দুমড়ে মুচড়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। চার দিন ধরে ব্যাট-বলের দাপটে মিরপুর টেস্টে রেকর্ড জয়ই পেয়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে আফগানিস্তানকে ১১৫ রানেই গুটিয়ে দিয়ে ৫৪৬ রানের বড় ব্যবধানে জিতেছে বাংলাদেশ।

রানের হিসেবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয় এটি। এর আগে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জয় ছিল ২২৬ রানের। ২০০৫ সালে চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওই রেকর্ড গড়েছিল বাংলাদেশ। আজআফগানদের হারালো তার চেয়েও অনেক বড় ব্যবধানে।

বিজ্ঞাপন

নিজেদের সেরা জয়ই শুধু নয়, সব দল মিলিয়ে টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে বাংলাদেশের আজকের জয়টা তৃতীয় সর্বোচ্চ। সর্বোচ্চ দুই জয়ের রেকর্ডে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার নাম। ১৯২৮ সালে অস্ট্রেলিয়াকে ৬৭৫ রানে হারিয়েছিল ইংল্যান্ড। রানের হিসেবে টেস্টে সেটিই সর্বোচ্চ জয়। ১৯৩৪ সালে অস্ট্রেলিয়া আবার ইংল্যান্ডকে হারায় ৫৬২ রানের ব্যবধানে। এটা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জয়। তারপরেই জায়গা পেল বাংলাদেশের আজকের জয়টা।

৬১৭ রান পিছিয়ে থেকে আজ দ্বিতীয় ইনিংসে ২ উইকেটে ৪৫ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করেছিল আফগানিস্তান। দিনের শুরু থেকেই আফগান ব্যাটারদের স্রেফ নাচিয়ে ছেড়েছে বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ। বিশেষ করে তাসকিন আহমেদ। গতকাল তাসকিনের বলে আঘাত পেয়ে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন আফগান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শাহিদি। আজ আফগানিস্তানের শেষ ব্যাটার জহির খানও তাসকিনের বলে আঘাত পেয়ে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছেড়েছে। তাসকিন উইকেটও নিয়েছেন ৪টি।

বিজ্ঞাপন

তাসকিন তোপে আফগানদের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ পর্যন্ত থেমেছে ১১৫ রানে। প্রথম ইনিংসে ১৪৬ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল সফরকারীরা। অপর দিকে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে করে ৩৮২ রান। পরে ৪ উইকেটে ৪২৫ রান তুলে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। যাতে আফগানিস্তানের সামনে লিড দাঁড়িয়েছিল ৬৬১ রানে।

শনিবার (১৭ জুন) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হারের চিন্তা মাথায় নিয়েই মাঠে নেমেছিল আফগানরা। সফরকারীদের ম্যাচ জেতা বা ম্যাচ বাঁচানোর সমীকরণ ছিল সাঁতরে সাগর পারি দেওয়ার মতো কঠিন। নুন্যতম প্রতিরোধও গড়তে পারেনি আফগানিস্তান।

চতুর্থ দিনে আফগানিস্তান শিবিরে প্রথম আঘাতটা হানেন ইবাদত হোসেন। দিনের ১৫তম বলে উইকেট এনে দেন ইবাদত। গুডলেংথ থেকে খানিক লাফিয়ে উঠা বলের জবাবই দিতে পারেননি নাসির জামিল। তার ব্যাটের কানা স্পর্শ করে বল চলে যায় উইকেটরক্ষক লিটন দাসের গ্লাভসে।

খানিক বাদে আফছার জাজাইকে ফেরান শরিফুল ইসলাম। শরিফুলের বাড়তি বাউন্সের বলে এজড হয়েছেন আফছার। ক্যাচ তুলে দেন তৃতীয় স্লিপে দাঁড়ানো মেহেদি হাসান মিরাজের হাতে। কিছুক্ষণ পর আরেকটা বাড়তি বাউন্স ডেলিভারিতে অভিষিক্ত বাহির শাহকেও তৃতীয় স্লিপে ক্যাচ বানান শরিফুল।

৭৮ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় আফগানিস্তান। বাকি সময়ে শুধুই তাসকিন শো চলেছে। বাকি পাঁচ উইকেটের চারজনকেই ফিরিয়েছেন তাসকিন। শেষ ব্যাটার জহির খানকে ফিরিয়েছেন রিটায়ার্ড হার্ট করে। অর বাকিদের আউট করেছেন।

দলীয় ৯১ রানের মাথায় লাইন থেকে তাসকিনের লাফিয়ে উঠা বলে খোঁচা দিতে চেয়েছিলেন সেট ব্যাটার রহমত শাহ। বল তার ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষক লিটন দাসের গ্লাভসে। নিজের পরের ওভারে করিম জানাতকে সরাসরি বোল্ড করেছেন তাসকিন।

তারপর আফগানরা লাঞ্চের আগে নাকি পরে গুটিয়ে যায় সেটাই ছিল দেখার। তাসকিনের আগ্রসন অব্যাহত থাকল বলে লাঞ্চের আগেই গুটিয়ে গেছে আফগানিস্তান। মাঝে আমির হামজাকে ফিরিয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। তারপর আবারও তাসকিনের উদযাপন।

আফগানদের দলীয় ১১০ রানের মাথায় উমর আহমেদজাইকে ফেরান তাসকিন। গুড লেংথের বলে ড্রাইভ করেছিলেন উমর। শর্ট কাভারে লাফিয়ে দুর্দান্ত ক্যাচ লুফে নেন মুশফিকুর রহিম। সেই ওভারেই আফগানিস্তানের শেষ ব্যাটার জাহির খানকে দুবার আউট করেছিলেন তাসকিন! কিন্তু নো বলের কারণে উইকেট মিলেনি একবারও।

সেই ওভারেরই শেষ বলে তাসকিনের বাউন্স বলে হাতে আঘাত পান জাহির। পরে আর ব্যাটিং করতেই পারেননি আফগান তরুণ। যাতে শেষ পর্যন্ত ১১৫ রানে থেমে যায় আফগানিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংস।

তাসকিন ৯ ওভারে ৩৭ রানের বিনিময়ে নিয়েছেন তাসকিন। ১০ ওভারে ২৮ রান দিয়ে তিনটি উইকেট নিয়েছেন শরিফুল ইসলাম। এছাড়া মেহেদি হাসান মিরাজ ও ইবাদত হোসেন চৌধুরী একটি করে উইকেট নিয়েছেন।

সারাবাংলা/এসএইচএস

বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর