Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রাম টেস্ট: যেখানে দক্ষিণ আফ্রিকার রান উৎসব সেখানে বাংলাদেশ নাস্তানাবুদ

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট
৩০ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:০৬

চট্টগ্রাম টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে রীতিমতো অসহায় বাংলাদেশ! আগে ব্যাটিং করতে নেমে বাংলাদেশি বোলারদের নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করে ৫৭৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই পিচেই আজ শেষ বিকেলে বাংলাদেশ যখন ব্যাটিং করতে নামলেন মনে হচ্ছিল, ব্যাটিংটা বুঝি সাঁতরে সাগর পারি দেওয়ার মতো কঠিন কাজ!

শেষ বিকেল মাত্র ৯ ওভার ব্যাটিং করেছে বাংলাদেশ, তাতেই নেই ৪ উইকেট! প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার ৫৭৫ রানের জবাব দিতে নেমে ৪ উইকেটে ৩৮ রান তুলে আজ দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ এখনো ৫৩৭ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। হাতে আছে ৬ উইকেট।

বিজ্ঞাপন

দিনের খেলা শেষে ৬ রানে অপরাজিত মুমিনুল হক সৌরভ। তার সঙ্গে ৪ রানে ব্যাট করছিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।

বুধবার (৩০ অক্টোবর) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ৫৭৫ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের ইনিংস শুরু করতে নামা বাংলাদেশ কাগিসো রাবাদার পেসে রীতিমতো কেঁপেছে। মিরপুর টেস্টেও বাংলাদেশের টপ অর্ডার ধসিয়ে দিয়েছিলেন রাবাদা। চট্টগ্রামেও তাই ঘটল।

অবশ্য বাংলাদেশি ব্যাটাররাও উইকেট বিলিয়ে দেওয়ার প্রতিযোগিতা করেছেন! ইনিংসের প্রথম ওভারেই সাদামান ইসলাম লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে ফিল্ক খেলতে গিয়েছিলেন। বল এজড হয়ে চলে যায় উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে। সাদমান ফিরেছেন খালি হাতে।

জাকির হাসান চট্টগ্রামেও ব্যর্থ হয়েছে। পাকিস্তান, ভারত সফরে পুরোপুরি ব্যর্থ জাকির মিরপুর টেস্টের একাদশ থেকে বাদ পরছিলেন। চট্টগ্রামে ফিরলেও রান করতে পারলেন না। রাবাদার অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাক ফুট পাঞ্চ খেলতে গেলেন। কিন্তু বল ব্যাটে নিতে পারেননি জাকির। তার ব্যাটের কানা ছুয়ে বল চলে যায় উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে।

বিজ্ঞাপন

খানিক বাদে যাওয়ার-আসার মিছিলে সামিল হয়েছেন মাহমুদুল হাসান জয়ও। ডেন প্যাটারসনের বলে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে ব্যাটে বল নিতে পারেননি জয়। বল চলে যায় মার্করামের হাতে। ২১ বলে ১০ রান করে ফিরেছেন জয়। শেষের কয়েকটা ওভার কাটিয়ে দেওয়ার জন্য ‘নাইটওয়াচম্যান’ হিসেবে পেসার হাসান মাহমুদকে পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু কেশভ মহারাজের স্পিনে হাসানও ফিরেছন বোল্ড হয়ে।

আলোকস্বল্পতার কারণে একটু আগেভাগে দিনের খেলা শেষ হয়েছে। বাংলাদেশের স্কোর তখন ৪ উইকেটে ৩৮। দিন শেষে অপরাজিত ছিলেন মুমিনুল হক ও নাজমুল হোসেন শান্ত।

এর আগে ২ উইকেটে ৩০৯ রান নিয়ে দিনের খেলা শুরু করে দ্রুত রান বাড়িয়ে নিচ্ছিলেন আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটার টনি ডি জর্জি ও ডেভিড বেডিংহ্যাম। ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির দিকে এগুচ্ছিলেন ডি জর্জি। অপর দিকে বেডিংহ্যামও দ্রুত রান তুলছিলেন। তাইজুল ইসলাম এই অতি আগ্রাসী হওয়ার ‘দুর্বলতা’টাই কাজে লাগিয়েছেন।

তাইজুলকে এগিয়ে এসে সুইপ খেলতে গিয়ে সরাসরি বোল্ড হয়েছেন বেডিংহ্যাম। ফেরার আগে ৭৮ বলে ২টি চার ৪টি ছক্কায় ৫৯ রান করেন। খানিক বাদে ডি জর্জিও ফিরেছেন একই কায়দায়। তাইজুলকে এগিয়ে এসে সুইপ খেলতে গিয়ে লাইন মিস করে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেছেন ১৭৭ রানে। ২৬৯ বল খেলে ১২টি চার ৪টি ছক্কায় এই রান করেছেন জর্জি।

এরপর কাইল ভেরেইনারকেও তুলে নিয়েছেন তাইজুল। প্রথম টেস্টের সেঞ্চুরিয়ান ভেরেইনারও সুইপের নেশায় পরেছিলেন। তাইজুলকে সুইপ খেলতে গিয়ে পরাস্তা হয়ে এলবিডব্লিউ হয়েছেন প্রোটিয়া উইকেটরক্ষক ব্যাটার। শূন্য রানে আউট হয়েছেন তিনি। ২ উইকেটে ৩৮৯ থেকে মুহূর্তেই ৫ উইকেটে ৩৯১ হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

লাঞ্চের পর রায়ান রিকেলটনকে (১২) ফেরান নাহিদ রানা। তবে এরপর বাংলাদেশি বোলিং ইউনিটকে আবারও অসহায় বানিয়ে ফেলে দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ব্যাটার উইয়ান মুল্ডার ও সেনুরান মুথুসামি। দুজনের দ্রুত রান তুলতে চেয়েছেন। মুথুসামি ছিলেন বেশি আক্রমণাত্মক।

চা বিরতির পর থেকেই বাংলাদেশ অপেক্ষায় ছিল কখন ইনিংস ঘোষণা করে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। মুল্ডারের সেঞ্চুরির পর সেই ‘অপেক্ষা’ শেষ হয়েছে। তাইজুল ইসলামকে ছক্কা মেরে ৯৯ থেকে সেঞ্চুরি পূর্ণ করা মুল্ডার ১৫০ বল খেলে ৮টি চার ৪টি ছক্কায় এই রান করেন।

সেখানেই ইনিংস ঘোষণা করা হয়। সেনুরান মুথুসামি তখন ৬৮ রানে অপরাজিত। অনেকটা ওয়ানডে গতিতে রান তুলেছেন তিনি। ৭৫ বলে ৫টি চার ২টি ছয়ে এই রান করেছেন। বাংলাদেশের হয়ে তাইজুল ১৯৮ রানে নিয়েছেন পাঁচ উইকেট। একটি উইকেট নিয়েছেন নাহিদ রানা।

সারাবাংলা/এসএইচএস

বাংলাদেশ- দক্ষিণ আফ্রিকা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর