১১ রানে ৭ উইকেট পতন, বাংলাদেশের বিশাল হার
৬ নভেম্বর ২০২৪ ২৩:২৬
আফগানিস্তানের ২৩৫ রানের জবাব দিতে নেমে একটা সময় বাংলাদেশ ২ উইকেটে তুলে ফেলেছিল ১২০ রান। সেই বাংলাদেশ কিনা গুটিয়ে গেল ১৪৩ রানে! সর্বশেষ ৭ উইকেট পড়ল মাত্র ১১ রানের ব্যবধানে! ভুতূড়ে ব্যাটিংয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে বড় ব্যবধানেই হারল নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
টস হেরে শুরুতে দুর্দান্ত বোলিং করা বাংলাদেশের পেস আক্রমণ সামলে শেষ পর্যন্ত ২৩৫ রানের স্কোর দাঁড় করিয়েছিল আফগানিস্তান। পরে আফগান স্পিন বিষে নীল হয়ে বাংলাদেশ ১৪৩ রানে গুটিয়ে গেলে ৯২ রানের বড় জয় পেয়েছে আফগানিস্তান। আফগান তরুণ স্পিনার আল্লাহ মোহাম্মদ গাজানফার মাত্র ২৬ রান খরচায় একাই নিয়েছেন ৬ উইকেট।
গাজানফারকে বলা হচ্ছে ‘নতুন মুজিব-উর রহমান’। ইনজুরির কারণে বাংলাদেশ সিরিজে খেলতে পারছেন না মুজিব। তার জায়গাতেই সুযোগ পেয়েছেন গাজানফার। সুযোগ পেয়েই বার্তা দিলেন- বিশ্ব ক্রিকেট শাসন করতে উঠে আসছেন আর এক আফগানি স্পিনার!
বুধবার (৬ নভেম্বর) শারজা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আফগানদের ২৩৫ রানের জবাব দিতে নেমে শুরুটা ভালো না হলেও বেশ ভালোই এগুচ্ছিল বাংলাদেশ। শুরুতেই তানজিদ হাসান তামিমকে (৩) হারায় বাংলাদেশ। তবে সৌম্য সরকার ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটে বেশ হিসেব করেই এগুচ্ছিল বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় উইকেটে দ্বিতীয় সৌম্য-শান্তর জুটি ছিল ৫৪ বলে ৫৩ রানে। সৌম্য সরকার ৪৫ বলে ৩৩ রান করে ফিরলে এই জুটি ভাঙে। মেহেদি হাসান মিরাজ ব্যাটিং অর্ডারে উন্নতি করে নেমেছিলেন চার নম্বরে। শান্তর সঙ্গে মিরাজেরও একটা ভালো জুটি হয়েছে।
নাজমুল হোসেন শান্তকে ফিরিয়ে বড় ধাক্কা দেন মোহাম্মদ নবি। ৬৮ বলে ৪টি চার ২টি ছয়ে ৪৭ রান করে ফেরেন শান্ত। খানিক বাদে ৫২ বলে ২৮ রান করা মিরাজ রান বাড়াতে গিয়ে আউট হয়ে গেলে চাপে পরে বাংলাদেশ। সেই চাপ কাটিয়ে ফেরা তো দূরের কথা গাজানফার স্পিন ভেল্কিতে রীতিমতো বিধ্বস্ত হয়েছে বাংলাদেশ।
মাত্র ১১ রানে শেষ সাত উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। ৭টি উইকেট ভাগাভাগি করে নিয়েছেন গাজাফার ও আফগানিস্তানের অপর স্পিনার রশিদ খান মিলে। ৩৪.৪ ওভারে মাত্র ১৪৩ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ। গাজনাফার ৬.৩ ওভার বোলিং করে মাত্র ২৬ রান খরচায় নিয়েছেন ৬ উইকেট। রশিদ খান ২৮ রানে নিয়েছেন দুই উইকেট।
এর আগে টস হেরে বোলিং করতে নেমে দারুণ বোলিং করেছে বাংলাদেশি পেস বোলিং ইউনিট। শুরুতে আফগানদের নাভিশ্বাস তুলে ছেড়েছেন বাংলাদেশি পেসাররা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে রহমানুল্লাহ গুরবাজকে ফেরান তাসকিন আহমেদ। এরপর মোস্তাফিজ ঝড়ে ৩৫ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় আফগানিস্তান। পরপর তিন উইকেট তুলে নেন মোস্তাফিজ।
দলীয় ৭১ রানের মাথায় তাসকিন আহমেদ গুলবাদিন নাইবকে (২২) ফেরালে ৭১/৫ হয়ে পরে আফগানিস্তান। আফগানরা দেড়শ পর্যন্ত যেতে পারবে কিনা তখন সেটাই বড় শঙ্কা। অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহিদিকে নিয়ে মোহাম্মদ নবীর সেখান থেকেই পাল্টা লড়াই।
শহিদি রানের চিন্তুা বাদ দিয়ে মাটি কামড়ে উইকেটে পরে থাকতে চেয়েছেন। অপর দিকে মোহাম্মদ নবী স্বাভাবিক খেলাটা খেলে গেছেন। ষষ্ঠ উইকেটে ১২২ বলে ১০৪ রান যোগ করেন দুজন। মোস্তাফিজুর রহমানই এই জুটি ভাঙেন। ৯২ বলে ২ চারে ৫২ রান করা শহিদিকে সরাসরি বোল্ড করেন মোস্তাফিজ।
আট নম্বরে নামা রশিদ খানকে (১১) সুবিধা করতে দেননি শরিফুল ইসলাম। এরপর তাসকিন আহমেদ একই ওভারে মোহাম্মদ নবিসহ দুই উইকেট তুলে নিলে ২১৯ রানে নবম উইকেট হারিয়ে ফেলে আফগানিস্তান। শেষ দিকে আফগানিদের নবম ব্যাটার খারোটে কার্যকারী একটা ইনিংস খেলে আফগানদের দুইশ ত্রিশের ওপারে নিয়ে গেছেন।
তাসকিনের বলে তানজিম তামিমের হাতে ধরা পরার আগে ৭৯ বল খেলে ৪টি চার ৩টি ছয়ে ৮৪ রান করেছেন মোহাম্মদ নবি। খারোটে ২৮ বলে ২ চার ১ ছয়ে ২৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন। আফগানিস্তানের দশ উইকেটের একজন রান আউট, বাকি ৯টিই নিয়েছেন বাংলাদেশের পেসাররা।
৫৩ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। মোস্তাফিজুর রহমান ৫৮ রান নিয়েছেন চার উইকেট। ৩২ রানে এক উইকেট নিয়েছেন শরিফুল।
সারাবাংলা/এসএইচএস