ঢাকা: বায়ুদূষণে আবারও বিশ্বের শীর্ষ দূষিত শহরের তালিকায় উঠে এসেছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে বিশ্বব্যাপী বায়ুগুণমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ার (IQAir)–এর রিয়েল টাইম সূচকে ঢাকার বায়ু মান সূচক (AQI) রেকর্ড করা হয় ২৫৫, যা ‘অস্বাস্থ্যকর’ বা Very Unhealthy পর্যায়ে পড়ে।
এই সূচকের ভিত্তিতে ঢাকার অবস্থান ছিল বিশ্বের চতুর্থ দূষিত শহর। তালিকার শীর্ষে ছিল দিল্লি, লাহোর ও কুয়েত সিটি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মাত্রার বায়ুদূষণ সাধারণ জনগণের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এবং শিশু, প্রবীণ ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগীদের জন্য বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। আইকিউএয়ারের তথ্যমতে, ঢাকায় বাতাসে সূক্ষ্ম কণিকা PM₂.₅–এর ঘনত্ব বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) নির্ধারিত নিরাপদ সীমার প্রায় ১৫ গুণ বেশি।
বায়ুদূষণের মূল কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে— শুষ্ক মৌসুমে ধুলাবালি ও ধোঁয়ার বৃদ্ধি, যানবাহনের নির্গমন, ইটভাটা ও নির্মাণকাজ থেকে নির্গত ধূলিকণা। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, শীত ঘনিয়ে আসায় বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাচ্ছে এবং বাতাসের গতি ধীর হয়ে পড়ছে— ফলে ধুলাবালি ও দূষিত কণাগুলো বাতাসে ভেসে থেকে পরিবেশকে ভারী করছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর জানিয়েছে, রাজধানীতে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে— যেমন, নির্মাণকাজে ধুলা নিয়ন্ত্রণ, খোলা ইটভাটা বন্ধ, ও পুরনো গাড়ির চলাচল সীমিত করা। তবে বাস্তবায়নের দুর্বলতার কারণে কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাচ্ছে না বলে মত দিয়েছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, এমন দিনে বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে, সকাল ও সন্ধ্যায় ঘরের বাইরে ভারী ব্যায়াম এড়িয়ে চলতে হবে, এবং ঘরের জানালা–দরজা বন্ধ রাখতে হবে যতটা সম্ভব।
বায়ু মান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থাগুলোর ধারণা, নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি সময়টিই ঢাকার জন্য সবচেয়ে দূষণপ্রবণ মৌসুম। ফলে আগামী সপ্তাহগুলোতে বায়ুদূষণ আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।