সময়কে ধরে রাখার গল্প ‘ফেরার পথ নেই’
২৯ জুন ২০১৮ ১৭:৪২
এন্টারটেইনমেন্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
দেশব্যাপী গুম, খুন, ধর্ষণ, বিচার বহির্ভূত হত্যার ঘটনা উঠে আসে খবরের লাল শিরোনামে। প্রায় প্রতিদিনই এসব সংবাদে ভারী হয়ে ওঠে নাগরিক হৃদয়। কেমন একধরনের অস্থিরতা, চারদিকে। ছোট্ট এই ব-দ্বীপের ঈশান কোনে যেনো এক টুকরো কালো মেঘ। মেঘ ভেঙে স্বস্তির বৃষ্টি নামার অপেক্ষায় সবাই। সমাজজীবনে মানুষের মনে অচেনা শঙ্কা আর উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ছে। কেনো বাড়ছে? কি কারণে ঘটছে এসব ঘটনা? উত্তর জানা নেই।
বাস্তবে ঘটে যাওয়া এরকম কিছু ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ছোটপর্দার জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন এবার ঈদে নির্মাণ করেছিলেন বিশেষ খণ্ডনাটক ‘ফেরার পথ নেই’। এমন স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে নাটক নির্মাণ একইসাথে সাহসের এবং চ্যালেঞ্জের।
এ প্রসঙ্গে পরিচালক আশফাক নিপুন সারাবাংলাকে বলেন, ‘একজন নির্মাতা তার নাটকে গল্প বলতে চায়। সেটা যে গল্পই হোকনা কেনো। নির্মাতা হিসেবে আমি এসময়ের চিত্রটি মানুষের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। গত কয়েক বছর ধরে গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যার খবর প্রায়ই শুনছি-দেখছি। এই পরিস্থিতিতে আমার নাটকটি দলিল হয়ে থাকবে বলে মনে করি। আজ থেকে অনেক বছর পর যখন কেউ নাটকটি দেখবেন তখন সে বা তারা বুঝতে পারবে যে এই সময়টাতে নির্দিষ্ট এ বিষয়ে পরিস্থিতি কেমন ছিল। আমাদের জন্য গুম, খুন শুধুমাত্র পত্রিকার হেডলাইন হয়ে গেছে এখন। আমরা পড়ি, হয়তো এক মিনিট ভাবি বা ভাবিও না, পাতা উল্টে চলে যাই। আমি চেষ্টা করেছি যাদের পরিবারের কেউ আর ফেরেনা তাদের কষ্ট, তাদের হাহাকার অনুভব করতে। যেহেতু আমার “ফেরার পথ নেই” একটা ফিকশন সেহেতু আমি তাদের পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে অবস্থাটা বোঝার চেষ্টা করেছি। আমাকে তাদের জায়গায়, দর্শককে তাদের জায়গায় বসিয়ে অবস্থার ভয়াবহতার কথা বোঝাতে চেয়েছি।’
আশফাক নিপুন মনে করেন এই ধরনের নাটক নির্মাণের ক্ষেত্রে বাড়তি স্নায়ুচাপের ভেতর দিয়ে যেতে হয়। পরোক্ষভাবে একটা চাপ থেকে যায়। নিপুন আরও বলেন, ‘আমি যখন গল্পটি নাটকে রুপান্তর করবো বলে ঠিক করি তখন আমার ভেতর কিছুটা শঙ্কা কাজ করছিল। আদৌ এটি বানানো ঠিক হবে কিনা! যখন নাটকের অভিনয়শিল্পীদের এই গল্পটা শোনালাম তারা কাজটি করতে রাজি হন। তারপর সব দ্বন্দ্ব একপাশে রেখে সাহস করে নাটকটি নির্মাণ করি। তবে আমরা কাজের ব্যাপারে খুব সাবধানী ছিলাম। পরিচালক হিসেবে আমার দায়বদ্ধতা থেকে এটি নির্মাণ করেছি। মানুষ নাটকটি দেখে প্রশংসা করেছে সেজন্য মনে করি আমার সাহস করে কাজটি করা স্বার্থক হয়েছে।’
তার মতে, এখন বেশিরভাগ নাটক নির্মিত হচ্ছে প্রেম-ভালোবাসা কেন্দ্রিক। প্রেমকেন্দ্রিক নাটক নির্মিত হবে, কিন্তু প্রেমের নাটকের মাঝেও দর্শকরা ব্যাতিক্রম কিছু দেখতে চায়।
‘ফেরার পথ নেই’ নাটকটি রচনা করেছেন নির্মাতা নিজেই। এতে প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন আফরান নিশো এবং মেজাবিন।
সারাবাংলা/আরএসও/পিএ