শাহরুখ খান— বলিউডের রোমান্স কিং, যিনি কোটি ভক্তের হৃদয়ের রাজা। কিন্তু এই রাজারও জীবনের একসময় ছিল চ্যালেঞ্জে ভরা। বিশ্বাস করুন বা না করুন, তার স্বপ্নের বাড়ি ‘মান্নাত’ একসময় কেনা হয়েছিল… ধারের টাকায়!
ভিলা থেকে মান্নাতের গল্প _
১৯১৪ সালে ব্যবসায়ী নরিম্যান কে দুবাস বানিয়েছিলেন একটি দৃষ্টিনন্দন সমুদ্রপাড়ের বাড়ি— ‘ভিলা ভিয়েনা’। পরবর্তীতে এর নাম হয় ‘জান্নাত’। আর ২০০১ সালে শাহরুখ ও গৌরী খান যখন এটি কিনলেন, তখন তারা এর নাম বদলে রাখলেন— ‘মান্নাত’।
কিন্তু কেনা সহজ ছিল না। বলিউড কিং তখন হাতে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় এক প্রযোজকের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা ধার নেন। দাম ছিল প্রায় ১৩.২৩ কোটি রুপি।
সংস্কারের গল্পে গৌরীর হাত _
বাড়িটি কেনার সময় অবস্থা ছিল অনেকটা ক্লান্ত সমুদ্রতীরের মতো— সৌন্দর্য ছিল, কিন্তু নতুন করে সাজানোর তীব্র প্রয়োজনও ছিল। প্রথমে ডিজাইনার ডাকার চেষ্টা হলেও খরচের কারণে সেই পরিকল্পনা বাদ যায়। এরপর গৌরী খান নিজেই হয়ে ওঠেন বাড়ির ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর— নিজের স্বাদ ও রুচি দিয়ে মান্নাতকে রূপ দেন রাজকীয় স্বপ্নভূমিতে।
আজ ছয়তলা এই বাংলোয় রয়েছে _
ব্যক্তিগত সিনেমাহল
একাধিক বিলাসবহুল শয়নকক্ষ
সবুজ বাগান
ঐতিহ্যবাহী শিল্পকর্ম ও সাজসজ্জা
ইয়েস বস থেকে হ্যাঁ, এটাই আমার বাড়ি!
বলিউডের ‘ইয়েস বস’ সিনেমার শুটিংয়ের সময় প্রথমবার এই বাড়িটি চোখে পড়ে শাহরুখের। তখনই মনে মনে ঠিক করে ফেলেন— একদিন এই বাড়ি তারই হবে। আর সেই স্বপ্ন পূরণ হলো ২০০১ সালে।
এখনকার মান্নাতের দাম?
সময় আর সাফল্যের সঙ্গে সঙ্গে মান্নাতের বাজারমূল্য বেড়েছে আকাশচুম্বী। এখন এর আনুমানিক মূল্য প্রায় ৩০০ কোটি রুপি— যা কিনা শাহরুখের কেনা দামের তুলনায় ২২ গুণ বেশি।
রাজা কখনো তার প্রাসাদ বিক্রি করে না _
শাহরুখ নিজেই বলেছেন, ‘মান্নাত আমার জন্য শুধু একটি বাড়ি নয়, এটা আমার স্বপ্ন, আমার বিশ্বাসের প্রতীক। আমি এটা কোনোদিনই বিক্রি করব না।’
শেষ কথা _
মান্নাত শুধু কংক্রিটের প্রাসাদ নয়— এটি পরিশ্রম, স্বপ্ন আর বিশ্বাসের গল্প। হয়তো আমরা সবাই মান্নাত কিনতে পারব না, কিন্তু শাহরুখের গল্প আমাদের শেখায়— স্বপ্ন যত বড়ই হোক, তা পূরণ করার সাহস থাকতে হবে… আর মাঝে মাঝে হয়তো সামান্য ধারও।