ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত নায়িকা অপু বিশ্বাসকে আজ কেউ হয়তো শুধু গ্ল্যামার বা সিনেমার সফল নায়িকা হিসেবে জানে। কিন্তু তার জীবনের এমনও অধ্যায় ছিল, যেখানে সে নিজের প্রিয় সোনার গয়না পর্যন্ত বিক্রি করে চলার পথ খুঁজেছে।
অপু দীর্ঘদিন ধরে কোনো সিনেমায় নেই। বর্তমান সময়টা কাটছে ব্যবসা ও বিভিন্ন পণ্য-প্রচারণায়। তবে তার ব্যক্তিজীবন প্রফেশনাল জীবনের চেয়েও বেশি আলোচিত—প্রাক্তন স্বামী শাকিব খান এবং চিত্রনায়িকা শবনম বুবলীর সঙ্গে সম্পর্ক ও সংবাদ শিরোনামে আসা তার ভক্তদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
২০১৭ সালে ছেলে আব্রাম খান জয়ের জন্মের পর ভারত থেকে দেশে ফেরেন অপু। তখন তার হাতে একেবারেই কোনো টাকা-পয়সা ছিল না। ব্যাংক অ্যাকাউন্টের কথা তো দূরের কথা। সেই সময় তিনি বুঝেছিলেন, যাদের অর্থের অভাব আছে তারা প্রতিদিন কীভাবে হিসাব করে জীবন চলায়। ‘আমি মিতব্যয়ী হয়ে উঠলাম,’ অপু জানান।
অপু বিশ্বাসের সবচেয়ে বড় সাহায্য ছিল তার প্রিয় সোনার গয়না। ‘আমি অনেক বেশি সোনার গয়না পরি। কিনতাম শখ পূরণের জন্য। কিন্তু সেই গয়নাগুলোই বাজে পরিস্থিতিতে আমার কাজে এল,’ তিনি স্মৃতিচারণ করেন। কঠিন সময় তার অনেকগুলো গয়না বিক্রি করে তিনি সামাল দিয়েছেন অর্থকষ্ট। এরপর ধীরে ধীরে আবার কাজের মাধ্যমে নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছেন।
অপু বিশ্বাসের চলচ্চিত্র জীবনের শুরু ২০০৫ সালে ‘কাল সকাল’ ছবির মাধ্যমে। তবে প্রকৃত পরিচিতি আসে ২০০৬ সালে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনীত কোটি টাকার কাবিন ছবির মাধ্যমে। এরপর তারা একসঙ্গে ডজনখানেক বাণিজ্যিক ছবি উপহার দেন দর্শককে। ২০১০-এর দশকে অপু ছিলেন ঢালিউডের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া নায়িকাদের একজন।
অপু বিশ্বাসের গল্প শুধু বিনোদনের নয়, বরং সংগ্রামেরও। সোনার গয়না বিক্রি করে জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা, আবার কাজের মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা—এই যাত্রা প্রমাণ করে, আর্থিক বা ব্যক্তিগত সংকট থেকে কেউ হাল ছাড়তে বাধ্য নয়। তার গল্প আজকের প্রজন্মের নারীদের জন্য একটি অনুপ্রেরণা, দেখায় কীভাবে সংকটে সাহস ও ধৈর্য ধরে থাকা যায়।