Tuesday 25 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর কাউকে জানায়নি পরিবার!

এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক
২৫ নভেম্বর ২০২৫ ১৩:৪৬

বলিউডে যখনই কোনো তারকা চলে যান, সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিবারের আনুষ্ঠানিক পোস্ট— এ যেন রীতিমতো অলিখিত প্রথা। মৃত্যু-শোক, স্মৃতিচারণ, শেষ বিদায়— সবই জানিয়ে দেওয়া হয় সর্বসাধারণকে। কিন্তু এই অনুশাসনের বাইরে এক অদ্ভুত নীরবতা তৈরি হয়েছে বলিউডের ‘হি-ম্যান’ ধর্মেন্দ্রকে ঘিরে। তিনি চলে গেছেন, দাহও সম্পন্ন হয়েছে— তবু পরিবার এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানায়নি।

এই নীরবতা বলিউডে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, এই সিদ্ধান্তের পেছনে আছে পরিবারের অভিমান। কারণ, এর আগেও কয়েক দফা গণমাধ্যম ভুলভাবে ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর প্রকাশ করেছিল। এসব খবর পরিবারকে আঘাত করেছিল, বিরক্ত করেছিল। তাই এবার পরিবার চায়নি এই মুহূর্তটিও সংবাদমাধ্যমের দৌড়ঝাঁপে ভরে উঠুক। তারা চেয়েছে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগতভাবে, সম্পূর্ণ নীরবে শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে।

বিজ্ঞাপন

বলিউডের প্রবণতা হলো— যখন তারকারা অসুস্থ হন বা মারা যান, পরিবারের পক্ষ থেকে দ্রুত বিবৃতি আসে। কিন্তু ধর্মেন্দ্রর ক্ষেত্রে একেবারেই ব্যতিক্রমী একটি চিত্র ফুটে উঠেছে। পরিবার ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে— শেষকৃত্যের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার পরই তারা প্রকাশ্যে কিছু বলতে পারে। তার আগে নয়। কারণ পরিবার মনে করছে, অতীতের ভুল তথ্য ছড়ানো তাদের কষ্ট বাড়িয়েছে, এবং তারা এই বিদায়কে ‘সন্মানিত নীরবতা’ দিতে চায়।

১৯৩৫ সালের ৮ ডিসেম্বর পাঞ্জাবের লুধিয়ানায় জন্ম ধর্মেন্দ্র সিং দেওলের। ছোটবেলা থেকেই সিনেমার প্রতি বিশেষ আকর্ষণ ছিল তার। ১৯৬০ সালে অর্জুন হিঙ্গোরানীর ‘দিল ভি তেরা হাম ভি তেরে’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক। এর পরের ইতিহাস তো সবাই জানে— ‘শোলে’র বীরু, ‘অনুপমা’র শান্ত-স্নিগ্ধ নায়ক, ‘ধর্মবীর’-এর জনপ্রিয় মুখ, আর ‘চুপকে চুপকে’র হাস্যরস— প্রতিটি চরিত্রে তিনি ছিলেন স্বতন্ত্র।

তার বিপরীতে কাজ করেছেন যুগের সেরা নায়িকারা— হেমা মালিনী, রেখা, মুমতাজ থেকে শুরু করে জয়া বচ্চন। অভিনয়, নাচ, অ্যাকশন— সব মিলিয়ে বলিউডে ‘হি-ম্যান’ উপাধিটি যেন তার জন্যই তৈরি হয়েছিল। সর্বশেষ করণ জোহর পরিচালিত ‘রকি অউর রানি কি প্রেম কাহানি’ সিনেমাতেও তার উপস্থিতি দর্শকদের আপ্লুত করেছিল।

তার মৃত্যুর খবরে শোক জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে শুরু করে বলিউডের নবীন প্রজন্মের তারকারা। তবু এই শোক যেন একপাশে; অন্যপাশে রয়েছে পরিবারের নিস্তব্ধতা। ধর্মেন্দ্রর দীর্ঘ অভিনয়জীবন, তার সংগ্রাম, তার হাসিখুশি উপস্থিতি— সবকিছু মিলিয়ে বলিউডে তার প্রভাব ছিল অপার। কিন্তু তার বিদায়ের মুহূর্তটি হলো সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত, পর্দার আড়ালের। এ যেন ঠিক তারই মতো— জীবনজুড়ে যিনি পর্দায় ঝলমলে ছিলেন, সেই মানুষটিই শেষ মুহূর্তে চলে গেলেন নীরবে, শুধু পরিবারের ঘনিষ্ঠতার মাঝে।

বলিউড গত ছয় দশকের স্মৃতি ফিরে দেখছে— যেখানে ঝলমলে আলোয় দাঁড়ানো এক সরল মানুষ ছিলেন ধর্মেন্দ্র। মানুষের নায়ক, পর্দার শক্তিমান, আর পরিবারের কাছে একজন স্নেহশীল মানুষ। শেষ মুহূর্তে পরিবার যে নীরবতাকে বেছে নিয়েছে, সেটি হয়তো তাদের নিজের মতো করে ভালোবাসার প্রকাশ।

তার ভক্তরা অপেক্ষায় আছে— পরিবার কখন আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবে এই প্রস্থানকে। তবে এর মধ্যেই অগণিত মানুষ একটাই কথা বলছে…

ধর্মেন্দ্র নেই, কিন্তু তার সিনেমা বেঁচে থাকবে— যতদিন ভারতীয় সিনেমা থাকবে, ততদিন।

বিজ্ঞাপন

২৯ নভেম্বর ইসির ‘মক ভোটিং’
২৫ নভেম্বর ২০২৫ ১৩:২৮

আরো

সম্পর্কিত খবর