হরর প্রেমীরা একটা ব্যাপার মানেন— এক্সরসিস্ট মানেই ভয়ের রাজকীয়তা। ১৯৭৩ সালে মুক্তি পাওয়া প্রথম ছবিটি ছিল যেন এক যুগান্তকারী দুঃস্বপ্ন— এক মা আর তার অদ্ভুত আচরণের মেয়েকে ঘিরে তৈরি হওয়া গল্প বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলেছিল। সেই ছবি বক্স অফিসে ৪৪১ মিলিয়ন ডলার আয় করে হররের ইতিহাস বদলে দিয়েছিল, আর পেয়েছিল ১০টি অস্কার মনোনয়ন। এবার সেই কিংবদন্তি গল্প ফিরছে একদম নতুন রূপে। আর এর কেন্দ্রে রয়েছেন হলিউডের নিজস্ব পাওয়ারহাউস— স্কারলেট জোহানসন।
ইউনিভার্সাল, ব্লামহাউস ও অ্যাটমিক মনস্টার মিলে নতুন যে ‘এক্সরসিস্ট’ সিনেমা তৈরি করছে, তার চালিকাশক্তি মাইক ফ্লানাগান। ‘ডক্টর স্লিপ’, ‘দ্য হন্টিং অব হিল হাউস’, ‘মিডনাইট মাস’-এর মতো মনস্তাত্ত্বিক হররের কারিগর তিনি। তাই এই ফ্র্যাঞ্চাইজির হাল তার হাতে যাওয়াটাই যেন স্বাভাবিক।
স্কারলেটকে নেওয়ার কারণ হিসেবে ফ্লানাগান বলেন— “তিনি বাস্তব আর আবেগ— দুটোই ধরতে পারেন। গভীর গল্প হোক বা বড় বাজেট, তিনি সব জায়গায় অসাধারণ। তাকে পেয়ে আমি সত্যিই আনন্দিত।”
স্কারলেটের ক্যারিয়ারও যেন ঠিক সেটাকেই প্রমাণ করে— মার্ভেলের ‘ব্ল্যাক উইডো’ থেকে শুরু করে ‘ম্যারেজ স্টোরি’র মতো সংবেদনশীল অভিনয়— সবখানেই তিনি নিজের একটা শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন।
নতুন ছবিটি ১৯৭৩ সালের প্রথম কিস্তির সেই মহাবিশ্বেই থাকবে। তবে এটি ‘এক্সরসিস্ট: বিলিভার’-এর সিক্যুয়েল নয়। বরং একেবারে নতুন গল্প, নতুন চরিত্র, নতুন রহস্য। স্টুডিওর পরিকল্পনা বেশ বড়সড়ই— ২০২১ সালে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে তারা কিনেছিল নতুন ত্রয়ীর অধিকার। যদিও ২০২৩ সালের ‘বিলিভার’ প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি (বিশ্বব্যাপী আয় মাত্র ১৩৬ মিলিয়ন), তবুও ফ্লানাগানের হাতে নতুন অধ্যায় নিয়ে দর্শকের আশাটা এখন অনেকটাই বেড়ে গেছে। এই কিস্তির শুটিং হবে নিউ ইয়র্কে— যে শহরের আলো-আধারিই যেন নিজেই একধরনের ভয় তৈরি করে।
সম্প্রতি স্কারলেটকে দেখা গেছে ইউনিভার্সালের অন্য একটি বিশাল ফ্র্যাঞ্চাইজি ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড রিবার্থ’-এ। সেখানে তার অভিনয় বিশ্বব্যাপী প্রশংসা কুড়িয়েছে, আর ছবিটি আয় করেছে ৮৬৮ মিলিয়ন ডলার। স্টুডিওর জন্য সেটি যেন ছিল একটি শক্ত বার্তা— স্কারলেট থাকলে দর্শক আসবেই।
এখনকার প্রশ্ন— এই ছবিটি কি আবার ‘এক্সরসিস্ট’-কে সেই পুরোনো ভয়ের চূড়ায় ফিরিয়ে নিতে পারবে? আর স্কারলেট কি হতে যাচ্ছেন হররের নতুন রানি?
উত্তর আসতে সময় লাগবে। তবে একটি ব্যাপার নিশ্চিত— এবার ভয়ের গল্পে যুক্ত হচ্ছে আবেগ, মানবিকতা আর স্কারলেটের অদম্য শক্তি। আর তা হলে দর্শক তো অপেক্ষা করবেই।