বলিউড রোমান্সের কথা উঠলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে রাজ–সিমরানের সেই দৌড়ে আসা দৃশ্য, সেই ছাতা–ভেজা ট্রেনস্টেশন—আর সেই চিরচেনা দু’টি মুখ: শাহরুখ খান ও কাজল। ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে’ মুক্তির প্রায় ৩০ বছর পর সেই জাদুই এবার ভাস্কর্যে বন্দি হয়ে উঠল লন্ডনের লেস্টার স্কোয়ারে। আর তাতেই যেন নতুন করে প্রেমে পড়েছে পুরো প্রজন্ম।
আইকনিক ভঙ্গিমায় ব্রোঞ্জের স্মৃতি
ঝুম বৃষ্টির দুপুর। হাতে ছাতা, পাশে কাজল, আর তাদের ঠিক পেছনে দাঁড়িয়ে সেই চেনা ভঙ্গিমার ব্রোঞ্জ ভাস্কর্য— রাজ ও সিমরান। মুহূর্তটি দেখলেই মনে হবে যেন ১৯৯৫ সালকে ফিরে পাওয়া গেল আবার। উন্মোচন অনুষ্ঠানে ছিলেন কাজলের ছেলে যুগ ও মেয়ে নিসা। তাদের উপস্থিতি দৃশ্যটিকে আরও আবেগময় করে তুলেছে।
‘এই অনুভূতি অবিশ্বাস্য’, মিডিয়ার সামনে কাজল বললেন, ‘আমাদের সন্তানদের নিয়ে ৩০ বছর আগের স্মৃতির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা— শব্দে প্রকাশ করা কঠিন। যেন সেই সময়টা আবার বেঁচে উঠল।’
কাজলের কথায় বোঝাই যায়, ‘ডিডিএলজে’ শুধু একটা সিনেমা নয়— এটা একাকী মানুষের প্রেমজ সঙ্গী, একাধিক প্রজন্মের হৃদয়ের ঠিকানা।
শাহরুখ খানও স্মৃতি ফিরে পেয়ে আপ্লুত। ‘আমরা মন দিয়ে, ভালোবাসা দিয়ে সিনেমাটি করেছি। হয়তো সেই কারণেই এত বছর পরও মানুষ এটিকে নিজের মনে ধরে রেখেছে। এই ভালোবাসা আমাদের কাছে আশীর্বাদ।’
বৃষ্টির মধ্যে ক্যামেরার দিকে হাসিমুখে তাকানো শাহরুখ–কাজলকে দেখে ভক্তরা যেন বারবার বলছেন— ‘রাজ–সিমরান একটাই।’
অনুষ্ঠানের একটি ভিডিও মুহূর্তেই ভাইরাল হয়। তাতে দেখা যায়— ছাতা হাতে কাজল তার সন্তানদের ডাকছেন; নিসা হাসিমুখে পোজ দিচ্ছেন, আর যুগ একটু লাজুক ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে। সেই স্নিগ্ধ পারিবারিক দৃশ্যও ভক্তদের মুগ্ধ করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এক ভক্ত লিখেছেন— ‘ডিডিএলজে শুধু সিনেমা নয়, আমাদের যৌবনের নস্টালজিয়া। এই ভাস্কর্য সেটাকে আরও অমর করল।’
১৯৯৫ সালে আদিত্য চোপড়ার নির্দেশনায় মুক্তি পাওয়া ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে’ এখনো রোমান্টিক সিনেমার পাঠ্যবই। রাজ–সিমরানের প্রেম, পরিবার, প্রতিবন্ধকতা আর অবশেষে মিল— শ্রোতাদের কাছে যেন এক অদ্বিতীয় অনুভব। লেস্টার স্কোয়ারের ভাস্কর্যটি এখন সেই ক্লাসিক প্রেমকে বহন করবে বছরের পর বছর।
এই ভাস্কর্য শুধু দুই তারকার সাফল্যের প্রতীক নয়; এটি এক যুগের আবেগ, এক ভালোবাসার গল্পের চিরস্থায়ী স্মারক। লন্ডনে দাঁড়িয়ে থাকা এই ব্রোঞ্জের রাজ–সিমরান যেন বলছে— ‘ভালোবাসা কখনো পুরোনো হয় না; শুধু রূপ বদলায়।’
এ যেন আমাদের সবারই স্মৃতির ভাস্কর্য।