বলিউডের আলো ঝলমলে দুনিয়ায় তারকাদের ব্যক্তিজীবন নিয়ে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। কখনো সম্পর্ক ভাঙা, কখনো দূরত্ব— সব মিলিয়ে রটনার গুঞ্জন যেন নিয়মিতই ঘুরে বেড়ায়। তেমনই দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত ছিল ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন ও অভিষেক বচ্চনের দাম্পত্য। কিন্তু সৌদি আরবের রেড সি ফিল্ম ফেস্টিভ্যালেই যেন মিলল সেই সব প্রশ্নের জবাব।
নীল চোখে রাজকীয় আভা, গায়ে কালো ঝলমলে পোশাক— লাল গালিচায় হাজির হতেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসেন এই বিশ্বসুন্দরী। শুধু উপস্থিতি নয়, বরং তার স্বতঃস্ফূর্ত হাসি ও আত্মবিশ্বাসী আচরণেই যেন বোঝা যাচ্ছিল– কোনো অনিশ্চয়তা তাকে ঘিরে নেই।
জেদ্দায় অনুষ্ঠিত বিশেষ মাস্টারক্লাসে যখন নিজের ক্যারিয়ার আর ব্যক্তিজীবন নিয়ে কথা বলছিলেন ঐশ্বরিয়া, তখনই বেরিয়ে আসে সেই স্পষ্ট বার্তা।
তিনি অকপটে বলেন— ‘আরাধ্যার যত্ন আর অভিষেকের সঙ্গে সময়—আমার জীবন এখন এই দুইয়ের চারপাশে ঘোরে। কোনো নিরাপত্তাহীনতায় আমি ভুগি না। এমন কোনো অনুভূতি কখনোই আমাকে চালিত করেনি।’ এই এক বাক্য যেন অনেকদিনের গুঞ্জনে পূর্ণচ্ছেদ টানল।
শুরু থেকেই গল্পনির্ভর সিনেমা বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন আলাদা। ‘ইরুভার’ থেকে শুরু করে ‘চোখের বালি’— ঐশ্বরিয়া কখনোই বাহুল্য নয়, বরং চরিত্রের গভীরতাকেই বেছে নিয়েছেন। এক ভাইরাল ভিডিওতে তিনি বলেন— ‘বাইরের কণ্ঠস্বর অনেক সময় সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলতে পারে, কিন্তু আমি তা হতে দিই না। আমার পছন্দ সবসময় আমার নিজের।’
‘পোন্নিয়িন সেলভান: পার্ট টু’–এর পর তাকে আর কোনো নতুন ছবিতে দেখা যায়নি। ইচ্ছাকৃতভাবেই বিরতি নিয়েছেন তিনি। কারণ, আরাধ্যা এখন তার জীবনের কেন্দ্রস্থল।
মেয়ের বেড়ে ওঠার প্রতিটি মুহূর্ত নিজের চোখে দেখতে চান তিনি। তাই ক্যারিয়ারের গতি কিছুটা কমালেও অসন্তুষ্ট নন— বরং এই সময়টাকেই নিজের সাফল্য মনে করেন।
ডাকোটা জনসনের সঙ্গে খুনসুটি, লাল গালিচায় অভিজাত চলন— সব মিলিয়ে রেড সি ফেস্টিভ্যালে ঐশ্বরিয়া যেন আবারও প্রমাণ করলেন, তিনি শুধু অভিনেত্রী নন; তিনি এক গ্লোবাল আইকন। ব্যক্তিজীবনের আলোচনা যতই থাকুক, তার আত্মবিশ্বাসে কোনো ভাঁজ নেই।
গুঞ্জনের পৃথিবী সবসময় সন্দেহে ভরপুর। কিন্তু ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন ঠিক বিপরীত। তিনি জানেন কোন পথে চলতে চান, কোন মানুষদের কাছে রাখতে চান, আর কোন সিদ্ধান্ত নিজ হাতে লিখতে চান। সৌদি আরবের লাল গালিচায় দাঁড়িয়ে তাই তিনি বললেন— ‘সংসার, ক্যারিয়ার, পরিচয়—সবই তার নিজের শর্তে।’