Wednesday 27 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘কলকাতার তুলনায় বাংলাদেশে রবীন্দ্রচর্চা বেশি হয়’


৬ আগস্ট ২০১৮ ১৭:০৩

রেজওয়ান সিদ্দিকী অর্ণ,স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।

আজ ২২ শ্রাবণ। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণ দিবস। দিনটি উপলক্ষে বিশিষ্ট রবীন্দ্র গবেষক ও নাট্য ব্যক্তিত্ব আতাউর রহমান বাংলা একাডেমিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে বক্তৃতা দেবেন। বক্তৃতায় তিনি বর্তমান সময়ে  রবীন্দ্র সাহিত্যের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে আলোচনা করবেন।   

বক্তৃতা দিতে যাওয়ার আগে সারাবাংলার সঙ্গে কথা বলেন আতাউর রহমানের। তিনি বক্তৃতার বিষয়বস্তু, বাংলাদেশে রবীন্দ্রচর্চা সহ বেশকিছু বিষয়ে কথা বলেন।

‘আজকের বিশ্বে রবীন্দ্র সৃজনের প্রাসঙ্গিকতা’- শীর্ষক বক্তৃতায় ঠিক কোন কোন বিষয়গুলো তুলে ধরতে চান?

বিজ্ঞাপন

রবীন্দ্রনাথের মনন ও সৃজনশীলতা। রবীন্দ্রনাথ এখনও পুরোনো বা সেকেলে হয়ে যাননি। বর্তমান সময়ে তিনি তার সাহিত্য, গানের মধ্য দিয়ে আমাদের মধ্যে রয়েছেন। নাটক রচনার ক্ষেত্রে তিনি প্রথার দেয়াল ভেঙেছেন। রবীন্দ্রনাথ জমিদারের ছেলে হয়েও ধর্মীয় গোঁড়ামীর দ্বারটাকে ভেঙে দিতে বলেছেন। তার নাটকগুলোতে এসবের প্রমাণ পাওয়া যায়। রবীন্দ্রনাথ মানুষের মানুষ ছিলেন। তিনি শিলাইদহতে জন্মগ্রহণ করলেও তার অসাধারণ হয়ে ওঠার পেছনে বাংলাদেশের অনেক অবদান রয়েছে। তিনি সাত বছর বাংলাদেশে ছিলেন। এখানে তিনি গগণ হরকরা, লালন সাঁই-এর গান শুনে লোকজ সংস্কৃতির প্রতি আকৃষ্ট হয়েছেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো জীবনবাদী ও মানবতাবাদী মানুষ বিরল। মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে তিনি মানব মঙ্গলের কথা লিখেছেন। তিনি মৃত্যুকে ‘জম’ বলেননি। বরং তিনি মৃত্যুকে সুনিপুণ শিল্পী বলে অভিহিত করেছেন।


আরও পড়ুন :  সাবিনার কণ্ঠে লালনের গান, উপস্থাপনায় বন্যা


শুধু আমাদের দেশে নয়, রবীন্দ্রনাথ বিশ্বজুড়ে চির প্রাসঙ্গিক। চীনে গিয়ে দেখলাম সেখানে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে মানুষের আগ্রহ রয়েছে। শুধু চীন নয়, পুরো বিশ্ব জুড়ে রবীন্দ্রনাথ অনেক বেশী গৃহিত হয়েছেন। শেক্সপিয়র নাটক দিয়ে আংশিক গৃহিত হয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথ সংগীতের জন্য সর্বত্র সমাদৃত। রবীন্দ্রসংগীতের মতো কোন সংগীতের কথা ও সুর এভাবে একসঙ্গে হাত ধরাধরি করে যায় না।

বিজ্ঞাপন

মূলত এসব বিষয়ের ওপর বিস্তারিতভাবে বলবো। কারন সবারই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কে জানা উচিত। একজন বাঙালি হিসেবে সবার রবীন্দ্রনাথকে গভীরভাবে চেনা উচিত।

বাংলাদেশে রবীন্দ্রচর্চা কোন পর্যায়ে আছে?

অনেকে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে রবীন্দ্রচর্চা করছেন। মঞ্চ নাটক কিংবা সংগীতের ক্ষেত্রে ভালোভাবে রবীন্দ্রচর্চা হচ্ছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা বেশ কয়েকটি নাটক নিয়মিত মঞ্চায়িত হচ্ছে। আরো বেশি বেশি তাকে নিয়ে চর্চা করতে হবে। শুধু জ্ঞান অর্জনের জন্য না। নিজেদের বাঙালিত্ব রক্ষার জন্য তাকে নিয়ে চর্চা করা জরুরি।

এ প্রজন্মের তরুণদের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ নিয়ে আগ্রহ রয়েছে বলে মনে হয়?

মন্দ বলবো না। অনেকে রবীন্দ্রসংগীত চর্চা করে। ছায়ানট ছাড়াও অনেক দল রয়েছে যারা রবীন্দ্রনাথের গান করে। তবে অনেকে মনে করে রবীন্দ্রনাথের লেখা গান গাইলে জাত সম্পন্ন হওয়া যায়। যদিও এতে অসুবিধার কিছু দেখছি না। তবু তারা গাইছে তো। মফস্বল শহরেও রবীন্দ্রসংগীত পৌছে গেছে। হয়তো তাদের ঠিকটাক সুর হয়না। তারপরও চেষ্টা করে যাচ্ছে। নজরুল সঙ্গীতের চেয়ে রবীন্দ্রসংগীত সর্বাধিক চর্চিত হয়। যদিও নজরুল আমাদের জাতীয় কবি।


আরও পড়ুন :  ডালাসে বাংলা চলচ্চিত্র উৎসব


বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে রবীন্দ্রসাহিত্য নিয়ে সেভাবে উল্লেখ করার মতো চলচ্চিত্র নেই। এর কারণ কি বলে মনে করেন?

একেবারে নেই বললেই চলে। আমি তরুণ বয়সে যেসব বাংলা (ভারতীয় বাংলা) ছবি দেখতাম সবগুলোতে রবীন্দ্রসংগীত শুনতাম। এখন চলচ্চিত্রে রবীন্দ্রনাথ অনুপস্থিত বলা যায়। বাংলাদেশে এমন ছবি নির্মাণ করা হয়না ব্যবসার কথা মাথায় রেখে। এদেশে বানিজ্যিক ছবির চাহিদা থাকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গল্প নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মিত হচ্ছে না। তাছাড়া মানুষ সাহিত্যের ছবি তেমন একটা বোঝে না। তারা সহজ ছবি দেখতে চায়।

বাংলাদেশ নাকি পশ্চিমবঙ্গ-  বরীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে চর্চার ক্ষেত্রে কারা বেশি এগিয়ে?

আমার মনে হয় বাংলাদেশ বেশি এগিয়ে। কলকাতা একটি মেট্রোপলিটন শহর। সেখানে মাড়োয়ারীরা ব্যবসার করতে এসে পুরোটা দখল করে আছে। বাঙালি যেভাবে রবীন্দ্রনাথকে উপলব্ধী করতে পারে, একজন মাড়োয়ারী কিন্তু সেভাবে উপলব্ধি করতে পারবে না। রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় মাঝে মাঝে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে অনুষ্ঠান আয়োজন করে। সেটা প্রয়োজনের তুলনায় কম। বলা যায় কলকাতার তুলনায় বাংলাদেশে বেশি রবীন্দ্রচর্চা করা হয়।

সারাবাংলা/আরএসও/পিএম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর