হাছন রাজাকে নিয়ে শাকুর মজিদের নাটক
৪ জানুয়ারি ২০১৮ ১২:৫৬
এন্টারটেইনমেন্ট করেসপনডেন্ট
শাকুর মজিদের পরিচয় বহুমাত্রিক। তবে সৃষ্টশীলতার ক্ষেত্রে তিনি বেশি নজর দিয়েছেন ভ্রমণ সাহিত্য আর তথ্যচিত্র নির্মাণে। একটা সময় টেলিভিশনের জন্যও নাটক লিখে আলোচিত হয়েছেন। আবার সরেও এসেছেন। দীর্ঘদিন ধরে টেলিভিশনের জন্য নাটক না লিখলেও ২০১০ সালে মঞ্চের জন্য প্রথম নাটক লেখেন তিনি। শাকুর মজিদের লেখা সেই নাটক ‘মহাজনের নাও’ মঞ্চে আনে সুবচন নাট্যসংসদ। বাউল শাহ আবদুল করিমের জীবনভিত্তিক ‘মহাজনের নাও’ নাটকটি দেশ-বিদেশের মঞ্চে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। এক নাটকেই আলোর অনেকটা নিজের দিকে টেনে নেন শাকুর মজিদ।
নতুন খবর হচ্ছে মঞ্চের জন্য নতুন একটি নাটক লিখেছেন শাকুর মজিদ। দ্বিতীয় নাটকেও আগের মতোই শেকড় সন্ধানী তিনি। এবারের নাটকের বিষয় লোকজ গানের অন্যতম প্রাণপুরুষ হাছন রাজা। নাটকের নাম ‘হাছনজানের রাজা’। কাব্যধর্মী এই নাটকে হাছন রাজার জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় উঠে এসেছে। নাটকটি মঞ্চে আনবে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ নাট্যদল প্রাঙ্গণেমোর। নির্দেশনা দিচ্ছেন অনন্ত হীরা। দলটি ইতিমধ্যে নাটকের অনুশীলন শুরু করেছে। আগামী মার্চ নাগাদ ঢাকার মঞ্চে দেখা যাবে ‘হাছনজানের রাজা’।
প্রথম মঞ্চ নাটকেই তুমুল জনপ্রিয়তা। দ্বিতীয় নাটক লিখতে গিয়ে কোনও চাপ অনুভব করেছেন কি? এমন প্রশ্নে শাকুর মজিদ বললেন,
‘টেলিভিশনে ‘লন্ডনী কইন্যা’ নাটকটি তুমুল আলোচিত হওয়ার পর যখন ‘নাইওরী’ লিখি তখনও এটা মনে হয়েছিল। যে কারনে ‘লন্ডনী কইন্যা’র আদল থেকে বেরিয়ে ‘নাইওরী’ লিখেছিলাম। নাইওরীতেও আমি পাশ মার্ক পেয়েছিলাম। তবে এক্ষেত্রে ঝুঁকি একটু বেশি। করিম এবং হাছন একই ঘরানার গীতিকবি হলেও তাঁদের আর্থ-সামাজিক অবস্থান ভিন্ন ছিল। করিম অনেকটা বাউল ঘরানার মানুষ ছিলেন, হাছন বাউল ছিলেন না, বাউলা বলতেন নিজেকে। তাছাড়া করিম ছোটবেলা থেকেই একই রকমের চিন্তা নিয়ে বড় হয়েছিলেন, হাছনের জীবনের পরিবর্তন আসে মধ্যবয়সে এসে। হাছনের চরিত্রে দ্বান্দিকতা অনেক বেশি। দিনের হাছন আর রাতের হাছন আলাদা মানুষ ছিলেন, ভূমির হাছন আর হাওড়ের হাছন আলাদা ছিলেন। এ ক্ষেত্রে হাছনের চরিত্রে বৈচিত্র্য এবং ভিন্নতা অনেক বেশি। তবে হাছনজানের রাজা লিখতে গিয়ে বারবার মনে করেছি যে মহাজনের নাওকে যেনো আমি হারাতে পারি। দুইটার মিল হচ্ছে, দুটোই কাব্য নাট্য। মহাজনের নাও পুরোটা পয়ারে লেখা, হাছনজানের রাজা পয়ার আর অক্ষরবৃত্ত মিলানো। দুটো খুব কাছাকাছি বিষয়ের, কিন্তু বেশ আলাদা। মহাজনের নাও পুরোপুরি শাহ আবদুল করিমের জীবনকে নিয়ে, তাঁর দর্শন বলা, আর হাছন রাজার জীবনের আলোকে তাঁর দর্শনকে বেশি জায়গা দেয়া। জমিদার দেওয়ান হাছন রাজা চৌধুরী এ নাটকে উপেক্ষিত, তাঁর হাছনজানের রূপটা ধরার চেষ্ঠা করেছি।’
সারাবাংলা/পিএম