নাট্যজন ড. ইনামুল হক আর নেই
১১ অক্টোবর ২০২১ ১৭:২২
নাট্যজন ড. ইনামুল হক আর নেই। আজ সোমবার (১১ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় বেইলি রোডে নিজ বাসায় মারা যান এই অভিনেতা, নাট্যকার ও নির্দেশক। জামাতা অভিনেতা লিটু আনাম তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
লিটু আনাম সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, কোনো ধরনের অসুস্থতা ছিল না ড. ইনামুল হকের। তিনি বাসায় চেয়ারে বসে থাকা অবস্থাতেই সংজ্ঞা হারান। পরে তাকে কাকরাইল ইসলামি ব্যাংক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরেক জামাতা সাজু খাদেম জানিয়েছেন, বেইলি রোডের বাসা থেকে ড. ইনামের মরদেহ কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনে নেওয়া হয়েছে। মরদেহ গোসল করিয়ে সেখান থেকে বেইলি রোডের বাসায় নিয়ে যাওয়া হবে। তার দাফনের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
ড. ইনামুল হক একজন অভিনেতা ছাড়াও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৩ বছর যাবত শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। সেখানে তিনি ১৫ বছর রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান এবং দুই বছর ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
নটরডেম কলেজে পড়াশোনাকালীন সময়েই থিয়েটার জগতে যাত্রা শুরু হয় তার। ফাদার গাঙ্গুলীর নির্দেশনায় তখন তিনি ‘ভাড়াটে চাই’ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন । ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়’র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন তিনি। দলটির ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। এই দলের হয়ে প্রথম তিনি মঞ্চে অভিনয় করেন আতাউর রহমানের নির্দেশনায় ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রো’ নাটকে। এরপর এই দলের হয়ে ‘দেওয়ান গাজীর কিসসা’, ‘নূরুল দীনের সারা জীবন’সহ আরো বহু নাটকে অভিনয় করেন।
১৯৯৫ সালে এই দল থেকে বের হয়ে ড. ইনামুল প্রতিষ্ঠিত করেন ‘নাগরিক নাট্যাঙ্গন’। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দলটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন গুণী এই নাট্যজন। তার পুরো পরিবারই নাটকে যুক্ত। স্ত্রী লাকী ইনাম, দুই মেয়ে হৃদি হক ও প্রৈতি হক প্রত্যেকেই নাটকের জগতের মানুষ। এমনকি দুই জামাতা লিটু আনাম এবং স্বামী সাজু খাদেমও নাট্যাঙ্গনেরই মানুষ।
ইনামুল হকের জন্ম ১৯৪৩ সালের ২৯ মে ফেনী সদরের মটবী এলাকায়। তার বাবা ওবায়দুল হক ও মা রাজিয়া খাতুন। ফেনী পাইলট হাইস্কুল থেকে এসএসসি, ঢাকার নটর ডেম কলেজ থেকে এইচএসসি এবং পরবর্তীকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ থেকে তিনি অনার্স ও এমএসসি সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে মানচেস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি লাভ করেন তিনি।
সারাবাংলা/এসবি/এএসজি