বিশ্বজুড়ে ১৮ নভেম্বর মানেই এক অদ্ভুত মিষ্টি উত্তেজনা— আজ মিকি মাউস ডে! শত বছরের পুরোনো এই চরিত্রটি শুধু একটি কার্টুন নয়; এটি আনন্দ, শৈশব, কল্পনা আর বিশ্বজনীন বিনোদনের প্রতীক। ওয়াল্ট ডিজনি নিজেই যেদিন প্রথমবারের মতো ‘স্টিমবোট উইলি’ শর্ট ফিল্মে তার কণ্ঠ দিলেন, সেদিন থেকে মিকির জন্মদিন হিসেবেও এই দিনটি পালিত হয়।
কিন্তু কী এমন জাদু আছে এই ছোট্ট ইঁদুরটির মধ্যে, যে তাকে আজও লাখো মানুষের প্রিয় বানিয়ে রেখেছে?
এক ইঁদুর, যিনি বদলে দিলেন অ্যানিমেশনের ভবিষ্যৎ
১৯২৮ সালের ১৮ নভেম্বর নিউইয়র্কের একটি ছোট থিয়েটারে মিকির প্রথম আত্মপ্রকাশ। সেসময় সাউন্ড-সহ অ্যানিমেশন ছিল একেবারেই নতুন ধারণা, আর ঠিক সেইখানেই মিকি হয়ে ওঠে গেমচেঞ্জার। তার দুষ্টু হাসি, তীক্ষ্ণ চাহনি, আর সহজ-সরল আচরণ মুহূর্তেই দর্শকদের মন জয় করে নেয়।
শুধু একটি চরিত্র নয়—মিকি হয়ে ওঠে আমেরিকান সংস্কৃতির প্রতীক, পরে পুরো বিশ্বের।
কেন এত জনপ্রিয়?
মিকির সবচেয়ে বড় শক্তি তার সরলতা। সে নায়ক, কিন্তু সে পরিপূর্ণ নয়। ভুল করে, ভয় পায়, আবার হাসে—ঠিক আমাদের মতোই। হয়তো সেই কারণেই মিকি পরিণত হয়েছে এমন এক চরিত্রে, যার সঙ্গে শিশু তো বটেই, বড়রাও নিজেরা নিজেদের খুঁজে পান।
আরো মজার ব্যাপার হলো—মিকির জনপ্রিয়তা শুধু স্ক্রিনেই সীমাবদ্ধ নয়। খেলনা, পোশাক, স্কুলব্যাগ, থিম পার্ক—সবখানেই সে তার দাপট দেখিয়েছে।
দিবসটি কীভাবে পালিত হয়?
মিকি মাউস ডে পৃথিবীর বহু জায়গায় রীতিমতো উৎসবের আমেজে পালিত হয়।
ডিজনি পার্কগুলোতে থাকে কস্টিউম প্যারেড, বিশেষ শো, আর স্মারক খাবার।
অ্যানিমেশন শিক্ষার্থীরা আয়োজন করেন মিকি-থিমড কর্মশালা।
অনলাইনে ভক্তরা তাদের মিকি সংগ্রহ, আঁকা আর প্রিয় স্মৃতিগুলো শেয়ার করেন।
অনেক পরিবার এই দিনটিকে ধরে বিশেষ মুভি নাইট করে— ‘Fantasia’, ‘The Brave Little Tailor’ কিংবা পুরোনো কোনো শর্ট ফিল্ম।
বছরের পর বছর ধরে এই দিনটি এমন এক নস্টালজিক উপলক্ষ হয়ে উঠেছে, যা প্রজন্মকে প্রজন্মকে যুক্ত করে।
মিকি: যে বন্ধু কখনো বুড়ো হয় না
বিভিন্ন সময়, প্রযুক্তি আর পৃথিবীর রাজনৈতিক মানচিত্র বদলেও মিকি মাউস একটি ব্যাপারেই একই থেকেছে— সে মানুষের মুখে হাসি ফোটায়। এই চরিত্রটি যেন আমাদের মনে করিয়ে দেয়, আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায় খুব ছোট ছোট জিনিসেও। একটি বাঁকা হাসি, একটি ব্যাকুল হাত নাড়ানো, কিংবা শিশুসুলভ দুষ্টুমি—এসবই জীবনকে একটু হালকা করে।
১৮ নভেম্বর তাই শুধু একটি কার্টুন চরিত্রের জন্মদিন নয়; এটি আমাদের শৈশব, স্মৃতি আর কল্পনার প্রতি এক স্নেহশীল সম্মান।
আজকের দিনে আপনি যদি একটু হাসতে চান, একটু নস্টালজিক হতে চান—তা হলে মিকির দিকে তাকান। সেই চিরচেনা উচ্ছ্বল কণ্ঠ যেন এখনও বলে—
‘Oh boy! Let’s celebrate!’