Saturday 06 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সেন্ট নিকোলাস ডে: উপহারের দুনিয়ায় ৬ ডিসেম্বরের মজার উৎসব

ফারহানা নীলা স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৫:২৪

রাত গভীর হলে হাওয়ায় যেন অদ্ভুত এক শোঁ-শোঁ শব্দ। জানালার পাশে রাখা ছোট্ট জুতোটার দিকে তাকালে মনে হয়— কেউ কি এটাকে নেড়ে গেল? বাচ্চারা তখন দম বন্ধ করে কান পেতে থাকে— ‘এ কি সত্যি? সত্যিই কি আজ রাতে সেন্ট নিকোলাস আসবেন?’

যেন অদৃশ্য এক পদচারণার পর জুতো ভরে যায় চকোলেট, বাদাম আর ছোট্ট উপহার দিয়ে। শৈশবের জাদুর যে অনুভূতি, তা এই দিনে ঠিকই ফিরে আসে। ৬ ডিসেম্বর তাই শুধু একটি তারিখ নয়— এ যেন রহস্য, আনন্দ আর উপহারের মিল-মিশে তৈরি এক ছোট্ট ‘পরীর দেশের’ দরজা!

কে এই সেন্ট নিকোলাস?

সেন্ট নিকোলাস ছিলেন ৪র্থ শতকের এক গ্রিক খ্রিস্টান সাধু, যিনি দরিদ্রদের বন্ধু, শিশুদের রক্ষা কর্তা এবং দানশীলতার প্রতীক। তার গল্পগুলো এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিল যে পরবর্তী সময়ে ‘সান্টা ক্লজ’-এর চরিত্রটি মূলত তার আদলে তৈরি।

বিজ্ঞাপন

কেন ৬ ডিসেম্বর?

ইউরোপসহ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী অনেক দেশে ৬ ডিসেম্বর পালন করা হয় সেন্ট নিকোলাস ডে। এই দিনেই তার মৃত্যুর বার্ষিকী ধরা হয়। তবে দিনটি শোকের নয়—বরং আনন্দ, উপহার আর উৎসবের দিন।

জুতোর ভেতর উপহার— সবচেয়ে জনপ্রিয় রীতি

এই দিনের সবচেয়ে পরিচিত রীতিগুলোর একটি হলো—
রাতে শিশুরা নিজেদের জুতো বা বুট দরজার পাশে রেখে দেয়।
সকালে দেখা যায়— সেন্ট নিকোলাস রেখে গেছেন ছোট উপহার, মিষ্টি, বাদাম বা চকোলেট!

কেউ কেউ জুতোর পাশে ঘোড়ার জন্য গাজর পর্যন্ত রেখে দেয়— উপহার পাওয়ার ‘চুক্তির’ অংশ হিসেবে।

কোথাও মোজা, কোথাও বুট!

দেশভেদে রীতির একটু ভিন্নতা আছে—
জার্মানির বাচ্চারা বুট রাখে,
নেদারল্যান্ডসে রাখে কাঠের জুতো,
বেলজিয়াম ও চেক রিপাবলিকে থাকে বড় মোজা বা ঝুড়ি,
যেখানে যেভাবেই হোক—উপহার মিলবেই!

উৎসবমুখর শোভাযাত্রা ও চরিত্র

ইউরোপের অনেক শহরে থাকে শোভাযাত্রা। সঙ্গে থাকেন সেন্ট নিকোলাস এবং তার সহকারী—কখনও ‘ক্রাম্পাস’, কখনও ‘জভার্টে পিট’। এরা কেউ উপহার দেয়, কেউ আবার শিশুদের মনে করিয়ে দেয়—ভালো শিশুরাই বেশি উপহার পায়!

সান্টা ক্লজের জন্ম— সেন্ট নিক থেকে!

আজকের লাল পোশাক পরা হাসিখুশি সান্তা ক্লজ— অনেকটাই সেন্ট নিকোলাসের ঐতিহাসিক রূপ ও কিংবদন্তির আধুনিক সংস্করণ। তাই ৬ ডিসেম্বরকে অনেকে বলেন ‘দ্য অরিজিনাল সান্তা ডে’।

কুকি, ক্যান্ডি, আনন্দ— সবই আছে

এই দিনে বাড়িতে বেক করা হয় ‘স্পেকুলাস’ নামের বিশেষ কুকি। শিশুরা গান গায়, কবিতা পড়ে এবং পরিবার মিলে আনন্দ ভাগ করে নেয়।

একটি দিন, কিন্তু স্মৃতি সারা বছরের

উৎসবটি মূলত পশ্চিমা খ্রিস্টানদের হলেও এখন বিশ্বজুড়ে পরিচিত। দরিদ্রকে সাহায্য করা, শিশুদের আনন্দ দেওয়া এবং পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে সময় কাটানো— এই তিনটি বার্তাই সেন্ট নিকোলাস ডে বিশ্বজুড়ে এত জনপ্রিয় করে তুলেছে।

বিজ্ঞাপন

আরো

ফারহানা নীলা - আরো পড়ুন
সম্পর্কিত খবর