অপাঠ্য…
৫ এপ্রিল ২০১৮ ১৫:৩৪
১.
হাতের বস্তাটা ক্রমশই ভারি হয়ে ওঠে জুলফিকারের। ডাস্টবিন থেকে তুলে আনা জজ্ঞালে ভরে ওঠে বস্তাটা। টানতে কষ্ট হয় খুব। নিজের জীবনের মতোই। এলোমেলো পা ফেলে এগোয় সে। শরীর কোথাও যেন ছটফটে অনুভূতি হয়। জলে ওঠে দাউদাউ আগুন। ১৩ বছরের এই ক্লিষ্ট কচি শরীরখানাই এখন নেশার আস্তানা। ফুটপাতে ঘুম, জীবনের অনিশ্চয়তা, শেকড়হীন সঙ্গীদের সাথে সিগারেট ধরেছিল সে খুব অল্পতেই। কখন যে অগোচরে সেই নিকোটিন থেকে ধীরে ধীরে নানাবিধ মাদক সম্মোহিত করে ফেলে জীর্ণ শরীরখানা, টেরই পায়নি! এখন তার রাত কাটেনা, দিন কাটেনা। ঘোরের ভেতর পাড়ি দেয় মৃয়মান সময়। দিনমান খেটে যা রোজগার হয় তাতে তিনবেলা খাবার না জুটলেও নেশার কাছে ছুটে যায় অবলীলায়।
২.
জ্বর শরীরে আজ কোন কাজই করতে পারেনি জুলফিকার। শরীরের ছটফটানি আর অস্থিরতা বেড়ে চলে ক্রমেই। নড়তেও পারেনা যেন। পাগল হয়ে ওঠে শরীরের শিরা-উপশিরা। উন্মাতাল যেন রক্ত! ঠিক সেই সময়ে লঞ্চের দোতলায় বসা লোকটি ৫ টাকার নোটটি বাড়িয়ে ধরে তার দিকে। জুলফিকারের সারা শরীর কেঁপে ওঠে। আর চোখে? অদ্ভূত এক দৃষ্টি। শূন্য। গহীন। অথবা অপাঠ্য।
সাদাত হোসাইন : লেখক ও নির্মাতা
সারাবাংলা/ এসবি