হোম কোয়ারেন্টাইনে ওজন কমাতে আতঙ্ক নয়, চাই পরিকল্পনা
১৫ এপ্রিল ২০২০ ১৬:০৫
করোনা সংক্রমণ রোধে সাধারণ ছুটি এই সময়ে বাসায় থাকার ফলে ওজন বেড়ে যাচ্ছে অনেকের। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণের কথা ভাবতে হচ্ছে তাদের। ওজন কমানোর জন্য ঘরোয়া ব্যায়ামের পাশাপাশি একটি পরিকল্পিত খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। ওজন কমানোর আগে একটা ব্যাপার জেনে রাখা ভালো, ডায়েট বা খাদ্যাভ্যাস হলো ধারাবাহিক একটি প্রক্রিয়া। অর্থাৎ প্রতিদিন একই ‘নিয়ম’ অনুসরণ করতে হবে।
অনেকে মনে করেন, ডায়েট মানে অল্প খাওয়া কিংবা দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকা। এটি আসলে খাদ্যাভ্যাস। হুট করে নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যস অনুসরণ শুরু করলে সাময়িকভাবে ওজন কমলেও নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই নিয়মতান্ত্রিকভাবে খাদ্যাভ্যাস মেনে চলতে হবে।
অনেকেই জানেন না ওজন কমানোর খাদ্যাভ্যাস কীভাবে শুরু করা উচিত। ভুল অভ্যাস মেনে চললে তা ওজন তো কমবেই না, উল্টো বেড়ে যেতে পারে বা শারীরিক ক্ষতি হতে পারে। মনে রাখবেন, ওজন কমানোর খাদ্যাভ্যাস একটি দীর্ঘমেয়াদি ব্যাপার। তাই চলুন জেনে নেই ওজন কমানোর খাদ্যাভ্যাস শুরু করার প্রক্রিয়া-
পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে
একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক অন্তত দুই লিটার বা আট গ্লাস পানি পান করা দরকার। এতে শরীরের আর্দ্রতা বজায় থাকবে এবং শরীরের ক্ষতিকর উপাদান বা টক্সিন দূর হবে।
প্রতিবেলা খাওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট আগে পানি খেতে হবে। গবেষণায় দেখা গেছে, খাওয়ার আগে পানি খেলে ওজন কমার ক্ষেত্রে অনেক উপকার হয়।
ভিটামিন ডি অত্যন্ত কার্যকর
সূর্যের আলোতে ভিটামিন ডি থাকে, যা ওজন কমাতে ভূমিকা রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সকালবেলা অন্তত ১০ থেকে ১৫ মিনিট রোদে বসে থাকেন, তাদের ওজন ধীরে ধীরে কমে যায়। বাসায় রোদ না পেলে খুব সকালে ছাদে কিছুক্ষণ হেঁটে আসতে পারেন।
ভিটামিন ডি এর ঘাটতি থাকলে ওজন বেড়ে যায়। যারা রোদে থাকতে পারেন না, তাদের ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট খাওয়া যেতে পারে, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে।
খাবারে ভিন্নতা থাকা উচিত
ওজন বেড়ে গেলে খাওয়া কমিয়ে দেন অনেকেই। এতে ফলাফল দাঁড়ায় উল্টো। কারণ, এভাবে খেয়ে তৃপ্তি তো হয়ই না, বরং ঘন ঘন খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। আবার অল্প খেলে শরীরে পুষ্টির চাহিদাও মেটে না। ফলে মস্তিষ্ক বার বার খাওয়ার প্রতি ঝোঁক তৈরি করে। এতে ওজন বেড়ে যায়।
খাবারের তালিকায় সালাদ, শাক-সবজি রাখতে হবে। হোম কোয়ারেনটাইনে খাবারের স্বল্পতা থাকায় খাদ্য তালিকায় কাঁচা ছোলা এবং ডাল যোগ করতে পারেন। তবে পরিমাণে খুব বেশি না। খাবারের প্লেটও আকারে ছোট হবে। ছোট প্লেটে অল্প খাবার নিলে বেশি দেখায়। এতে আমাদের মস্তিষ্কে অল্প খাবারেও মন ভরে যাওয়ার বার্তা পৌঁছে। এক্ষেত্রে উদাহরণ হতে পারে তুরস্ক। তুরস্কের বাসিন্দারা ছোট প্লেটে কয়েকরকম খাবার সাজিয়ে নেন।
চায়ে নয় দুধ আর চিনি
চায়ে থাকে নানা ধরনের উপকারি উপাদান যা ফ্যাট দূর করতে সাহায্য করে। গরুর দুধে থাকা প্রোটিন এই ফ্যাট দূর করা উপাদানগুলো নষ্ট করে ফেলে। তাই দুধ চা না খাওয়াই ভালো। রাতে ফ্যাট ছাড়া এক গ্লাস দুধ খেতে পারেন। এতে শরীরে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ হবে এবং ঘুমও ভালো হবে। সেই সঙ্গে প্রতিবার চায়ের সঙ্গে এক চামচ করে চিনি খেলেও তা পরিমাণে অনেক দাঁড়ায়। তাই চা বা কফির সঙ্গে চিনি বাদ দিতে হবে।
চামচ ব্যবহার করা ভালো
পেট ভরে গেলে আমাদের মস্তিষ্ক সঙ্গে সঙ্গে জানান দেয় না। অন্তত ২০ মিনিট পর এই বার্তা মস্তিষ্কে যায়। তাই ধীরে ধীরে খেতে হবে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো উপায় হলো চামচ দিয়ে খাওয়া। চামচ দিয়ে খেলে এমনিতেই একটু বেশি সময় লেগে যায়। বেশি সময় ধরে খেলে তুলনামূলক কম খায় মানুষ।
ব্যায়াম করুন
শুধু খাবার নিয়ন্ত্রণ করলেই ওজন কমানো সম্ভব না, ব্যায়াম করতে হবে নিয়মিত। ওজন কমাতে ব্যায়ামের কোন বিকল্প নেই। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা উচিত। ঘরে যোগব্যায়াম করা যায়। দিনের যেকোন সময় ব্যায়াম করতে পারেন। তবে প্রতিদিন একইসময় ব্যায়াম করতে হবে। একেকদিন একেকসময় ব্যায়াম করা উচিত না।
ঘরে পরিচ্ছন্নতার কাজগুলো প্রতিদিনই কিছু না কিছু করে ফেলুন। শারীরিক পরিশ্রম করলে ওজন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ঘরের কাজ করলে মনও ভালো থাকে।
সূত্র: ইন্টারনেট
করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ ডায়েট টিপস ডায়েট পরিকল্পনা ডায়েট শুরুর টিপস হোম কোয়ারেন্টাইন