করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়ার প্রস্তুতি
২৮ মে ২০২০ ২১:১৫
দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে কোভিড-১৯ রোগীর চিকিৎসা হচ্ছে তাই এসব জায়গায় বেড়েছে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি। এদিকে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ, ক্যানসার, গ্যাস্ট্রিক ও আলসারসহ নানা ধরণের সংক্রামক ব্যধির জন্য অনেককেই নিয়মিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বা চিকিৎসকের কাছে যেতে হয়। এসব দাঁতের ও চোখের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। যদিও বিভিন্ন হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও চিকিৎসক ব্যক্তিগতভাবে টেলিমেডিসিন সেবা চালু করেছে কিন্তু জরুরি অবস্থায় ও পরীক্ষা নীরিক্ষার জন্য আমাদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে হচ্ছে বা হতে পারে। সেক্ষেত্রে সবার আগে চিন্তা আসে এসব জায়গায় গেলে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা নাই তো? সম্ভাবনা যেহেতু আছে তাই প্রয়োজন কিছু পূর্ব সতর্কতা অবলম্বন।
আসুন দেখে নেই হাসপাতালে যাওয়ার আগে কিধরণের প্রস্তুতি নিতে হবে-
- গর্ভবতী নারী, শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে হাসপাতালে যাওয়া না গেলেও বাড়ি বসেই টেলিমেডিসিন সেবা নিতে চেষ্টা করুন। যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ হলে সবধরণের সতর্কতা অবলম্বন করুন।
- সবার আগে খোঁজ নিন কোন কোন হাসপাতালে করোনা রোগীর স্যাম্পল সংগ্রহ ও চিকিৎসা করা হচ্ছে। সম্ভব হলে সেগুলো এড়িয়ে চলুন।
- সরাসরি হাসপাতালে যাওয়ার আগে টেলিফোনে বা অনলাইনে যোগাযোগ করে এপয়েন্টমেন্ট নিন।
- সামাজিক দূরত্বের নিয়ম ও হাচি-কাশি শিষ্টাচার সম্পর্কে ভালোভাবে জানুন ও মেনে চলা অভ্যাস করুন। শুধুমাত্র হাসপাতাল নয়, যেকোন জায়গায় যাওয়ার জন্যই এটা প্রয়োজনীয়।
- মনে রাখবেন হাসাতালে শুধু কোভিড-১৯ নয়, যেকোন জীবাণু দ্বারাই আক্রান্ত হতে পারেন। তাই সেখানে কোনকিছু স্পর্শ করা থেকে যথাসম্ভব বিরত থাকুন। সঙ্গে স্যানিটাইজার রাখুন ও কিছু বা কোথাও হাত লাগলে হাত জীবাণুমুক্ত করুন। সম্ভব হলে বিশ সেকেন্ড ধরে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন।
- তিন স্তরবিশিষ্ট মাস্ক ব্যবহার করুন। তা না থাকলে দুটো মাস্ক একসঙ্গে পরুন।
- সর্বোপরি মনে রাখুন, কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েই গেলে নিজে নিজে চিকিৎসা না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন ও তাদের পরামর্শ মেনে চলুন।
কিছু সতর্কতা
- যেকোন রোগেই চিকিৎসা শুরু করতে দেরি করবেন না। এতে সমস্যা গুরুতর হবে।
- একসঙ্গে অনেক লোক মিলে হাসপাতালে যাবেন না।
- যাওয়ার সময় প্রয়োজনীয় সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে যাবেন। অপ্রয়োজনীয় প্রশ্ন করে চিকিৎসকের সময় নষ্ট করবেন না। মনে রাখবেন এখন জরুরি স্বাস্থ্য অবস্থা চলছে।
- যেখানে যাচ্ছেন তাদের কাছে আপনার রোগের লক্ষণ ও ভ্রমণ ইতিহাস লুকোবেন না। এতে করে তারা সতর্ক হতে পারবে।
- ঘরে ফিরে জুতা বাইরে রাখুন অথবা একটা ব্যাগে করে ঘরে ঢুকিয়ে সচরাচর যাওয়া পড়ে না এমন কোন রেখে দিন। পরনের কাপড় ধুয়ে ফেলতে হবে অন্তত আধাঘন্টা ডিটারজেন্টে ভিজিয়ে রেখে। ব্যাগ, মোবাইল, মানিব্যাগ ও কাজগপত্র যতটা সম্ভব জীবাণুমুক্ত করে নিন। মোবাইল ছাড়াই বাকি জিনিসপত্র অন্তত একদিনের জন্য বিনা স্পর্শে রেখে দিতে পারেন। মাস্ক ফেলে দিন বা পুনঃব্যবহারের জন্য জীবাণুমুক্ত করে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নিন। সবশেষে দরজার নবসহ যেসব জায়গায় হাত দিয়েছেন তা জীবাণুমুক্তকরণ দিয়ে মুছে নিন। মেঝে ও বাথরুম মুছে ফেলুন।
- সবচেয়ে জরুরি যা তা হল হাত দিয়ে নাক ও মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন।
করোনা মহামারির এই সময়ে থেমে নাই অন্যান্য রোগব্যধি সংক্রমণ। এছাড়াও আছে বিভিন্ন ক্রনিক রোগ ও ঋতুভিত্তিক রোগ। এসব নানা কারণে আমাদের হাসপাতাল বা ক্লিনিকে যাওয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে। এসব জায়গায় যাওয়ার আগে তাই মেনে যথোপযুক্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।