একুশের দিনে ভিড়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বইও এলো সর্বোচ্চ
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২২:৩৯
যেমনটা ভাবা হয়েছিল, ঠিক তেমনই। অমর একুশে গ্রন্থমেলার দীর্ঘতম দিনে মেলা প্রাঙ্গণ ছিল পাঠক ভিড়ে পরিপূর্ণ। প্রবেশ পথগুলোর দীর্ঘ লাইন যেন ফুরাচ্ছিল না। তবে তুলনামূলকভাবে সকালটা ছিল স্বস্তির। সকাল আটটায় স্বরচিত কবিতাপাঠে সরব হয়েছিল মেলা প্রাঙ্গণ। শহিদ বেদীতে ফুল দিয়ে দোয়েল চত্বর কিংবা টিএসসি পেরিয়ে মেলায় প্রবেশ করেছিল বাবা-মার হাত ধরে ছোট্ট শিশুরা। আজও যে ছিল শিশুপ্রহর। হালুম, ইকড়ির সঙ্গে বইয়ের ভালোবাসায় মুখর হয়েছে শিশুরা। একুশের আবেগমাখা দিনে পোশাক ছিল সাদা-কালো। কেউ বা শরীরে এঁকে নিয়েছেন শহিদ মিনারের প্রতিকৃতি।
দুপুর গড়িয়ে বিকেল-ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ভিড়। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মেলা প্রাঙ্গণে উড়তে থাকে ধুলো। প্যাভিলিয়নগুলো উপচে পরে পাঠক ভিড়ে। পিছিয়ে ছিল না কিছুটা কম পরিচিত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো।
এমন ভিড়ে বিক্রি কেমন হয়েছে? উৎস প্রকাশনীর সত্ত্বাধিকারী মোস্তফা সেলিম বলছিলেন, ‘এই দর্শক পাঠকের সবাই যদি একটি করে বইও কিনত, তাহলে মেলায় কোনো প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের স্টলে বই থাকতো না।’
তবে কমও হয়নি বিক্রি। পাঞ্জেরি পাবলিকেশন্সের বিক্রয় কর্মীরা ফুরসত পাচ্ছিল না পাঠক সামলাতে গিয়ে। এদিনও তাদের প্রকাশিত কমিকস বই আগ্রহ ভরে কিনেছে শিশু থেকে তরুণরা। তাম্রলিপিতে বিক্রিতে এগিয়ে জাফর ইকবালের বিজ্ঞান কল্পকাহিনী। তবে মোটিভেশনাল বইয়েরও ভালো কাটতি ছিল। ভিড় ছিল প্রথমা, ঐতিহ্য, অন্যপ্রকাশ, অনন্যা, ইউপিএলে।
একুশের দিনে এলো এবারের মেলার সর্বোচ্চ বই। যার সংখ্যা ৫০৮টি। আর মেলার ২০ দিনে প্রকাশিত হলো ৩ হাজার ৩৮৯ টি নতুন বই। এর মধ্যে এম আবদুল আলীমের ‘ভাষা আন্দোলন কোষ’, তুহিন ইমরুলের ‘সাহিত্য ও চলচ্চিত্রের ভাষা’, লুৎফর রহমান রিটনের ‘বিড়ালের গল্প’, অংকিতা সাহার ‘সত্যজিৎ চলচ্চিত্রে রবীন্দ্র সাহিত্য’ উল্লেখযোগ্য।
মূল মঞ্চে ছিলো ‘অমর একুশে বক্তৃতা’। বক্তা ছিলেন নজরুল ইসলাম। স্বাগত ভাষণ দেন বাংলা একাডেমি মহাপরিচালক হাবিবুল্লাহ সিরাজী। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। সন্ধ্যায় ছিল কবি কন্ঠে কবিতাপাঠ, আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।