Saturday 08 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নিচ্ছে সাতক্ষীরার ২ শিশু

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৮ নভেম্বর ২০২৫ ১৩:০১ | আপডেট: ৮ নভেম্বর ২০২৫ ১৪:২৯

নওশীন ইসলাম ও নুর আহমেদ জিদান।

সাতক্ষীরা: আগামী ১০ থেকে ২১ নভেম্বর ব্রাজিলের বেলেমে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কনফারেন্স অব দ্য পার্টিজ (কপ-৩০)। সারা বিশ্বের প্রায় ১৫০ দেশের প্রতিনিধি বৈশ্বিক জলবায়ু সংকট মোকাবিলার সমাধান খুঁজতে অংশ নেবেন এই সম্মেলনে।

এবারের সম্মেলনে বাংলাদেশ থেকে শিশু প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে সাতক্ষীরার দুই কিশোর–কিশোরী নওশীন ইসলাম ও নুর আহমেদ জিদান। তারা বিশ্বের সামনে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসরত শিশুদের জীবনের বাস্তবতা তুলে ধরবেন।

আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর গ্রামের শিক্ষক দম্পতি মো. শহীদুল ইসলাম ও জেসমিনের মেয়ে নওশীন ইসলাম প্রতাপনগর ইউনাইটেড একাডেমির অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তিনি আশাশুনি উপজেলা শিশু ফোরামের সভাপতি এবং দীর্ঘদিন ধরে শিশু সুরক্ষা, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে কাজ করছেন।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে, শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের যতীন্দ্রনগর গ্রামের বাসিন্দা নুর আহমেদ জিদান সুন্দরবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ও কেন্দ্রীয় উপকূলীয় শিশু ফোরামের সভাপতি।

এই দুই শিশু প্রতিনিধি জাগ্রত যুব সংঘ (JJS), Children Forum on Climate Change and DRR ও KNH-BMZ-এর সহযোগিতায় কপ-৩০ সম্মেলনে যোগ দিচ্ছে। তারা ১৪ নভেম্বর “Children in Crisis” শীর্ষক আলোচনায় Youth Pavilion Panel Discussion-এ অংশ নেবে।

নওশীন ইসলাম বলেন, ‘উপকূলের শিশুদের দুঃখ–দুর্দশা বিশ্ব নেতাদের সামনে তুলে ধরবো। ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের শিক্ষা, পুষ্টি, স্বাস্থ্য ও মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে উন্নত দেশগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পৃথিবীর আগামী প্রজন্ম। আমাদের জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী রেখে যাওয়া আজকের নেতাদের দায়িত্ব। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আমরা শিশুরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি— পড়াশোনা বন্ধ হচ্ছে, খাদ্য সংকট দেখা দিচ্ছে, শিশুশ্রম ও বাল্যবিয়ে বাড়ছে।’

নুর আহমেদ জিদান জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চল এখন বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। এটা এখন বাঁচা–মরার লড়াই। বিশ্ব নেতাদের সামনে আমাদের বাস্তব পরিস্থিতি তুলে ধরবো। আমাদের দাবি—উন্নত দেশগুলো যেন তাদের অতীতের ভুলের মাশুল আমাদের ওপর চাপিয়ে না দেয়; বরং ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের ক্ষতিপূরণ দেয়।

নওশীনের বাবা শিক্ষক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ব মঞ্চে আমার মেয়ে বাংলাদেশের কথা বলবে, সাতক্ষীরা উপকূলের শিশুদের বাস্তবতা তুলে ধরবে—একজন পিতা হিসেবে এটা গর্বের মুহূর্ত। তার জন্য দোয়া চাই।’

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই দুই কিশোর–কিশোরীর অংশগ্রহণ বাংলাদেশের উপকূলীয় শিশুদের কণ্ঠকে আন্তর্জাতিক পরিসরে পৌঁছে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

প্রসঙ্গত, তারা ১১ নভেম্বর বাংলাদেশ থেকে রওনা দিয়ে ১২–১৬ নভেম্বর পর্যন্ত কপ-৩০ সম্মেলনে অংশ নেবেন এবং ১৭ নভেম্বর দেশে ফিরবেন।