Saturday 06 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বেরোবি ছাত্রসংসদ নির্বাচন
ডোপ টেস্ট বাতিল চেয়ে প্রার্থীদের আবেদন, শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৪:৫২

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর। ছবি কোলাজ: সারাবাংলা

রংপুর: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ছাত্রসংসদ নির্বাচনে ডোপ টেস্ট ও হল ক্লিয়ারেন্স শর্ত বাতিলের দাবি জানিয়ে ২২ জন সম্ভাব্য প্রার্থীর আবেদনকে ঘিরে ক্যাম্পাসজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন তুলেছেন—যেখানে নীতিমালায় ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক, সেখানে প্রার্থীরা হঠাৎ কেন এটি বাতিল চান? কেউ কেউ সন্দেহ প্রকাশ করছেন, কোনো কোনো প্রার্থী কি মাদক সেবনের সঙ্গে জড়িত?

বুধবার (৩ ডিসেম্বর) আবেদন জমা দেওয়া হলেও শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

আবেদনে বলা হয়— ‘স্বল্প সময়ে ডোপ টেস্ট ও হল ক্লিয়ারেন্সের টাকা জোগাড় করা কঠিন। তাই এসব শর্ত বাতিল করা হোক।’

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, নির্বাচনি নীতিমালা অনুযায়ী প্রার্থীদের মাদকমুক্ততা নিশ্চিত করতে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক।

আবেদনে স্বাক্ষরকারী তালিকায় থাকা কয়েকজন—রাহাত হোসেন, শামসুর রহমান সুমন, আরমান হোসেন ও রহমত আলী—যোগাযোগ করলে দাবি করেন, তারা কোনো আবেদনেই সই করেননি।

আবেদন তালিকায় থাকা অন্যরা হলেন: নয়ন মিয়া, মাইদুল ইসলাম, মেহেমুদ, সোহাগ, রতন মিয়া, ইল্লাল, সোলাইমান, মেহেদী, বায়জিদ শিকদার, ইমরান খান, মুয়াজ, বায়জিদ রশিদ, শিবলী সাদিক, রবিউল ইসলাম নেজাজ, মুশফিকুর, বায়জিদ বোস্তামী ও রাব্বি হাসান।

মুয়াজ বলেন, ‘কম সময়ের মধ্যে টেস্টের টাকা জোগাড় করা কষ্টকর।’

তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা যুক্তি দিচ্ছেন— টেস্টের বিষয়টি তো আগেই নীতিমালায় স্পষ্ট ছিল, এখন কেন আপত্তি? তারা মনে করছেন, নির্বাচনকে স্বচ্ছ ও মাদকমুক্ত রাখার জায়গায় ডোপ টেস্ট বাতিলের আবেদন প্রশ্নবিদ্ধ।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ইমন আকন্দ বলেন, ‘ডোপ টেস্ট বাদ দিলে তো সন্দেহ হবেই—প্রার্থীরা কেউ মাদকাসক্ত কিনা। এটা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণার শামিল।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. মো. শাহজামানের ফোন বন্ধ থাকায় মন্তব্য জানা যায়নি। তবে সহকারী কমিশনার আমির শরিফ বলেছেন, ‘আবেদন পেয়েছি। যেকোনো আপিল বিবেচনা করা হবে, তবে নীতিমালা লঙ্ঘন করে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না।’

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, ডোপ টেস্ট বাদ দিলে নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

এদিকে ভোটার তালিকা নিয়েও শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ রয়েছে—দ্বৈত নাম, অছাত্রের অন্তর্ভুক্তি ও ভুল তথ্যের অভিযোগ উঠেছে। সংশোধিত তালিকা প্রকাশের পরও সেই সন্দেহ দূর হয়নি। এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘এভাবে ভুল তালিকা দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’

উপাচার্য ড. মো. শওকাত আলীর মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন স্থগিত হওয়ার পর ডোপ টেস্ট বাতিলের আবেদন পরিস্থিতিকে আরও অনিশ্চিত করে তুলেছে। শিক্ষার্থীদের বড় অংশ আশঙ্কা করছেন, এটি নির্বাচন বানচালের সুপরিকল্পিত চেষ্টা হতে পারে।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর