ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহ হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের চত্বরে এই কর্মসূচি পালিত হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পর্যায়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন জিয়া পরিষদের কেন্দ্রীয় মহাসচিব অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন, ইউট্যাব ইবি শাখার সভাপতি অধ্যাপক ড. তোজাম্মেল হোসেন, সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এ কে এম মতিনুর রহমান, জিয়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম এবং জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন গ্রীণ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, শাখা ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন ও জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়ার নেতৃবৃন্দসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘প্রশাসন এখনও সাজিদের খুনিদেরকে আইনের আওতায় আনতে পারেনি। আর কতদিন তদন্ত চলবে? কতদিন আমাদের এভাবে আশ্বাস দেওয়া হবে? আমরা আর কোনো আশ্বাসে থাকতে চাই না। এই মাসের ১৭ তারিখ সাজিদের হত্যার পাঁচ মাস পূর্ণ হবে। প্রশাসন যদি খুনিদের গ্রেফতার না করে, আমরা ভিসির কার্যালয় ঘেরাও করব। ১৭ তারিখই শেষ দিন।’
অধ্যাপক ড. তোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘গত বছরের আগস্টে আমরা যে ফ্যাসিস্টকে বিতাড়িত করেছি, সেই ফ্যাসিস্ট আমলেও দিনে-দুপুরে ক্যাম্পাসের ভিতরে এ ধরণের খুন হতে পারে নি। আমরা সোচ্চার ছিলাম। এর আগে দুটি গুম হয়েছিল—অলিউল্লাহ ও মোকাদ্দাসের। তাদের জন্য আমরা দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে সাজিদের হত্যার ঘটনা হতো, আমরা অবশ্যই এর বিচার আদায় করতাম। অনতিবিলম্বে সাজিদের হত্যাকারীর বিচার হোক এবং যারা এর সাথে জড়িত, তাদের গ্রেফতার করা হোক।’
অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন বলেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দ্রুত সময়ের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিয়েছি। কিন্তু প্রায় পাঁচ মাস পার হলেও খুনিদের গ্রেফতারে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। এটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিশ্বাসের সংকট তৈরি করেছে। সাজিদের হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত ইবির পবিত্র মাটি কলঙ্কমুক্ত হবে না। এত দীর্ঘ সময় লাগার পেছনে কারও ব্যক্তিগত স্বার্থ বা নেপথ্যের প্রভাব থাকতে পারে।’
উল্লেখ্য, গত ১৭ জুলাই বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হল পুকুর থেকে আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ বর্ষের শিক্ষার্থী সাজিদের লাশ উদ্ধার করা হয়। ভিসেরা রিপোর্ট অনুযায়ী, সাজিদকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছিল।